নতুন ভাইরাস আসছেই, আমরা প্রস্তুত তো?

বাংলাদেশকে ধরে নিতে হবে, করোনাভাইরাসের আতঙ্ক কেটে যাওয়া মানে শেষ নয়। নভেল মানে নতুন। করোনা না হোক, অন্য কোনো নভেল ভাইরাস আসবে। ফলে নতুন ভাইরাস আসবে ধরে নিয়ে সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিতে হবে বাংলাদেশকে। কিন্তু ইনফেকশাস ডিজিজ অধ্যয়ন, পাঠ্যক্রম, ডিগ্রি, গবেষণাগার, সবকিছুতেই শূন্যতা চলছে।

এ বিষয়ে কথা শুনতে মেডিসিনের প্রবীণ অধ্যাপক এম এ ফয়েজকে প্রথম আলোর দপ্তরে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলাম। তাঁর একটি সাক্ষাৎকার আমরা ছেপেছি। তাতে তিনি বলেছেন, ভাইরাস অধ্যয়ন, নির্ণয় ও চিকিৎসায় বাংলাদেশের সামর্থ্য কম। তাঁর মন্তব্যের সূত্র ধরে অনুসন্ধান চালিয়েছি। তাতে এমন অনেক তথ্য বের হয়ে এসেছে, যা বিস্মিত হওয়ার মতো। দেশে শতাধিক মেডিকেল কলেজ ও অনেকগুলো গবেষণাগার আছে, কিন্তু নির্দিষ্টভাবে ভাইরাস শাস্ত্রচর্চা অনুপস্থিত। একটিও সেন্টার অব এক্সিলেন্স (কেন্দ্রীয় পূর্ণাঙ্গ ল্যাব) নেই।

২০০৮ সালে কমলাপুরের ১৬ মাস বয়সী একটি ছেলে ক্লিনিকে ভর্তি হয়েছিল সাত দিনের জ্বর, পাঁচ দিনের কাশি, নাক দিয়ে পানি পড়া, তিন দিনের শ্বাসকষ্ট নিয়ে। ব্যাপক ল্যাব পরীক্ষায় কোনো জীবাণু সংক্রমণের আলামত পাওয়া যায়নি। এরপর তার রক্তের নমুনা আমেরিকার সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনে (সিডিসি) পাঠানো হয়। সেখানেই প্রথম ধরা পড়ে শিশুটির শরীরে মরণব্যাধি এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জার জীবাণু আছে। তার মা মুরগি জবাই করে পলিথিনে বর্জ্য রেখে শিশুটিকে কোলে তুলে নিয়েছিলেন।

ওই জীবাণু নির্ণয়ে বাংলাদেশি বিশেষজ্ঞদের হয়তো জ্ঞান ছিল, প্রযুক্তি ছিল না। তাই শিশুটির কী রোগ হয়েছিল, সেটা জানতে বাংলাদেশের প্রায় এক বছর সময় লেগেছিল। সিডিসি সারা বিশ্বের মধ্যে শীর্ষস্থানীয় ল্যাব। উন্নয়নশীল দেশগুলো থেকে নমুনার ভিড় সেখানে লেগেই থাকে। তাই বছরখানেক সময় অপেক্ষা করতে হয়েছিল।

একটি শিশু কী রোগে আক্রান্ত হয়েছে, সেটি শনাক্ত করতে এক বছর লেগে গেলে সেটি নিয়ে একটি জরুরি অবস্থা বা কোনো হুলুস্থুল পরিস্থিতি তৈরি হয় না। কিন্তু এক হাজার লোক যদি এ রকম অজানা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়, তখন এ পরিস্থিতি কীভাবে সামলানো যাবে? দেশের ও মানুষের স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বেগ থাকলে সরকার এ রকম একটি অসহায় অবস্থায় নিজেকে রাখতে পারে না। কিন্তু অনুসন্ধান করে যা পাওয়া গেল, তা খুবই হতাশাজনক। এ সম্ভাব্য বিপদ মোকাবিলায় কিছুই করা হয়নি, বিষয়টি তা নয়। আবার দরকারি প্রায় সবকিছুই করা হয়েছে, সেটিও সত্য নয়।

এবারও বাংলাদেশ ধরনা দিয়েছে ওই সিডিসির কাছেই। জীবাণুর ডায়াগনসিস বা জীবাণু শনাক্তের জন্য তার পুরো জেনেটিক কাঠামো জানতে হয়। এ প্রক্রিয়ার নাম জেনোম সিকোয়েন্সিং। এটা ব্যয়বহুল ও উচ্চ মানের বিশেষজ্ঞনির্ভর প্রযুক্তি। কিন্তু এরপরও এটা করতে পারার সম্পূর্ণ সামর্থ্য অর্জন করা বাংলাদেশের জন্য জরুরি।

চীন করোনার জিন দ্রুত বের করে বিশ্বকে তাক লাগিয়েছে। এখন তাই আটলান্টার সিডিসি ‘রি–এজেন্ট’ দিতে পারবে। এই রি–এজেন্ট পেলে বাংলাদেশ আক্রান্ত রোগীকে পরীক্ষা করে ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই বলতে পারবে, কাউকে করোনায় ধরেছে কি ধরেনি।

সম্প্রতি মহাখালীতে রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) প্রস্তাবিত ১০ তলা সরেজমিনে দেখলাম। সেখানকার নতুন ভবনের পাঁচতলা থেকে নয়তলা পর্যন্ত অত্যাধুনিক ল্যাব বসানো হচ্ছে। আমেরিকান সোসাইটি অব মাইক্রোবায়োলজি এতে সহায়তা দিচ্ছে। ওই সংস্থার প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা এ এস এম আলমগীর ২০০০ সালে ভাইরোলজিতে পিএইচডি করেছেন জাপানে। উদ্যমী ও সৃজনশীল মানুষ। যুগে যুগে ইনফ্লুয়েঞ্জা মহামারি (২০১০) নামে একটি বই লিখেছেন। তিনি তাঁর দপ্তরে বলেন, ‘আমরা এর আগে জিকা, ইনফ্লুয়েঞ্জার ভাইরাস সিকোয়েন্সিং করেছি। তবে ডব্লিউএইচওর সহায়তায় ডেঙ্গু এখনো প্রক্রিয়াধীন। আর করোনার বিষয়ে সিডিসি আটলান্টা ও ডব্লিউএইচও সার্বক্ষণিক কারিগরি সহায়তা দিচ্ছে। করোনার বিষয়ে রিয়েল টাইম পিসিআরের (পলিমারেজ চেঞ্জ রি–অ্যাকশন) প্রাইমার এবং প্রোবস আমাদের দিতে যুক্তরাষ্ট্রের এফডিএ অনুমোদন দিয়েছে। শিগগিরই এটি পাব। তখন আমরা নমুনা সংগ্রহের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রিপোর্ট দিতে সক্ষম হব।’

আলমগীরের কথায়, বাংলাদেশের যদি একটি বৃহৎ উপযুক্ত প্রতিষ্ঠান থাকত, যারা নিজেরাই প্রাইমার ও প্রোবস দেশে সিনথেসিস করতে পারবে। তাহলে আর পরমুখাপেক্ষী থাকতে হতো না। যেহেতু সার্স, মার্স, ইবোলা, চিকুনগুনিয়া, ডেঙ্গুর মতো নতুন নতুন উপদ্রব আঘাত হানছেই। তাই সর্বোচ্চ প্রতিরোধ গড়ে তোলাই সময়ের দাবি।

চীনের মতো বাংলাদেশও বিশ্বের অন্যতম ঘনবসতিপূর্ণ দেশ। তাই এতটা পরনির্ভরশীলতা মোটেই নিরাপদ নয়। এটা ঘোচাতে হবে। ট্রপিক্যাল মেডিসিনের মধ্যে ভাইরাস শাস্ত্র কিছুটা পড়ে, সবটা নয়। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে শেরেবাংলা নগরে ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল মেডিসিন প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা ছিল। অধিগ্রহণ করা জমি পরে গণভবনে মিশেছে। আরেকটি তথ্য হলো, সাবেক ইনফেকশাস ডিজিজ ইনস্টিটিউট বিলুপ্ত হয়েছিল এই আশায় যে পিজিতে চালু হবে। সেটি আর হয়নি। এরপর চার দশক লেগেছে ইনফেকশাস ডিজিজ শব্দটি ব্যবহার করে ফৌজদারহাটে একটি সংস্থার ফিতা কাটতে। এম এ ফয়েজ যখন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডিজি ছিলেন, তখন তাঁর ব্যক্তিগত আগ্রহে এটি করা হয়েছিল। সরকারের স্বাস্থ্যনীতির অগ্রাধিকার প্রকল্প ছিল না। তার প্রমাণ মেলে ২০১৩ সালে ১০ তলাবিশিষ্ট ১২০ শয্যার বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেজ (বিআইটিআইডি) মাত্র ৩ তলা করার পর এর কাজ চিরতরে বন্ধ হওয়ার মধ্য দিয়ে। মিজেল, কালাজ্বরে আক্রান্তদের চিকিৎসা তারা দিচ্ছে, এটা কর্মীদের নিষ্ঠার ফল। এবং সত্য এটাই যে এখানকার একমাত্র গবেষণাগারটি সরকারি টাকায় নয়, গড়ে উঠেছে ফ্রান্সের অনুদানে। বছরে মাত্র ৩৫ লাখ টাকায় এটি চলে, কিন্তু জীবাণু গবেষণায় কোনো টাকা নেই। ল্যাব পরিচালনার বরাদ্দ আড়াই লাখ টাকার বেশি নয়।

১৯৬১ সালের ১৯ অক্টোবর তৎকালীন স্বাস্থ্যমন্ত্রী লে জে ডব্লিউ এ বার্কি মহাখালীতে ম্যালেরিয়া ইনস্টিটিউট উদ্বোধন করেছিলেন। সেই দোতলা ভবনটিতে একতলা বাড়িয়ে ১৯৭৬ সালে চালু করা হয়েছিল আইইডিসিআর। এখন এই সংস্থাটিই জীবাণুঘটিত রোগ নির্ণয় ও নিয়ন্ত্রণ কাজে সক্রিয়। কিন্তু এর নামে ‘ইনফেকশাস ডিজিজ’ কথাটি নেই। কিন্তু উন্নত দেশে করোনার মতো পরিস্থিতিতে গণমাধ্যমে যাঁরা কথা বলেন, তাঁরা সংক্রামক রোগ (আইডি) বিশেষজ্ঞ। আমাদের এমন একজনও বিশেষজ্ঞ নেই জেনে বেশ কৌতূহল হলো। করোনা ছড়ানোর পর ইতিমধ্যে টিভি পর্দার পরিচিত মুখ হয়ে উঠেছেন আইইডিসিআরের পরিচালক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা। তিনিও মানলেন, আমাদের কোনো আইডি নেই। তাঁর প্রতিষ্ঠানটি ১৮ কোটি টাকার বাজেটে চলে। কিন্তু অন্য সূত্রে জানলাম, জীবাণু গবেষণায় এই সংস্থায়ও নির্দিষ্ট কোনো বরাদ্দ নেই। অবশ্য তারা সিডিসি আটলান্টা, জন হপকিন্স, কেমব্রিজ, আটলান্টাভিত্তিক ইয়ানপি ও লন্ডন স্কুল অব হাইজিন অ্যান্ড ট্রপিক্যাল মেডিসিনের মতো আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছ থেকে গবেষণা সহায়তা পাচ্ছে।

দেশের শীর্ষস্থানীয় বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে গত কয়েক দিনের আলাপ–আলোচনায় তাঁরা নির্দিষ্ট করে অনতিবিলম্বে অন্তত ১ হাজার ২০০ শয্যাবিশিষ্ট একটি হাসপাতালসহ একটি কেন্দ্রীয় গবেষণাগার বা সেন্টার অব এক্সিলেন্স প্রতিষ্ঠায় এখনই পদক্ষেপ নেওয়ার জোর সুপারিশ করেছেন। লোহা গরম থাকতে আঘাত করাই ভালো। করোনার মেঘ কাটলেই তারা ভুলে যাবে।

 অধ্যাপক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা কেমব্রিজ থেকে রোগতত্ত্বে পিএইচডি করেছেন। বর্তমানে মর্যাদাসম্পন্ন ইয়ানপির নির্বাচিত ভাইস প্রেসিডেন্ট। বৃহৎ প্রতিষ্ঠান গড়তে নীতিগত সম্মতি থাকলেও তিনি এ ব্যাপারে বাস্তবসম্মত থাকাটা গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন। আমরা তাঁর সঙ্গে একমত যে ফৌজদারহাটে ১০ তলা ভবন সম্পূর্ণ করা এবং দেশের পাঁচটি মেডিকেল কলেজের সঙ্গে যুক্ত থাকা পাঁচটি সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালের সম্প্রসারণ ও আধুনিকায়নে অগ্রাধিকার দেওয়া দরকার। পাকিস্তান আমল থেকে চলে আসা এই সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালগুলো ধুঁকছে। ব্যাপক মাত্রায় কোনো ভাইরাস ছড়িয়ে পড়লে বিদ্যমান হাসপাতালগুলোতেই ওয়ার্ড খুলতে হবে। কিন্তু সেটা বেশি ঝুঁকিপূর্ণই থেকে যাবে।

মহাখালীতেই সরকারের আরেকটি সংস্থা হলো কমিউনিকেবল ডিজিজ কন্ট্রোল (সিডিসি)। এরাই বর্তমানে বিমান, স্থল ও নৌবন্দরের যাত্রী স্ক্রিনিং করছে। আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্যবিধির ন্যাশনাল ফোকাল পয়েন্ট হিসেবে করোনা আক্রান্তদের বিষয়ে ডব্লিউএইচওকে তারাই রিপোর্ট করবে। এই সিডিসির পরিচালক ডা. শাহনীলা ফেরদৌসী আমাকে বলেন, ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে বলতে পারি, এটাই হাই টাইম। অবিলম্বে ঢাকায় ৫০০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালের সঙ্গে একটি সম্পূর্ণ গবেষণাগার দরকার। যারা শুধু ভাইরাস এলে নয়, সারা বছর ধরে দিন–রাত ভাইরাস গবেষণায় ব্যস্ত থাকবে।’

শামসুজ্জামান তুষার একজন জ্যেষ্ঠ মাইক্রোবায়োলজিস্ট। বর্তমানে তিনি শেরেবাংলা নগরে সদ্য চালু হওয়া ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ল্যাবরেটরি মেডিসিন অ্যান্ড রেফারেল সেন্টারের পরিচালক। ভবিষ্যতে তারাও ভাইরাস নির্ণয়ে ভূমিকা রাখবে। কিন্তু তিনি ব্যক্তিগতভাবে শহরের বাইরে ১ হাজার ২০০ শয্যাবিশিষ্ট একটি বিশেষ গবেষণাগার প্রতিষ্ঠাতেই জোর দিলেন।

এ তো গেল ল্যাবের কথা। পড়াশোনা? এখানে দৈন্য আরও গভীরতর। সম্ভবত ঐতিহাসিকভাবে ম্যালেরিয়া, চিকেন পক্স, ডায়রিয়া, ফাইলেরিয়া গরিবের অসুখ হওয়ার কারণে এই শাস্ত্র অধ্যয়নে জোরটা সব সময় কম পড়েছে। হার্ট, ক্যানসারের মতো মেডিসিনের ১৬টি শাখার বিকাশ ঘটলেও ইনফেকশাসের কোনো জায়গা হয়নি। দেশে ইনফেকশাস ডিজিজে স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী একজন বলেই জানা যায়। আরও ছয়জন ট্রপিক্যাল মেডিসিনে (এর পাঠক্রমে সংক্রামক ব্যাধি অন্তর্ভুক্ত) এমডি (ডক্টর অব মেডিসিন) করেছেন, যার পাঁচজনই ফৌজদারহাটে কর্মরত। স্বাস্থ্য খাতের সমগ্র সাংগঠনিক কাঠামোয় সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞদের জন্য কোনো পদ সৃষ্টি করা হয়নি। ষষ্ঠজন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের ডেপুটি রেজিস্ট্রারের চাকরি করছেন।

অধ্যাপক আরিফুল বাশার হলেন সংক্রামক রোগ বিষয়ে দেশের একমাত্র এফসিপিএস। ২০০৩ সালের আগে এটা পড়ার সুযোগও ছিল না। তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, পাস করার পর তাঁর এই পরিচয়ের সুবাদে এই প্রথম তিনি সংবাদমাধ্যম থেকে ফোন পেলেন। তিনি বর্তমানে প্রেষণে থেকে ক্লিনিক্যাল কেয়ার মেডিসিনে তৃতীয় স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নিচ্ছেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যুক্ত।

ওই ছয় এমডির পরে আর কেউ এ বিষয়ে ডিগ্রি নিতে আগ্রহী হননি। দেশের একটি মেডিকেল কলেজও আবাসিক স্নাতকোত্তর কোর্স হিসেবে একে গ্রহণ করেনি। ২০১৩ সালে বিআইটিআইডি জন্মেছে বলে ওই পাঁচজনের একটা সান্ত্বনা যে তাঁরা একটি বিশেষায়িত আইডি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করছেন।

বাংলাদেশ সোসাইটি অব ইনফেকশাস ডিজিজ অ্যান্ড ট্রপিক্যাল মেডিসিন নামের একটি সংগঠন রয়েছে। এর সভাপতি ইসমাইল পাটোয়ারি বলেন, বিদ্যমান ভাইরাসের সঙ্গে নতুন উপাদান মিউটেশন বা যুক্ত হয়ে নতুন ভাইরাস জন্ম নিচ্ছে। নোবেল করোনাও মিউটেশনের ফল। আমরা তাঁর সঙ্গে একমত যে ময়মনসিংহে কালাজ্বর, উত্তরবঙ্গে ফাইলেরিয়া, নিপাহ ভাইরাসের মতো নানা জীবাণু অনেকটা স্থায়ীভাবে জনস্বাস্থ্যের প্রতি হুমকি তৈরি করছে। তাই জেনোম সিকোয়েন্সিংয়ে সামর্থ্য গড়তে হবে। অধ্যাপক রোবেদ আমিন করোনায় ইন্টেরিম গাইডলাইন প্রণেতা, তাঁরও মত তা–ই।

আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন স্থাস্থ্যবিষয়ক গবেষণা সাময়িকী দ্য ল্যানসেট–এ দেখলাম, কোনো ভাইরাস শনাক্তকরণ পাঁচ দিনের পরিবর্তে এক দিনে পারলে তা মানুষের মধ্যে ছড়ানোর ঝুঁকি ৮০ ভাগ থেকে শূন্যের কোঠায় নেমে যায়।

১৫ ফেব্রুয়ারি খবর বেরোল মাত্র ২ থেকে ৩ ঘণ্টায় করোনা শনাক্ত করছে মহাখালীতে। কারণ, সিডিসি আটলান্টা রি–এজেন্ট দিয়েছে বলে পেরেছে। এই পারাটা আমাদের পারতে হবে। আমেরিকা এটা না দিলে কি হতো?

মিজানুর রহমান খান: প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক
[email protected]