মনু নদ সেচ প্রকল্প

মনু নদ সেচ প্রকল্পের মৌলভীবাজার সদর উপজেলার বেশ কিছু এলাকায় শাখা সেচ খাল সংস্কার না করায় সেখানকার কৃষক যে ক্ষতির মুখে পড়তে যাচ্ছেন, তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।

রোববার প্রথম আলোয় প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, সেচ প্রকল্পের প্রধান খালে পর্যাপ্ত পানিপ্রবাহ থাকলেও শাখা সেচ খালের হাতিগড় এলাকায় দক্ষিণবালি থেকে হাতিগড় পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটারে পানি নেই। এই সেচ খাল তিন বছর ধরে সংস্কার হচ্ছে না। এতে সেখানে ঘাস জন্মে পানিপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এ ছাড়া কোথাও কোথাও ইঁদুরের গর্ত দিয়ে পানি বেরিয়ে যাওয়ায় পানিপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। কোথাও বাঁধ ক্ষয়ে নিচু হয়ে যাওয়ায় পানি উপচে যাচ্ছে। পানি না পাওয়ায় অনেক জমিতে এখনো ধান রোপণ করা সম্ভব হয়নি। ধানের চারা রোপণ করা হয়েছে, এমন অনেক জমির পানি শুকিয়ে গেছে। খেতের তলানিতে ফাটলের সৃষ্টি হয়েছে। কৃষক জানিয়েছেন, এসব জমিতে দ্রুত পানি সরবরাহের ব্যবস্থা করতে না পারলে রোপণ করা ধানের ফলন যেমন ভালো হবে না, তেমনি নতুন করে ধান আর রোপণ করা সম্ভব হবে না। কেননা, ধান রোপণের আর মাত্র এক সপ্তাহ বাকি আছে। এরপর রোপণ করলেও কোনো লাভ হবে না।

এভাবে পানির অভাবে ধান চাষ ব্যাহত হচ্ছে, অথচ তা সমাধানের কোনো উদ্যোগ নেই। এটা খুবই হতাশাজনক। এসব দেখার দায়িত্ব মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো)। তারা যে তাদের দায়িত্ব ঠিকভাবে পালন করছে না, তা তো স্পষ্ট।

আমাদের দেশ কৃষিনির্ভর একটি দেশ। প্রধান খাদ্যশস্য হচ্ছে ধান। সেই ধান যদি ঠিক সময়ে রোপণ না করা হয়, তা হলে তার পরিণতি কী হতে পারে, তা সহজেই অনুমেয়। ধান উৎপাদন না করতে পেরে কৃষক তো ক্ষতিগ্রস্ত হবেনই, সেই সঙ্গে দেশের খাদ্যনিরাপত্তাও হুমকির মুখে পড়বে।

মৌলভীবাজারের একজন কৃষক জানিয়েছেন, যে জমি থেকে তিনি এত দিন ২০ মণ ধান পেয়েছেন, সেখানে এখন পাবেন ১২ মণ ধান। শুধু খাল সংস্কার না করার কারণে এত বড় ক্ষতি মেনে নেওয়া যায় না। মৌলভীবাজার পাউবোর উচিত খুব দ্রুত মনু নদ সেচ প্রকল্পের শাখা সেচ খাল সংস্কারের উদ্যোগ গ্রহণ করা।