ইসলামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

দেশের স্বাস্থ্য খাতে অব্যবস্থাপনার চিত্র নতুন নয়। জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিস্থিতি সেই বিষয়টিকেই আবার তুলে ধরেছে। এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের অভাবে ছয় বছর ধরে কোনো অস্ত্রোপচার হচ্ছে না। ফলে চিকিৎসা নিতে গিয়ে ভোগান্তি পোহাচ্ছে রোগীরা। প্রয়োজনীয় চিকিৎসকই যদি না থাকে, তাহলে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থাকার অর্থ কী?

বৃহস্পতিবার প্রথম আলোয় প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও সার্জন না থাকায় ইসলামপুর উপজেলার ৫০ শয্যার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অস্ত্রোপচারকক্ষ ২০১৪ সাল থেকে তালাবদ্ধ হয়ে পড়ে আছে। এর ফলে অস্ত্রোপচারের কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন যন্ত্রপাতি নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। গোটা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কোনো শিশু বিশেষজ্ঞ নেই। শিশুদের চিকিৎসা দিচ্ছেন চিকিৎসা কর্মকর্তারা। জটিল কোনো শিশু রোগী এলে তাঁরা তাদের জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে পাঠিয়ে দিচ্ছেন। একই অবস্থা গাইনি বিভাগেও। চিকিৎসা কর্মকর্তারাই রোগী দেখছেন।

অথচ ৫০ শয্যার জনবলকাঠামো অনুযায়ী এখানে একজন আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা, মেডিসিন বিশেষজ্ঞ, সার্জারি বিশেষজ্ঞ, গাইনি বিশেষজ্ঞ, অবেদনবিদ, অর্থোপেডিক সার্জন, চক্ষু বিশেষজ্ঞ, হৃদ্‌রোগ বিশেষজ্ঞ, শিশু বিশেষজ্ঞ এবং চর্ম ও যৌনরোগ বিশেষজ্ঞ থাকার কথা। মনে প্রশ্ন জাগা স্বাভাবিক, এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স তাহলে চলছে কীভাবে?

প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার পক্ষ থেকে জেলা সিভিল সার্জনকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। কিন্তু বিশেষজ্ঞ নিয়োগের কোনো উদ্যোগ নেই। এটা খুবই হতাশাজনক। তবে শুধু ইসলামপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নয়, দেশের আরও অনেক স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও হাসপাতালে এ ধরনের পরিস্থিতি বিরাজ করছে। চিকিৎসক ও জনবলের অভাবে এসব হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হচ্ছে।

আমাদের দেশের বেশির ভাগ মানুষই দরিদ্র। তারা বিভিন্ন রোগব্যাধির চিকিৎসার জন্য সাধারণত সরকারি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও হাসপাতালের ওপরই নির্ভর করে। সেখানে যদি এ রকম নাজুক পরিস্থিতি বিরাজ করে, তাহলে তারা যাবে কোথায়?

আমরা এ ব্যাপারে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করছি। জরুরি ভিত্তিতে ইসলামপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রয়োজনীয় বিশেষজ্ঞ
চিকিৎসক নিয়োগ দিতে হবে। সেই সঙ্গে এই হাসপাতালে এসে রোগীরা যাতে ভোগান্তির শিকার না হয় এবং যথাযথ চিকিৎসা পায়, তা নিশ্চিত করতে হবে।