বিশেষ সাক্ষাৎকার: ব্যর্থতা গণরুম সংস্কৃতি বন্ধ করতে না পারা

নুরুল হক।
নুরুল হক।
>

নুরুল হক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সহসভাপতি (ভিপি)। ডাকসুর এক বছর পূর্তি হতে যাচ্ছে এ মাসেই। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতিসহ নানা বিষয়ে কথা বলেছেন প্রথম আলো-র সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন মিজানুর রহমান খান

প্রথম আলো: ২৩ মার্চে ডাকসুর মেয়াদ শেষ হচ্ছে। সাফল্য-ব্যর্থতার মূল্যায়ন কী?

নুরুল হক: ২৮ বছর পর ডাকসুর পুনর্জন্মই একটা সার্থকতা। একটা দীর্ঘ সময় ক্ষমতাসীন দলের অঙ্গসংগঠনই ক্যাম্পাস নিয়ন্ত্রণ করেছে। অন্যদের সাংগঠনিক কার্যক্রম চালানো অনেকটা অনুপস্থিত ছিল। আর গত এক বছরে বাধাবিপত্তি সত্ত্বেও কিছু ছাত্রসংগঠন ক্যাম্পাসে সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। সামাজিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠায় আমরা সাংস্কৃতিক কর্মসূচি নিতে পেরেছি। প্রশাসনের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে অনেক ক্ষেত্রে সমাধান পাওয়া গেছে। আর ব্যর্থতা হলো গেস্টরুম, গণরুম সংস্কৃতি  বন্ধ করতে না পারা। এটা একটা চরম ব্যর্থতা। তবে এখানে আমার ব্যক্তিগত দায়ের চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দায়িত্ব বেশি। পরীক্ষার আগের রাতে হলের ছাত্রদের দলীয় কর্মসূচিতে যোগ দিতে হয়, এটা রোধে প্রশাসন যথারীতি নির্বিকার।

প্রথম আলো: ডাকসুর সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেন মনে করেন, গণরুম কালচার প্রায় ৩০ ভাগ কমেছে। আবার সম্প্রতি মারধর করে তিন ছাত্রকে থানায় নেওয়া হয়েছে।

নুরুল হক: আমি এতটা তার সঙ্গে একমত হব না। ১০ থেকে ১৫ ভাগ কমতে পারে। কিন্তু ওই ছাত্রের দুজন প্রথম ও একজন হয়তো তৃতীয় বর্ষের। জামায়াত–শিবির তো নব্বই দশক থেকেই ক্যাম্পাসে নিষিদ্ধ। তাদের কোনো কার্যক্রম এখন দৃশ্যমান নেই। অথচ শুধু নির্যাতনের অজুহাত হিসেবে এই শব্দের ব্যবহার চলছে। হলগুলোতে দলীয় প্রতিপক্ষ দমন ছাড়াও নানা আঞ্চলিক গ্রুপিং আছে। তবে যারা ক্ষমতাসীন দলের সংশ্লিষ্ট, তারাই আঞ্চলিক গ্রুপ, যেমন বৃহত্তর বরিশাল, ময়মনসিংহ ও ফরিদপুরের গ্রুপ কর্তৃত্বে আছে। ওই গ্রুপিংগুলো সহিংসতা উসকে দিচ্ছে। হলে কিছু মারামারি ঘটে এই গ্রুপিং থেকে। অনেক সময় ক্ষমতাসীন দলের সভাপতির চেয়ে সহসভাপতি প্রভাবশালী হতে পারেন। কারণ, সভাপতির জোর শুধু দলীয়, আর সহসভাপতির বাড়তি শক্তি আঞ্চলিক গ্রুপিং। এর জেরে দেখা যায়, সভাপতির দখলে হয়তো ১০টা কক্ষ আর সহসভাপতির দখলে ১২টি। তিন ছাত্রকে থানায় নেওয়ার পর আমি সেখানে গিয়ে পুলিশকে বলি, ওদের কী অপরাধ? কী অভিযোগ তাঁদের বিরুদ্ধে? কেন থানায় এনেছেন? পুলিশ জবাব দিয়েছে, এই প্রশ্ন আমাদের করার আগে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে করুন। আমরা ওদের ধরতে যাইনি। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ফোন করে ডেকে তুলে দিয়েছে। আসলে এটা ভীষণ লজ্জার যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা ছাত্রলীগের এমন অন্যায়ে সহায়তা দিচ্ছেন।

প্রথম আলো: ডাকসু থেকে ছাত্রলীগের সঙ্গে মিলে বড় কী করেছেন?

নুরুল হক: মার্চে নির্বাচন হলো। এপ্রিল থেকে জুন একটা সংগত সহযোগিতার মধ্য দিয়ে ডাকসু চলেছে। অসাম্প্রদায়িক নানা সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড, খেলাধুলা, নানা প্রতিযোগিতা হয়েছে। ক্যাম্পাসে ‘জোবাইক’ চালু করেছি। এটা পাঠাও সার্ভিসের মতো। কিন্তু এটা বাইসাইকেল। ক্যাম্পাসের মধ্যেই ছাত্ররা এটা ব্যবহার করছে। ৫০০ মেয়ে বাইসাইকেল চালানোর প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। সিনেটে সমন্বিতভাবে আমরা শিক্ষক নিয়োগে অনিয়ম নিয়ে কথা বলেছি। প্রয়োজনীয় যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও শুধু রাজনৈতিক কারণে অনেককে নিয়োগ দেওয়া হয় না। এমনকি প্রথম শ্রেণি প্রপ্তরাও নিজের বা পরিবারের ভিন্নতর রাজনৈতিক বিশ্বাসের কারণে নিয়োগ পাচ্ছেন না।

প্রথম আলো: যথেষ্ট যোগ্যতা থাকতেও নিয়োগ না পাওয়াদের নির্দিষ্ট পরিসংখ্যান জানেন? ভিন্নমতের কারণে পদোন্নতি–বঞ্চনা কতজনের ক্ষেত্রে ঘটতে পারে?

নুরুল হক: আমি বিএনপির আমলটা দেখিনি। তবে আওয়ামী লীগের আমলে এখন দেখছি যে শিক্ষক নিয়োগের সময় তাদের একটা ফরম পূরণ করতে হয়।

প্রথম আলো: লিখিতভাবে করতে হয়? নিজে দেখেছেন?

নুরুল হক: একজন শিক্ষক বলেছেন। গত সাধারণ নির্বাচনের পরে ১ হাজার ১০৩ জন শিক্ষকের বিবৃতি বেরোয়। তাঁরা আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ বিজয়ে অভিনন্দন জানিয়েছেন। তখন কিছু শিক্ষক আপত্তি তুলেছিলেন। তাঁরা তাঁদের নাম দেখে অবাক হন। পরে তাঁদের বলা হয়, নিয়োগকালে শিক্ষকদের নীল দল করবেন বলে ফরম পূরণ করেছিলেন। শুধু ভিন্নমতের কারণে অধ্যাপক হতে পারছেন না, এমন আমি অন্তত তিনজনকে জানি। এমনকি শুধু কোটা আন্দোলনে ছাত্রদের সমর্থনে বিবৃতিদানের কারণেও সহযোগী অধ্যাপক হয়ে আছেন অনেকে। সব মিলিয়ে অন্তত ৩০ জন শিক্ষক রাজনৈতিক বিশ্বাসের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত বলে মনে হয়। কিছু কিছু শিক্ষক অবশ্য আছেন, নীতিগত কারণে তাঁরা এ নিয়ে নির্বিকার। তঁারা তদবির করতে চান না। তবে এসবের নেতিবাচক প্রভাব শিক্ষার ওপর অবশ্যই পড়ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণার মান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এখান থেকে যাঁরা বের হন, তাঁরাই নানাভাবে জাতিকে সেবা দেন। সুতরাং এখানে যদি পড়াশোনার মান এবং সবকিছুই যদি উন্নত থাকে, তাহলে তার ভালো প্রভাব জাতিগঠনে পড়বে। অবশ্য উল্লিখিত চিত্র ছাড়াও শিক্ষা উপকরণ খাতে তহবিলস্বল্পতাও বিরাট বাধা।

প্রথম আলো: বাজেট বাড়ানোর কথা বলেছেন?

নুরুল হক: সিনেট সভায় আমরা এটা ঐক্যবদ্ধভাবে বলেছি। নেপালের ত্রিভুবন বিশ্ববিদ্যালয়ের বাজেট যেখানে প্রায় ২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। সেখানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাজেট মাত্র সাড়ে ৮০০ কোটি টাকা। এটা দুঃখজনক। আমরা সমন্বিতভাবে এই বাজেট বাড়াতে বলেছি। গবেষণায় ওই টাকার মাত্র ৪ থেকে ৫ ভাগ ব্যয় হয়। আমরা তাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা বাজেটে ১০০ কোটি টাকার বিশেষ বরাদ্দ দাবি করেছি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের একটি উল্লেখযোগ্য অংশই মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত পরিবার থেকে আসা। সেখানে হলগুলোতে যে খাদ্যের মান, সে বিষয়ে উদ্বেগ রয়েছে। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তাঁরা কম পুষ্টির খাবার পাচ্ছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের যদি এই পরিবেশে বেড়ে উঠতে হয়, তাহলে তাঁরা কর্মজীবনে গিয়ে জাতির জন্য আরও উন্নত পরিবেশ কীভাবে নিশ্চিত করবেন?

প্রথম আলো: উপাচার্য বলেছিলেন ১০ টাকায় সুখাদ্য?

নুরুল হক: শিঙাড়া, সমুচা ও চপ তিন টাকা করে ও চা এক টাকা। বিশ্ববিদ্যালয় কিছুটা ভর্তুকি দিচ্ছে। তবে টিএসসি ও ডাকসুর দুটি ক্যাফেটেরিয়া ছাড়া ক্যাম্পাসের আর কোথাও তা পাওয়া যায় না। আবাসিক হলগুলোর খাবার সংকট ভিন্ন। পোলট্রির মুরগির এক টুকরা কোনো হলে ৩০ টাকা, কোনো হলে ৩৫ টাকা। রুই মাছের টুকরা জোটে না, নলা মাছের টুকরার জন্য ২০ বা ৩০ টাকা নেওয়া হয়। কিন্তু প্রতিটা হলেই অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে রান্নাটা চলে।

প্রথম আলো: দেখার কি কেউ নেই?

নুরুল হক: এসব দেখা ও তদারকির জন্য আলাদা করে শিক্ষক থাকেন। কিন্তু তাঁরা দেখেন না। একটি হলের প্রতিটি ফ্লোরের জন্য শিক্ষক থাকেন। এ জন্য তাঁরা প্রশাসন থেকে বিশেষ সুবিধা পান। কিন্তু এমন ফ্লোর পাবেন, বছরেও একজন শিক্ষক পরিদর্শন করেন না। শিক্ষার্থীদের খাবারের জন্য বরাদ্দ করা খাত থেকে নেতাদের মাসোহারা যায়। একসময় আমি ছাত্রলীগ করতাম। একটি হলে সভাপতি ২০ হাজার ও সাধারণ সম্পাদক মাসে ২০ হাজার টাকা নিতেন। এর বাইরেও ক্যানটিন মালিক গোপনে অন্যদের দিতেন। ক্যানটিন মালিকদের কিছু সাবেক ছাত্রনেতা বা তাঁদের প্রভাবে থাকা ব্যক্তিরা। বর্তমানেও এমন অবস্থা আছে। কোন হলের ক্যানটিনে প্রতিদিন ৩০ থেকে ৪০টা খাবার ফাউ হিসেবে চলে। অথচ ডাকসুর দিক থেকে একটা স্পষ্ট ঘোষণা ছিল যে, তারা ক্যানটিনের এমন সব অনিয়ম বন্ধ করবেন।

প্রথম আলো: কোনো একটা হলে গরুর পচা মাংসের সন্ধান মিলেছিল..

নুরুল হক: এটা ঘটেছে জসীমউদ্‌দীন হলে। একজন ডাকসু সদস্য নিজেই এটা ধরেন। তারপর ক্যানটিন মালিককে সেই মাংস খাওয়ান। মালিক স্বীকার করেন। কিন্তু সাধারণত মালিকদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। একটা উদাহরণ দিই, কিছুদিন আগেই মুহসীন হলের ছাত্ররা আন্দোলন করলেন। বললেন খাবারের মান খুবই বাজে। ছাত্রদের দাবির মুখে ওই ক্যানটিনের মালিকের ইজারা বাতিল হলো। পুনরায় দরপত্র ডাকা হলো। কিন্তু দেখা গেল সেই মালিকই আবার পরিচালনার ভার পেলেন। সুতরাং এ ঘটনা দেখাচ্ছে যে ক্যানটিন মালিকদের সিন্ডিকেট কতটা শক্তিশালী।

প্রথম আলো: বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগে অনিয়ম ঘটে, প্রশাসনে?

নুরুল হক: অনিয়ম চলে। তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগে যাচাই পরীক্ষা বলতে কিছু নেই। ডাকসুর ভিপি হিসেবে প্রশাসনকে কাছ থেকে দেখার সুযোগ ঘটেছে। চতুর্থ শ্রেণিতে কোনো লিখিত পরীক্ষা হয় না। তৃতীয় শ্রেণিতে নামকাওয়াস্তে। প্রধানত সবার আত্মীয়-স্বজন ও বাকিটা তদবিরে নিয়োগ ঘটে।

প্রথম আলো: ক্যাম্পাসের বাক্‌স্বাধীনতা?

নুরুল হক: ছাত্ররা যদিওবা মোটামুটি আছে কিন্তু শিক্ষকেরা মহাসংকটে। বিভিন্ন ইনস্টিটিউট বা হলের বিভিন্ন লাভজনক পদে থাকা শিক্ষকেরা একেবারেই তাঁদের মতামত দিতে পারছেন না। যাঁরা ভিন্নমত পোষণ করেন, তাঁরা বেশ আক্রান্ত হচ্ছেন। এমনকি লাঞ্ছিত হচ্ছেন। অধ্যাপক জোবাইদা নাসরীন কলাম লিখে থাকেন। মেয়েদের দুটি গ্রুপে বিরোধ হলো। তিনি হাউস টিউটর হিসেবে সমাধানের জন্য গিয়েছিলেন। সেখানে মেয়েরাই তাঁকে মারলেন। তাঁকে শুনতে হলো, আপনি তো ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে লেখেন। বাণিজ্য অনুষদের এক শিক্ষক জিয়াউর রহমানের প্রতি সমর্থনসূচক একটা লেখা লিখেছিলেন। শুধু সেই কারণে ছাত্রলীগ তাঁকে অপসারণের দাবি জানিয়ে বিরাট আন্দোলন করেছে। এর ফলে যেটা ঘটেছে, যাঁরা ভিন্নমত প্রকাশ করতে চান বা উদারনৈতিক লেখা লেখেন, তাঁরা লিখতে–বলতে ভয় পাচ্ছেন। বঙ্গবন্ধুর অবস্থান ও মর্যাদা অনন্য উচ্চতায়। কিন্তু একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে জিয়াউর রহমানেরও একটা অবস্থান আছে।

প্রথম আলো: তালেবানদের সঙ্গে মার্কিন চুক্তির মতো আন্তর্জাতিক বিষয়গুলো নিয়ে ক্যাম্পাসে কী ধরনের আলোচনা হয়? দেয়ালে লেখা হয়?

নুরুল হক: এ রকম জ্ঞানভিত্তিক আলোচনা হচ্ছে না। দেয়ালগুলোও প্রধানত ক্ষমতাসীন দলীয়দের করায়ত্ত। দেখা যায়, তাদের লেখা অনেক পুরোনো বিষয়ও কেউ মুছে লিখতে সাহস করে না। পাঠচক্র, আলোচনা সভা যেখানে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো আলোচিত হওয়ার সুযোগ ছিল, সেসব হ্রাস পেয়েছে।

প্রথম আলো: একজন বিদেশি বিশেষজ্ঞ ওয়াশিংটন পোস্ট–এ সম্প্রতি লিখেছেন, বাংলাদেশে রক্ষণশীল ইসলামের উত্থান ঘটেছে। হিজাবসহ নানা কিছুতে ক্যাম্পাসে কী টের পান?

নুরুল হক: আমি রক্ষণশীল ইসলামের উত্থান দেখি না। একজন মেয়ে জিনস পরছে, আবার হিজাব পরছে। তার মানে সে মডারেট হচ্ছে। যে ছেলে নিয়মিত নামাজ পড়ছে সেই ছেলে দিব্যি জগন্নাথ হলের ছাত্রদের সঙ্গে আড্ডা দিচ্ছে, গল্প করছে, তাঁর সঙ্গে সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত হচ্ছে। আমি তাই বলব, বিশ্বের অনেক নেতা যেখানে কট্টরপন্থার পথে আছেন, বাংলাদেশ তখন উদারনৈতিক পথেই রয়েছে।

প্রথম আলো: কতবার হামলার শিকার হয়েছেন? প্রাণনাশের চেষ্টা?

নুরুল হক: ভিপি হওয়ার পর সাতবার। ডাকসু ভবনে ও বগুড়ার হামলা ছিল সব থেকে মারাত্মক। ডাকসুতে আমার ছোট ভাইয়ের মাথায় পিস্তল দ্বারা আঘাত করা হয়। সিঁড়ি দিয়ে উঠতে গেলে এখন তার স্মৃতিভ্রম ঘটে। জগন্নাথ হলের একটি ছেলে হাঁটতে পারে না। আমার মেরুদণ্ডে তিনটি ফ্র্যাকচার হয়েছে, এখনো ব্যথা পাই।

প্রথম আলো: পরের ডাকসু নির্বাচন কবে?

নুরুল হক: ২৩ মার্চে মেয়াদ শেষ হবে। তবে মনে হয় মুজিব বর্ষে অন্তত নতুন নির্বাচনের পদক্ষেপ নেওয়া হবে না।

প্রথম আলো: বিদেশি দূতাবাসে আপনার যাওয়া নিয়ে কথা উঠেছে। কী উদ্বেগ তাদের? তারা কেন আমন্ত্রণ জানায়?

নুরুল হক: এ পর্যন্ত আমি যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, সুইডিশ ও জার্মান দূতাবাসের আমন্ত্রণে গিয়েছি। তারা ছাত্ররাজনীতির সহিংসতা নিয়ে উদ্বিগ্ন। এসব বিষয় জানতে চায়। নেপাল ও যুক্তরাজ্য সফরের আমন্ত্রণ পেয়েছিলাম। কিন্তু পাসপোর্ট না থাকার কারণে তাতে যেতে পারিনি।

প্রথম আলো: আপনাকে ধন্যবাদ।

নুরুল হক: ধন্যবাদ।