কিটের ফর্মুলা উন্মুক্ত করতে রাজি আছি: জাফরুল্লাহ চৌধুরী

জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
>

জাফরুল্লাহ চৌধুরী, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ট্রাস্টি। বিশ্বব্যাপী অতিমারি হিসেবে ঘোষিত কোভিড–১৯ পরিস্থিতিতে তিনি গতকাল শনিবার তাঁর নগর স্বাস্থ্য কেন্দ্রে প্রথম আলোর মুখোমুখি হন। কথা বলেছেন গণস্বাস্থ্য পরীক্ষা কিট এবং সংকট মোকাবিলার নানা উপায় নিয়ে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন মিজানুর রহমান খান

প্রথম আলো: কোভিড-১৯ শনাক্তকরণে গণস্বাস্থ্যের উদ্ভাবন কতটা কার্যকর হবে?

জাফরুল্লাহ চৌধুরী: আমাদের প্রধান বিজ্ঞানী ড. বিজন কুমার শীল আগে (মধ্য নব্বই দশকে) বাংলাদেশ সরকারে চাকরি করতেন। অবসরে গিয়ে সিঙ্গাপুরে গবেষক হিসেবে খ্যাতি কুড়িয়েছেন। তিনি আগে সার্স পরীক্ষার জন্য কিট উদ্ভাবন করেন। চীন তাঁর কাছ
থেকে সেই পেটেন্ট কিনে নিয়েছিল। গত ডিসেম্বরে উহানের ঘটনা প্রকাশের পরই তিনি ও তাঁর দল (ড. নাহিদ, ড. জমির ও ড. ফিরোজের সমন্বয়ে) গুরুত্বটা দ্রুত বোঝেন। মার্চের গোড়ায় তাঁরা সিদ্ধান্তে পৌঁছান যে কোভিড-১৯ আক্রান্তদের তাঁরা শনাক্ত করতে পারবেন। তবে বর্তমানে প্রচলিত পিসিআর (পলিমার চেইন রিঅ্যাকশন) পদ্ধতি এবং গণস্বাস্থ্যের উদ্ভাবিত পদ্ধতির (যার নামকরণ করা হবে গণস্বাস্থ্য র‍্যাপিড ডট ব্লট) মধ্যে একটি ফারাক আছে। পিসিআরে কারও শরীরে করোনার জীবাণু ঢুকলেই হলো, সেটা পরীক্ষা করে তাৎক্ষণিক রোগ নির্ণয় সম্ভব। কিন্তু আমাদের উদ্ভাবিত কিটে সময় একটু বেশি লাগবে। এর দ্বারা কারও শরীরে জীবাণু ঢোকার ৭২ ঘণ্টা পেরোতে হবে। এরপর আমাদের কিট দ্বারা কোভিড–১৯–এর উপস্থিতি শনাক্ত করা যাবে।

তবে দামের বিবেচনায় আমাদের উদ্ভাবন অনেক সাশ্রয়ী। পিসিআর পদ্ধতিতে একজনের পরীক্ষায় কিটের দামসহ খরচ পড়ে ১২ থেকে ১৩ হাজার টাকা। অন্যদিকে আমাদের কিট দিয়ে পরীক্ষার খরচ পড়বে আড়াই শ টাকা। আশা করি, এই টাকাতেই বাজারজাত করতে পারব। আবার পিসিআর দিয়ে পরীক্ষা করে ফল পেতে কয়েক দিন লাগে, আর আমাদের উদ্ভাবিত কিটে ফল পেতে অনধিক ১৫ মিনিট লাগবে।

প্রথম আলো: সারা বিশ্ব যখন কম খরচে পরীক্ষার দিকে তাকিয়ে, তখন দেশি–বিদেশি সাড়া কেমন? শুল্কমুক্ত না হলে কত খরচ পড়ত?

জাফরুল্লাহ চৌধুরী: সিডিসি, আটলান্টাসহ কিছু বিদেশি সংস্থা ই–মেইলে যোগাযোগ করেছে। আমরা সবার সঙ্গেই সহযোগিতার জন্য প্রস্তুত। তবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড শুল্কমুক্ত সরঞ্জাম আমদানি করতে দিতে রাজি হয়েছে। সে জন্য আমি সরকারের এই সিদ্ধান্তের প্রশংসা করব। শুল্কমুক্ত সুবিধা না পেলে একটি কিটের খরচ পাঁচ শ টাকা পড়ত। তবে আমরা কিন্তু এতে মুনাফা যোগ করতে চাই না।

প্রথম আলো: তাহলে কেন শুধু গণস্বাস্থ্য করবে। কোভিড–১৯ যখন গোটা বিশ্বকে অস্থিতিশীল করে দিয়েছে, যখন পিসিআর এতটা ব্যয়বহুল এবং দুষ্প্রাপ্য তখন প্রধানত সরকার এবং বেসরকারি খাতের অন্যান্য আগ্রহী ওষুধ প্রস্তুতকারীরা এগিয়ে আসতে পারেন। ফর্মুলাটা তাঁদের দেবেন তো?

জাফরুল্লাহ চৌধুরী: অবশ্যই। এ বিষয়ে আমাদের অবস্থান অত্যন্ত পরিষ্কার। সরকারি বা বেসরকারি যারাই এই কিট বাজারজাতকরণে এগিয়ে আসবে, তাদের আমরা স্বাগত জানাব। তবে শর্ত হলো কেউ ইচ্ছেমতো দাম নির্ধারণ করতে পারবে না। ১৯৮২ সালের ওষুধ নিয়ন্ত্রণ আইনের অধীনে রাষ্ট্রকে মূল্য নির্ধারণ করতে হবে। আমরা এক মাসের মধ্যে বাজারে আনতে পারব। তবে সেটা হয়তো মাসিক উৎপাদনের পরিমাণ এক লাখ কিটের বেশি হবে না। কিন্তু বাস্তবে মাসিক চাহিদার পরিমাণ আরও অনেক বেশি হতে পারে। সুতরাং আমরা চাই রাষ্ট্র এই কিট তৈরিতে এগিয়ে আসুক।

প্রথম আলো: ২১ মার্চ ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর পত্রিকান্তরে বিজ্ঞাপন দিয়ে বলেছে, এ বিষয়ে বিভ্রান্তিকর খবর ছাপা হচ্ছে। তারা কিট উৎপাদনের অনুমতি আপনাদের দেয়নি। আপনাদের ‘কিটের মান, কার্যকারিতা ও নিরাপত্তা’ নিশ্চিত করতে হবে।

জাফরুল্লাহ চৌধুরী: এই বিজ্ঞাপনের খরচ কে বহন করেছে জানি না, তবে জনগণের টাকায় এমন বিজ্ঞাপন অনাবশ্যক, অপ্রাসঙ্গিক এবং দুঃখজনক। কারণ, এখানে নিরাপত্তার প্রশ্ন অবান্তর। কিট তো কারও শরীরে প্রবেশ করবে না। এটা তো একধরনের রক্ত পরীক্ষা। এক ফোঁটা রক্ত পেলে আমরা বলতে পারব কারও করোনা হয়েছে কি হয়নি। আর এটা সবারই জানা যে বাণিজ্যিক উৎপাদনে যাওয়ার আগে সরকারের কাছে উপযুক্ত নমুনা দিতে হবে। সেই নমুনার বাণিজ্যিক উৎপাদনে অনুমোদন পেতে হবে। এখন তাই কেবল নমুনা তৈরির জন্যই রিএজেন্টসহ কিছু উপকরণ আমদানির দরকার পড়ছে। আর সে জন্য ঔষধ প্রশাসন গত বৃহস্পতিবার কিট উন্নয়নে তাদের অনাপত্তি দিয়েছে। বোধগম্য কারণেই সেটা বাজারজাতকরণের জন্য নয়। তবে এনবিআরের কাছ থেকে ফোন পেলাম ২০ মার্চের বিকেলে। ছুটির দিনেও কর্মকর্তারা আমাদের সঙ্গে এনবিআরে বসলেন। তাঁরা আশ্বস্ত করেছেন যে আমরা যা চাইছি, সেসব তাঁরা শুল্কমুক্তভাবে আমদানির সুযোগ দেবেন। আরও যা সহযোগিতা লাগবে, সেটা দেবেন। এই প্রথম দেখলাম, আমলাতন্ত্র অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে কাজ করছে। আমরা অবশ্য এসব বিষয় আমদানির জন্য ইংল্যান্ডের একটি কোম্পানিকে ইতিমধ্যে চিঠি দিয়েছি।

প্রথম আলো: করোনা ব্যাপকভাবে আঘাত হানলে সরকার এ পর্যন্ত যে প্রস্তুতি নিয়েছে, সেসব বিষয়ে আপনার মূল্যায়ন কী?

জাফরুল্লাহ চৌধুরী: সরকার এ পর্যন্ত যা যা পদক্ষেপ নিয়েছে, তা অপর্যাপ্ত। তাঁরা এখন পর্যন্ত যথাযথ গুরুত্বটা বুঝতে পারছেন না। অবশ্য কিট উদ্ভাবনে আমাদের দেওয়া সহযোগিতা অবশ্যই সন্তোষজনক। কিন্তু আমি দুই মাস ধরে নেওয়া সরকারের সামগ্রিক প্রস্তুতি বিবেচনায় নিয়ে বলছি।

প্রথম আলো: সরকারকে অগ্রাধিকারভিত্তিক কয়েকটি পদক্ষেপ নিতে পরামর্শ দিন।

জাফরুল্লাহ চৌধুরী: প্রথমত, বিদেশ প্রত্যাগতদের স্ক্রিনিং করার বিষয়ে অনেক ভুল হয়েছে। বিশেষ করে তাঁদের সঙ্গে মানবিক আচরণ করা হয়নি। বহু এয়ারপোর্টে অযথা বহু সময় কাটিয়ে একজন দেশে ফিরেছেন। প্রবাসীরা আমাদের বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের রেমিট্যান্স দিয়ে থাকেন। গত বছরের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত তাঁরা ১৫ বিলিয়ন ডলার পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁদের প্রতি আদর–যত্ন আমরা নিতে পারিনি। তাই তাঁরা ক্ষিপ্ত হয়েছেন। রাগ করে তাঁরা ঝুঁকি নিয়েও বাড়ি ফিরে গেছেন। জরিমানা করে নয়, কাউন্সেলিং করে তাঁদের টেস্ট করাতে হবে। অথচ চীনা রাষ্ট্রদূত জানুয়ারি থেকে বলে আসছিলেন যে শুধু চীন প্রত্যাগতদের দিকে মনোযোগ দেওয়াটা ভুল। তখন আমিও বলেছি, শতভাগ প্রত্যাগতের পরীক্ষা করা উচিত ছিল। এই ভুলের পুনরাবৃত্তি বন্ধ করতে হবে।

দ্বিতীয়ত, ভারতের সীমান্তে নজরদারি বাড়াতে হবে। ৫ কোটি ভারতীয় ১৭০টি করোনা–আক্রান্ত দেশে চাকরির কারণে। শত শত ট্রাক ঢুকেছে। ট্রাকচালকেরা অনেক নাজুক অবস্থায় থাকেন। তাঁদের টেস্ট করাতে হবে। তৃতীয়ত, আইনের ভুল প্রয়োগ, আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো মিথ্যা এবং হয়রানিমূলক মামলাসহ নানা কারণে আমাদের জেলখানাগুলো জনাকীর্ণ হয়েছে। এখানে একটি সাহসী পদক্ষেপ নিতে হবে। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর অনুষ্ঠান যথেষ্ট কাটছাঁট করা ছিল একটি সাহসী পদক্ষেপ। আমি মনে করি, খুন ও ধর্ষণের মতো গুরুতর অপরাধী ছাড়া অন্যান্য অভিযোগে যারা ১০ বছরের নিচে দণ্ডিত এবং উল্লেখযোগ্য সাজাও খেটেছেন, তঁাদের একটি সাধারণ ক্ষমা, কিংবা প্যারোল কিংবা প্রবেশন দিয়ে ছেড়ে দেওয়া যেতে পারে। চতুর্থত, আমাদের ফৌজদারি ব্যবস্থা দুর্বল হওয়া, সমাজে দলাদলি বেড়ে যাওয়া এবং পুলিশসহ বিভিন্ন আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কারণে আদালতগুলো জনসমাগমের বিরাট একটি উৎসে পরিণত হয়ে আছে। গায়ে গা লাগানো ছাড়া কেউ হাজিরাই দিতে পারেন না। এই দৃশ্যপটও বদলে দিতে হবে। কোর্টের নিয়মকানুনে পরিবর্তন আনতে হবে। প্রতিদিন কোর্টে লাখ লাখ লোক যান। ২০৫ ধারার আওতায় বাদী–বিবাদীদের ব্যক্তিগত হাজিরা দিতে মুক্তি দেওয়া যায়। পঞ্চমত, রোহিঙ্গাদের দিকে নজর দিতে হবে। আমরা বারুদের ওপরে বসে আছি। ষষ্ঠত, চিকিৎসক ও নার্স। ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে আগে লেখা বেরিয়েছে, তাঁরা রোগীদের সেবা দেন বটে। কিন্তু হাত ধোয়ার অভ্যাস তাঁদেরই বেশি কম। সপ্তমত, মসজিদগুলোকে আরও ভালোভাবে কাজে লাগাতে হবে। পাঁচবার অজু করেই পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের জন্য মসজিদে যেতে হবে এবং প্রবেশের সময় ইনফ্রারেড থার্মোমিটার দিয়ে তাপমাত্রা চেক করতে হবে। বলতে হবে গায়ে গা লাগিয়ে নামাজ পড়া যাবে না। অষ্টমত হ্যান্ড গ্লাভসের ট্যাক্স ৫৮ ভাগ এবং ইনফ্রারেড থার্মোমিটারের ট্যাক্স ৩১ ভাগ। এ রকম আনুষঙ্গিক অন্যান্য ক্ষেত্রে যে ট্যাক্স আছে, তা মওকুফ করতে হবে। উল্লিখিত বিষয়গুলো না করে লকডাউন করা, আর্মি নামানো বা ভ্রাম্যমাণ আদালত দিয়ে জরিমানা করিয়ে সব ঠিক করে ফেলার নীতি নেওয়া হবে ভুল।

প্রথম আলো: এই সময়ে দেশের স্বাস্থ্য খাত সংস্কারের বিষয়ে কিছু বলবেন?

জাফরুল্লাহ চৌধুরী: আমাদের স্বাস্থ্য খাতের যেটা নিশ্চিত করা সব থেকে জরুরি সেটা হলো ডাক্তার-নার্সদের কর্মস্থলে থাকতে হবে। একটি ভবন সেটা যেখানে হোক, গ্রাম কিংবা শহর, সেখানে তাদের ২৪ ঘণ্টা উপস্থিতি লাগবে। একজন মানুষের সর্দি–কাশি হলো, তাকে দ্রুত নিকটস্থ ডাক্তারের কাছে ছুটতে হবে। আবার ডাক্তার সাহেব আরও তাড়াতাড়ি তাকে পরীক্ষা করবেন। হয়তো বলে দেবেন, তোমার করোনা হয়নি। নিউমোনিয়া হয়েছে। সাবধানে থাকতে হবে। এখন যেটা চলছে সেটা হলো, তোমার করোনা না হলে তোমাকে দেখবই না। আগে দেখতে হবে।

প্রথম আলো: আমরা করোনা নয়, গোটা স্বাস্থ্যব্যবস্থার সংস্কার বিষয়ে আপনার মন্তব্য চাইছি।

জাফরুল্লাহ চৌধুরী: জনগণকে তার জায়গাতেই রাখতে হবে। তার দোরগোড়াতেই তার জন্য স্বাস্থ্যসেবা দিতে হবে। অনেক সোজা কাজ আছে। সেসবেই হাত দেওয়া হয় না। যেমন অ্যানেসথেসিয়া। গ্রামপর্যায়ের স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে এর লোকবল নেই। এটা দেশের সর্বত্র তিন মাসের মধ্যে করা সম্ভব। আমাকে দিলে এক মাসেই করে দিতে পারব। গোটা স্বাস্থ্যব্যবস্থাকে ধুয়েমুছে সাজাতে হবে। রোগ যা–ই হোক, উন্নত চিকিৎসা দিতে সবাইকে তো ঢাকায় আনা যাবে না। আনা উচিতও হবে না।

প্রথম আলো: কিন্তু ইউনিয়ন পর্যায়ে কেবল মা ও শিশু পরিচর্যার কেন্দ্র আছে। সেখানে পূর্ণাঙ্গ হাসপাতাল কবে যাবে?

জাফরুল্লাহ চৌধুরী: অন্তত পাঁচ হাজার স্বাস্থ্যকেন্দ্র আছে। হ্যাঁ, সত্য বটে, সেসবের অবস্থা ভালো নয়। অর্ধেকের বিদ্যুৎ নেই। কোথাও টিনের চালা নেই। প্রতিটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রকে উপযোগী করতে ২০ লাখ টাকা করে খরচ লাগবে। সরকারের পক্ষে এই ব্যয় মেটানো কোনো ব্যাপারই নয়। এসব কেন্দ্রে দুজন করে চিকিৎসকের জন্য ৮০০ বর্গফুটের বাসস্থান করে দিতে হবে। এরপর প্রধানমন্ত্রী নিশ্চিত করবেন যে ডাক্তারেরা গ্রামেই থাকছেন।

প্রথম আলো: গ্রামের মানুষ করোনা পরীক্ষা করতে কোথায় যাবে। ঢাকাতেই শুধু সম্পূর্ণ করোনার জন্য ৫–৬টি হাসপাতাল, বাইরে ৬ হাজার আইসোলেশন বেড, সামলানো যাবে?

জাফরুল্লাহ চৌধুরী: ঢাকাতেই যা খালি আছে, সেখানেই বা চিকিৎসা কোথায়। আইইডিসিআরের সনদ ছাড়া সেখানে চিকিৎসা কোথায়? সৃষ্টিকর্তার দান হিসেবে যেন এই একটি সংস্থাকেই ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। তারা ছাড়া অন্যরা পরীক্ষা করতেও পারবে না। এমনকি আইসিডিডিআরবি, যাদের ভালো ল্যাব ছিল, তারাও পারবে না। এটা কেমন কথা? পরীক্ষার জন্য এক লাখ কিউতে আছে। তাদের কাছে হাজার দেড়েক কিট আছে। কিন্তু তা নিয়ে তারা বসে আছে কেন। এটা কি মিষ্টি? মনে হয়, যেন ভিআইপির জন্য রেখে দিয়েছে। সরকারের এই মানসিকতা বদলাতে হবে। তাদের কাজ যতক্ষণ আছে, সেটা দিয়ে পরীক্ষা চালানো। কিন্তু তারা ধরে রাখছে। আমার কথা হলো, অভিজ্ঞতা আমরা কাজে লাগাচ্ছি কোথায়? আমার ডাক্তার আছে, তারা রোগী দেখছেন না। সর্দি–কাশি তাঁরা দেখছেন না। অজুহাত দিচ্ছেন, আমার সুরক্ষিত পোশাক বা সামগ্রী নেই।

প্রথম আলো: সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে পলায়নের মতো ঘটনা রোধে করণীয়?

জাফরুল্লাহ চৌধুরী: চিকিৎসক ও নার্সদের প্রশিক্ষণ দেওয়া। দেশে প্রায় এক লাখ ডাক্তার ও দুই লাখ নার্স ও প্যারামেডিক আছে, তাঁদের এক ঘণ্টার প্রশিক্ষণ দেওয়া দরকার। ঢাকায় যে চারটি তারা খালি করেছে বলছে, সেখানে চিকিৎসা কোথায়। সন্দেহভাজনদের তো সেখানে পরীক্ষা করা যায়।

প্রথম আলো: আপনাকে ধন্যবাদ।

জাফরুল্লাহ চৌধুরী: আপনাকেও ধন্যবাদ।