ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ার সময় চলে যায়

করোনাভাইরাসের তাণ্ডব ইতিমধ্যেই ইতালিসহ ইউরোপ, ইরান, মধ্যপ্রাচ্য, যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও পৃথিবীর উন্নত দেশগুলোকে দিশেহারা এবং দরিদ্র দেশগুলোয় আতঙ্ক ছড়াতে শুরু করেছে। সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার সবখানেই বাড়ছে। চীনে উৎপত্তিস্থল উহানে এই রোগের গতিরোধ করায় যে সাফল্য পাওয়া গেছে তা উচ্চমাত্রায় আক্রান্ত ইতালি, স্পেন ও ইরানে দেখা যাচ্ছে না। এর গতিরোধ করা না গেলে তা মানবসভ্যতার এক নতুন ট্র্যাজেডিতে পরিণত হতে বাধ্য। রোগ বিস্তার স্বাস্থ্য ও অর্থনৈতিক সংকটের পাশাপাশি ব্যাপক সামাজিক ও মনস্তাত্ত্বিক সংকট ক্রমে ঘনীভূত হবে। রোগাক্রান্তদের চিকিৎসা গুরুত্বপূর্ণ হলেও সংক্রমণ রোধই সব ধরনের সংকট মোচনের প্রধান উপায়। এই সত্য থেকে বিচ্যুত হলে খাদের কিনারা থেকে গর্তে পড়ে যাওয়া একধরনের নিশ্চিত।

এই নতুন আসা রোগের গতি-প্রকৃতি জানা রোগ প্রতিরোধ কৌশল নির্ণয়ে মুখ্য ভূমিকা রয়েছে। রোগ বিস্তার প্রতিরোধে সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ায়—এমন সব বিষয়ের ব্যবস্থাপনায় মনোযোগ দেওয়াও দরকার। ভাইরাস সংক্রমণ, রোগাক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা ও মৃত্যুহার যেমন জ্যামিতিক হারে বাড়তে থাকে, তেমনি প্রতিরোধের ফলাফলও জ্যামিতিক হারে পাওয়া যায়।

কেউই ঝুঁকির বাইরে নেই
প্রথমত, এই ভাইরাস স্বভাবগতভাবেই অতিশয় সংক্রমণশীল এবং এর ঝুঁকিতে থাকা সর্বসাধারণের কোনো প্রাকৃতিক রোগ প্রতিরোধ সক্ষমতা নেই। ফলে কেউই যে সংক্রমণের ঝুঁকির বাইরে নেই, এই কথা সবার মনে রাখা জরুরি। সংক্রমণের বিষয়ে ব্যক্তিগতভাবে সতর্ক না হলে ব্যক্তিগত ও পাশাপাশি তার সঙ্গে একই পরিবেশে বসবাসকারী সবার ঝুঁকি বাড়তে বাধ্য। সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়লে সাধারণভাবে যারা কম তীব্র মাত্রায় আক্রান্ত ও যাদের মৃত্যুঝুঁকি কম; চিকিৎসা সুযোগের অভাবে তাদের ও সার্বিক মৃত্যুর হার বাড়বে।

১ জনকে ঝুঁকিমুক্ত করার ফল ৩ থেকে ৭ জন পাবে
বিদেশফেরত ও তাদের পরিবারকে সফলভাবে কোয়ারেন্টাইন আবদ্ধ করলে সংক্রমণ ঝুঁকি ও হার কমবে। ফলে এদিকে সব শক্তি নিয়োগ করার কোনো বিকল্প নেই। সংক্রমণের ঝুঁকি কমলে সংক্রমণের সংখ্যা কমবে। একজনকে সংক্রমণের ঝুঁকিমুক্ত করা গেলে ৩ থেকে ৭ জনকে সংক্রমণ থেকে সুরক্ষা দেওয়া যাবে। পাশাপাশি, সংক্রমণের হার কমলে রোগাক্রান্ত, বিশেষ করে গুরুতর রোগাক্রান্তদের সংখ্যা কমবে। রোগাক্রান্তদের সংখ্যা কমলে হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজনসহ সার্বিক ও উন্নত চিকিৎসাব্যবস্থার ওপর চাপ কমবে। চিকিৎসাব্যবস্থার ওপর চাপ কমলে আক্রান্ত ব্যক্তিদের চিকিৎসা পাওয়ার সুযোগ বাড়বে এবং অবাঞ্ছিত মৃত্যুহার কমবে।

ঘরকে নীরোগ দুর্গ বানান
দেহের বাইরে ভাইরাসটি দীর্ঘ সময় প্রাকৃতিক পরিবেশে বেঁচে থাকতে পারে। এ কারণে দীর্ঘ সময় ধরে একই ভাইরাস দ্বারা দূষিত পরিবেশ থেকে ওই পরিবেশে থাকা বহুসংখ্যক মানুষ সংক্রামিত হতে পারে। ফলে পরিবেশের পরিষ্কার–পরিচ্ছন্নতা সংক্রমণ ঠেকাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। একই সঙ্গে বিনা প্রয়োজনে বাইরে না যাওয়া ও থাকা, বিনা প্রয়োজনে আশপাশের বস্তুসামগ্রী স্পর্শ না করা, কোনো কিছুতে হেলান না দেওয়া, যেখানে–সেখানে কফ-থুতু না ফেলা, বাইরে ব্যবহারের জন্য ভিন্ন ও ধোয়া যায় এমন বা রাবার–জাতীয় জুতা–স্যান্ডেল ব্যবহার করা, বাইরে থেকে ফিরে এসব জুতা-স্যান্ডেল ঘরের মধ্যে না নেওয়া ও তা সাবান পানিতে ধুয়ে ফেলা, বাইরে থেকে ফিরে হাত ও পা সাবান–পানিতে ভালো করে ধুয়ে ফেলা ব্যক্তিগত সুরক্ষা দেবে। ঘরের বাইরে না গেলে স্যানিটাইজার বা বারবার সাবান দিয়ে হাত-পা-মুখ ধোয়ার কোনো বাড়তি সুরক্ষা নেই।

এই কারণে, ঘরের মেঝে প্রতিদিন সাবান–পানিতে মুছে ফেলা পাকাবাড়ির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। অ্যাপার্টমেন্টগুলোয় অপ্রয়োজনীয় লোকজনের প্রবেশ সীমিত করা প্রয়োজন। প্রতিটি অ্যাপার্টমেন্ট ও বাড়ির প্রবেশপথে একটি কাপড় বা স্পঞ্জ–জাতীয় সিনথেটিক ম্যাট সাবান–পানি বা স্যাভলনযুক্ত পানিতে ভিজিয়ে বাইরে থেকে আসা সবাইকে সেখানে ৫ মিনিট দাঁড়াতে সুযোগ করে দিলে বাইরের পরিবেশদূষণ থেকে অ্যাপার্টমেন্টগুলোকে সুরক্ষিত করা যায়। বাড়ি ও অ্যাপার্টমেন্টগুলোর সাধারণ পরিবেশে বেশি ঘোরাফেরা ও সমবেত হওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। পরিবারের কেউ সর্দি-কাশি-জ্বর-গলাব্যথায় আক্রান্ত হলে সম্ভব হলে তাকে টয়লেট ব্যবস্থা থাকা একটি নির্দিষ্ট ঘরে অন্তত ১৪ দিন সীমাবদ্ধ করতে হবে। মাস্ক ব্যবহারসহ হাত-মুখ ও বস্তুসামগ্রী স্পর্শ করা থেকে বিরত এবং বারবার সাবান–পানিতে হাত–মুখ নিরাপদ স্থানে ধুয়ে ফেলার উদ্যোগ নিতে হবে। মনে রাখা প্রয়োজন, একটি মানুষকে সংক্রমণের সুযোগ থেকে সুরক্ষা দেওয়া হলে যেমন ৩ থেকে ৭ জনকে ব্যক্তিগত ও পারিবারিক ঝুঁকি কমাতে পারে, তেমনি একটি স্থানের সুরক্ষা এমন ৩ থেকে ৭টি স্থানকে সুরক্ষিত করবে।

চীনকে হুবহু অনুকরণ করা যাবে না
একটি বিষয় গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা দরকার। উহান ছিল এই রোগের উৎপত্তিস্থল। ফলে একটি নির্দিষ্ট জায়গা থেকে সংক্রমণ ও রোগ ছড়াতে শুরু করে। চীনের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ ও সরকার দ্রুত সংকটটির স্বরূপ নির্ণয়ে ও সংক্রমণ সংকোচনে ব্যবস্থা নেয়। স্থানীয়ভাবে উদ্ভূত হওয়ায় চীনা কর্তৃপক্ষ সারা দেশ থেকে তাদের চিকিৎসার সরঞ্জাম, চিকিৎসক ও অন্যান্য সম্পদ ও সুযোগ এক স্থানে একত্র করে অতি দ্রুততার সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলায় সর্বশক্তি নিয়োগ করতে সক্ষম হয়েছিল। এ ছাড়া চীনের দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক সংগঠনের কারণে দেশটিতে যে সংঘবদ্ধতা ও সামাজিক সংহতি বিদ্যমান, তা বহু দেশেই অনুপস্থিত। অন্য কথায় চীনের এই দুর্যোগ মোকাবিলায় তার সরকার, জনগণ ও পেশাজীবীরা অজ্ঞতা মোচনে উপযুক্ত জ্ঞান আহরণ ও ব্যাপক বিনিময় এবং জনশক্তি, সম্পদ, প্রশাসনিক সক্ষমতা, সর্বমহলে যোগযোগ স্থাপন, রাজনৈতিক সদিচ্ছা ও জনসম্পৃক্ততা সৃষ্টি করায় যে দূরদর্শিতার প্রমাণ রেখেছে, তা তাদের সাফল্যকে দ্রুত ও নিরঙ্কুশ করেছে। দুর্যোগ মুহূর্তে করণীয় ও তা প্রশমনের সক্ষমতা প্রমাণে তারা বিশ্বের জন্য সর্বোত্তম দৃষ্টান্ত তৈরি করেছে।

জনগণের সক্ষমতায় বিশ্বাস হারিয়ে ফেলেছি?
বাংলাদেশে এ বিষয়গুলোর সবারই জানা। ফলে, সরকার ও প্রশাসনের কাছে মুখাপেক্ষী না থেকে প্রত্যেকের উচিত তার নিজ নিজ সক্ষমতার জায়গা থেকে দায়িত্বশীলতার সঙ্গে এগিয়ে আসা, জ্ঞান সংগ্রহ করা, স্থানীয় নেতৃত্ব ও কর্মকৌশল গড়ে তোলা এবং নিজ নিজ পরিবেশে উপযুক্ত প্রতিরোধ গড়ে তোলা। একাত্তরের অভিজ্ঞতায় প্রত্যেক ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোলার ঘোষণা কেন আসছে না, তা বোধগম্য নয়। তবে কি আমরা এই ভাষণ ভুলে গেছি? না আমরা গেল ৫০ বছরে জনগণের ক্ষমতা ও সক্ষমতায় বিশ্বাস হারিয়ে ফেলেছি? তবে কি আমরা জনগণকে তাদের ভাগ্য গড়ার সুযোগদানে আর বিশ্বাস রাখি না? ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোলার এখনই কি সময় নয়?

চীনের উহানের আর বিশ্বের অন্যান্য স্থানে করোনা বিস্তার রোগতাত্ত্বিকভাবে ভিন্ন। উহানে এই রোগের উৎপত্তি ছিল একান্তই স্থানীয়, ফলে তা চীনের মত একটি উন্নত সামর্থ্যের দেশের পক্ষে সব ও সর্বাত্মক শক্তি নিয়োগ করে একই স্থানে লকডাউন করে আনুপাতিকভাবে বেশি ক্ষতিসাধনের আগেই সীমিত করে ফেলা সম্ভব হয়েছে। অন্যান্য দেশে এই সংক্রমণ/রোগ বা আগমন/গমন পদ্ধতিতে হওয়ায় তা দেশের এক স্থানের বদলে নানা স্থানে ছড়িয়ে পড়ে। ফলে, চীনের অভিজ্ঞতা হুবহু অনুসরণে অনেক দেশেই চীনের মতো ফল পাবে বলে মনে হয় না।

চীন থেকে কেউ শেখেনি
চীনের সংক্রমণ/রোগ বিস্তার ছিল একই স্থানে সীমিত। অন্যদিকে সাম্প্রতিক বিশ্ব মহামারির ক্ষেত্রে ভ্রমণকারীদের দ্বারা রোগ ছড়িয়ে পড়ছে দেশের বা বিশ্বের নানা স্থানে। ফলে প্রতিরোধ ও সেবাব্যবস্থা তথা জনশক্তি, সম্পদ ও চিকিৎসার সুবিধাকে নানা স্থানের মধ্যে ভাগাভাগি করে ফেলতে হচ্ছে। এই কারণে প্রতিটি দেশের সামর্থ্য তা যত বড়ই হোক না কেন—ছিন্নভিন্ন হওয়ার ফলে দুর্বল হয়ে পড়তে বাধ্য। তা ছাড়া চীনের দুর্যোগে সাড়া দেওয়ায় যে অবিশ্বাস্য দ্রুততা ছিল, তা তাদের সাফল্যের অন্যতম প্রধান নির্ণায়ক। বিশের অন্যান্য দেশ চীনের বিপরীতে প্রস্তুতির বিস্তর সময় পেলেও পর্যবেক্ষণে সময়ক্ষেপণ করে সাড়া দিতে দেরি করে ফেলে। ইতালি, স্পেন, ইরানের মতো বাংলাদেশও সাড়া দিতে বিলম্ব, প্রকৃত দুর্যোগকে তাচ্ছিল্য করা ও ভ্রান্ত কৌশলের কারণে আরও দুর্বিপাকে পড়বে বলে মনে হয়।

চিকিৎসাবিপর্যয় ও চিকিৎসকদের সুরক্ষা
গত ৩ মাসে ৬ লক্ষাধিক বিদেশ প্রত্যাগত, বিশেষ করে গত কয়েক সপ্তাহে ইউরোপ থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে লক্ষাধিক সম্ভাব্য করোনাভাইরাস বহনকারী দেশে প্রবেশ ও তারা দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে। একই সঙ্গে হোম-কোয়ারেন্টাইন ব্যর্থ হলে সংক্রমণ/রোগ বিস্তারের সম্ভাবনাও রন্ধ্রে রন্ধ্রে ছড়িয়ে পড়েছে। এভাবে দেশের নানা স্থান দুর্যোগের শতসহস্র অগ্নিগর্ভে পরিণত হয়েছে। এর ফলে দেশের সীমিত স্বাস্থ্যসেবা সামর্থ্যকে নানা স্থানে বিতরণ করার প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। এসব কারণে একধরনের ভেঙে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

দেশে চিকিৎসক ও সেবা প্রদানে সক্ষম জনবলের সংখ্যাও সীমিত। তাঁদের ব্যক্তিগত সুরক্ষার আয়োজনও পর্যাপ্ত বলে দৃশ্যমান নয়। ফলে তাঁদের সহযোগিতা ও আন্তরিকতারও ঘাটতি দেখা দিতে পারে। এ ছাড়া নগণ্য সংখ্যায় হওয়ায় দীর্ঘ মেয়াদে তারা অবসাদ আক্রান্ত হয়ে পড়বে। ব্যক্তিগত ও পরিবেশ সুরক্ষায় এসব কর্মীকে যথেষ্ট প্রশিক্ষণ না থাকায় চিকিৎসাকেন্দ্রগুলোও সংক্রমণের আগ্নেয়গিরি হয়ে দাঁড়াবে। সেবাকর্মীরা বেশি সংখ্যায় আক্রান্ত হলে বড় ধরনের বিপর্যয় দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেবে। যেহেতু সংক্রমণ/রোগ বিস্তার প্রাথমিক পর্যায়ে ঘটবে প্রত্যন্ত অঞ্চলে, লোক ও সামগ্রীবলের অভাবে দেশব্যাপী উন্নত চিকিৎসার সুযোগ তৈরিও চীন, ইতালি, স্পেন, ইরানের মতো উন্নত সামর্থ্যের দেশের মতো কতটা সাফল্য পাবে, তা বলাই বাহুল্য। ফলে একধরনের চিকিৎসাবিপর্যয় অনেকটাই করোনার মতোই প্রতিরোধহীন হয়ে দাঁড়াবে।

তাণ্ডব বড় শহরমুখী হবে
সংক্রমণ/রোগ বিস্তার ক্রমে প্রত্যন্ত অঞ্চলে তাদের তাণ্ডব কায়েম করে বড় বড় শহরমুখী হবে। ইতিমধ্যে শহরের দিকে উপার্জনের জন্য নির্ভরশীল স্বল্প আয়ের জনগোষ্ঠী বেকারত্ব ও ঊর্ধ্বমুখী দ্রব্যমূল্যের কারণে নানাভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়বে। এই পর্যায়ে নিত্যপ্রয়োজনীয়সহ ওষুধ-চিকিৎসা সরঞ্জামের সরবরাহে চরম ঘাটতিতে পড়ার সম্ভাবনাও প্রচুর। সেবাব্যবস্থাও ক্রমে দুর্বল হয়ে পড়বে। ব্যাপক প্রাণহানি ও দীর্ঘ সংকটের কারণে মানুষ উদ্বেগ, হতাশা, অসহিষ্ণুতাসহ নানা মানসিক বিকারে আক্রান্ত হতে পারে। এই পরিস্থিতিতে সরকার, প্রশাসন, সেবা প্রদানকারী ও জনতা মনোবল হারাতে থাকলে পরিস্থিতি প্রকট হয়ে ওঠার আশঙ্কা রয়েছে।

অন্যান্য সময় দেশীয় সংকট মোকাবিলায় বৈদেশিক সাহায্যের যে সুযোগ থাকে, বৈশ্বিক মাত্রার সংকটের কারণে তা না হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। অর্থলগ্নিকারীদের সাহায্যের সামর্থ্যও লোপ পেতে পারে। অর্থসংকটের পাশাপাশি চিকিৎসা সামগ্রীসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য ও খাদ্য উৎপাদন কমে নানা মাত্রার দুর্ভিক্ষের আশঙ্কায়ও প্রস্তুতি নিতে হবে। এক কথায় দেশ ও বিশ্ব পরিস্থিতি এক গভীর আবর্তে নিপতিত হলে সংকট এমন এক বহুমাত্রিক, তীব্র ও বৈশ্বিক পরিসরের হয়ে দাঁড়াতে পারে, যা করোনার মতোই হবে অভিনব—এক অনন্য, দুঃসহ, দুরতিক্রমণীয় অভিজ্ঞতা।

অধ্যাপক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম: সাবেক ডিন, সার্জারি অনুষদ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়