ভেজাল গুড়ের কারখানা

নাটোরের লালপুর উপজেলায় গড়ে উঠেছে শতাধিক ভেজাল গুড়ের কারখানা। এসব কারখানায় জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর রাসায়নিক হাইড্রোজ, ফিটকারি ও রং ব্যবহার করা হচ্ছে। গুড়ে ভেজাল মিশিয়ে তা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পাঠানো হচ্ছে। গত রোববারের প্রথম আলোর এ খবরে তাই আতঙ্কিত না হয়ে উপায় নেই।খাদ্যসামগ্রী তৈরির সময় জনস্বাস্থ্য বিষয়ে সর্বোচ্চ সতর্কতা থাকা দরকার। কিন্তু অধিক মুনাফার আশায় পণ্যকে আকর্ষণীয় হিসেবে উপস্থাপন করতে কিছু সংখ্যক অসাধু ব্যবসায়ী ক্ষতিকর রাসায়নিক উপাদান ব্যবহার করছেন জনস্বাস্থ্য ঝুঁকির বিষয়টি পুরোপুরি অগ্রাহ্য করে। তা ছাড়া যে পরিবেশে সাধারণের জন্য গুড় প্রস্তুত করা হয়, তা রীতিমতো আঁতকে ওঠার মতো। প্রথম আলোয় প্রকাশিত একটি ছবিই বলে দেয়, লালপুরে কতটা অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি হয় গুড়—একদিক খোলা একটি ঘরের ভেতর, যেখানে জ্বাল দেওয়া হচ্ছে গুড়, তার পাশেই স্তূপ করে রাখা আছে ময়লা। এমন পরিবেশে এবং ক্ষতিকর উপাদানে প্রস্তুত ভেজাল গুড় শুধু জনস্বাস্থ্যের সর্বনাশই নয়, ভোক্তার জন্য বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির কারণও হতে পারে। এ ধরনের গুড় খেলে কিডনি ও পাকস্থলীর নানা জটিল রোগ হতে পারে।সারা দেশের মানুষের কাছে গুড় অত্যন্ত আকর্ষণীয়। গ্রাম-শহর সর্বত্র গুড় দিয়ে তৈরি করা হয় নানা উপাদেয় খাবার। এর ভোক্তা সারা দেশের সাধারণ মানুষ। তাই যেসব প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি এ ধরনের দূষিত খাদ্যসামগ্রী উৎপাদন ও বাজারজাত করে জনস্বাস্থ্যের সর্বনাশ করছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের কোনো বিকল্প নেই। খাদ্যে বিষাক্ত রাসায়নিক উপাদান ব্যবহারের ক্ষতিকর দিকগুলো সম্পর্কেও সচেতনতা গড়ে তোলা দরকার। ভেজাল মেশানোর প্রবণতা রুখতে নিয়মিত ভেজালবিরোধী অভিযান পরিচালনা করা প্রয়োজন। প্রতিটি ভেজালবিরোধী অভিযান কিছু মাত্রায় অবস্থার উন্নতি ঘটায়।