সাংবাদিকের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা

প্রথম আলোর বাউফল উপজেলা প্রতিনিধি এ বি এম মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক হত্যা মামলা দায়ের করার ঘটনা কণ্ঠরোধের অপপ্রয়াস ছাড়া কিছু নয়। যখন একের পর এক মামলা করে, তাঁর ওপর শারীরিক নির্যাতন চালিয়েও সত্য প্রকাশ থেকে তাঁকে নিবৃত্ত করা যাচ্ছিল না, তখনই স্থানীয় স্বার্থান্বেষী মহল উদ্দেশ্যমূলকভাবে হত্যা মামলায় তাঁকে জড়িয়েছে। আমরা এর নিন্দা জানাই।

গত রোববার বাউফল পৌরসভার উদ্যোগে একটি তোরণ নির্মাণকে কেন্দ্র করে স্থানীয় আওয়ামী লীগের দুই পক্ষে সংঘর্ষ হয়। পৌরসভার মেয়র মো. জিয়াউল হকের অনুসারীরা তোরণটি নির্মাণ করতে গেলে তাঁর প্রতিপক্ষ দল বাধা দেয়। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হলে তাপস কুমার দাস নামের এক যুবলীগ কর্মী মারা যান।

আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের মধ্যে যখন সংঘর্ষ হয়, তখন মিজানুর রহমান অন্যান্য সাংবাদিকের সঙ্গে পেশাগত দায়িত্ব পালন করছিলেন। তাঁর পাঠানো সেই খবর প্রথম আলো অনলাইন সংস্করণে (ঈদের ছুটির কারণে মুদ্রিত সংস্করণ বন্ধ ছিল) প্রকাশিত হয়েছে। তাঁর পেশাগত দায়িত্ব পালনের ভিডিও ফুটেজও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে সংরক্ষিত আছে। তারপরও তাঁকে হত্যা মামলায় জড়ানো হয়েছে উদ্দেশ্যমূলকভাবে।

সাংবাদিক মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে এর আগে গণধর্ষণ, চাঁদাবাজি, অস্ত্র আইন, পুলিশকে মারধর, দ্রুত বিচার আইনে মামলাসহ ছয়টি বানোয়াট মামলা দায়ের করা হয়েছিল। একটি মামলায় তাঁর ওপর এমন নির্যাতন করা হয়েছিল যে দীর্ঘদিন তিনি হাঁটতে পারেননি। পরে পুলিশের তদন্তেই প্রমাণিত হয়, তিনি নির্দোষ। সেই মামলায় ন্যায়বিচার পাওয়ার জন্য তাঁকে উচ্চ আদালত পর্যন্ত যেতে হয়েছে। মামলা দিয়ে কেবল মিজানুর রহমানকেই হয়রানি করা হয়নি, তাঁর স্ত্রীকেও শাস্তিমূলক বদলি করা হয়েছিল, যিনি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক।

আমরা মনে করি, সংবাদমাধ্যমের কণ্ঠরোধের উদ্দেশ্যেই সাংবাদিক মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে এই মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। ইতিমধ্যে সাংবাদিকদের বিভিন্ন সংগঠন ও প্রেসক্লাব মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে। তাদের দাবির সঙ্গে কণ্ঠ মিলিয়ে আমরা বলতে চাই, অবিলম্বে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করা হোক। একই সঙ্গে তিনি এলাকায় থেকে নির্বিঘ্নে ও নির্ভয়ে যাতে পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে পারেন, সেই নিশ্চয়তাও দিতে হবে। এ ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ দাবি করছি।