হাসপাতালগুলো ধারণক্ষমতা হারালে কী হবে?

করোনাভাইরাস। ছবি: রয়টার্স
করোনাভাইরাস। ছবি: রয়টার্স

পুরো বিশ্বকে থমকে দেওয়া করোনাভাইরাসের কবল থেকে বাংলাদেশের জনগণকে রক্ষা করার কৌশল তৈরি করতে নীতিনির্ধারকেরা রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছেন। রাজধানী ঢাকার হাসপাতালগুলোতে রোগীর সংখ্যা তাদের ধারণক্ষমতার খুব কাছাকাছি চলে এসেছে। খুব অল্প সময়ের মধ্যে রোগীর সংখ্যা ধারণক্ষমতা ছাড়িয়ে যাবে। অন্যান্য বিভাগীয় শহরেও একই অবস্থা হতে খুব একটা দেরি নেই। বর্তমানে শুধু তীব্র শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত রোগীদেরই করোনার জন্য নির্ধারিত হাসপাতালে ভর্তি করা হচ্ছে। সরকারি হাসপাতালগুলোর মধ্যে শুধু ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে এবং মুগদা জেনারেল হাসপাতালে কেন্দ্রীয় অক্সিজেন সরবরাহের ব্যবস্থা রয়েছে। অন্য সরকারি হাসপাতালগুলোর কেন্দ্রীয় অক্সিজেনের ব্যবস্থা এখনো পুরোপুরি চালু হয়নি। পজিটিভ প্রেশার অক্সিজেনের যে সরবরাহ কোভিড-১৯ রোগীদের প্রয়োজন হয়, সেটির ব্যবস্থা এখন খুব কম জায়গাতে আছে। এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের শহর ও গ্রাম দুই অঞ্চলেই কোভিড-১৯ রোগীর চিকিৎসা কীভাবে করা যায়, সে বিষয় নিয়ে কিছু কার্যকর পদক্ষেপের পরামর্শ সরকার এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সংস্থা গ্রহণ করতে পারে।

নীতিনির্ধারণের আগে আগে আমাদের কিছু প্রাসঙ্গিক তথ্য মাথায় রাখতে হবে। কোভিড-১৯ পজিটিভ রোগীদের ৮০ শতাংশের ক্ষেত্রে রোগের লক্ষণ অতি সামান্য, তাই এদের হাসপাতালে নেওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। বাকি ২০ শতাংশ রোগীর লক্ষণ বিপজ্জনক হয়ে থাকে এবং এদের হাসপাতালে ভর্তি করার প্রয়োজন হয়। এই ২০ শতাংশ রোগীর ৫ শতাংশের অবস্থা মারাত্মক হয়ে থাকে এবং এদের আইসিইউ এবং ভেন্টিলেশনের সহযোগিতা দিতে হয়। বাংলাদেশে করোনাভাইরাস শনাক্ত করার সরঞ্জাম সীমিত হওয়ায় মোট জনসংখ্যার খুব ছোট অংশকে পরীক্ষা করা হচ্ছে এবং তাদের প্রায় বেশির ভাগ রোগীরই হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসার দরকার হচ্ছে। সীমিত সম্পদের অর্থনীতির দেশের জায়গা থেকে বাংলাদেশের হাসপাতাল ব্যবস্থাপনায় যে পদক্ষেপগুলো নিলে রোগীর সর্বাধিক সেবা এবং মৃত্যুর হার নিচু রাখা নিশ্চিত করা যায়, সেই প্রস্তাবগুলো উল্লেখ করা হলো।

শহর এলাকার জন্য প্রস্তাব
যেসব শহুরে এলাকায়, যেমন ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহে প্রচুরসংখ্যক কোভিড-১৯ পজিটিভ রোগী শনাক্ত হচ্ছে, সেসব জায়গায় এই পদক্ষেপগুলো নেওয়া যেতে পারে:
১। শহরের দরিদ্র এলাকায় গরিব জনগোষ্ঠীর মধ্যে যাদের হালকা (mild) লক্ষণ রয়েছে কিন্তু শারীরিক দূরত্ব (isolation) বজায় রাখা সম্ভব নয়, তাদের জন্য অস্থায়ীভাবে থাকার জায়গার (নিকটস্থ স্কুল, কলেজ, কমিউনিটি সেন্টার প্রভৃতি) ব্যবস্থা করা যেতে পারে, যেখানে সঠিক উপায়ে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখার ব্যবস্থা থাকবে।

২। যাদের লক্ষণ মারাত্মক (হাসপাতালে ভর্তি ও অক্সিজেন দুটোই প্রয়োজন) তাদের চিকিৎসার জন্য নির্ধারিত হাসপাতালের সংখ্যা বাড়াতে হবে এবং রোগীদের জন্য কেন্দ্রীয় অক্সিজেন সরবরাহের ব্যবস্থা করতে হবে। কাজটি করার জন্য একটি দ্রুত এবং স্বল্প খরচের উপায় হচ্ছে কেন্দ্রীয়ভাবে অক্সিজেন সরবরাহের ব্যবস্থা আছে এমন বেসরকারি হাসপাতালগুলোর সাহায্য নেওয়া। বেসরকারি হাসপাতালগুলোর অব্যবহৃত কেবিনগুলোতে সন্দেহভাজন রোগী যাদের অক্সিজেন প্রয়োজন, কিন্তু কোভিড-১৯-এর পরীক্ষার ফল পাওয়া যায়নি, তাদের সেবা দেওয়া যেতে পারে।

গ্রাম এলাকার জন্য প্রস্তাবিত নীতিমালা
বাংলাদেশের প্রতিটি জেলাতেই ইতিমধ্যে কোভিড-১৯-এ আক্রান্ত রোগী পাওয়া গেছে। ঈদের পরের কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই গ্রাম এলাকাতে রোগীদের ভিড় দেখা দেবে। এ ক্ষেত্রে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসা কোভিড লক্ষণযুক্ত সব রোগীকেই ভর্তি করতে হবে এবং সংক্রমণ নিশ্চিত হওয়ার জন্য পরীক্ষা করতে হবে। সংক্রমণ প্রতিরোধে গ্রামের হাসপাতালগুলোর সর্বোচ্চ ধারণক্ষমতা পার না হওয়া পর্যন্ত রোগীদের ঘরে ফেরত পাঠানো ঠিক হবে না। কারণ তাতে সংক্রমণ ছড়ানোর ঝুঁকি বেশি এবং রোগের সেবাদান সম্ভব নয়। স্কুল, কমিউনিটি সেন্টার (যেমন চট্টগ্রাম ফিল্ড হাসপাতাল) প্রভৃতি জায়গায় অস্থায়ী চিকিৎসাকেন্দ্র গড়ে তুলতে হবে যাতে হাসপাতালের ধারণক্ষমতা পেরিয়ে গেলে স্বাস্থ্যব্যবস্থা নতুন রোগী সামাল দিতে প্রস্তুত থাকে। হালকা শ্বাসকষ্টের লক্ষণযুক্ত রোগীদের বহনযোগ্য অক্সিজেন দিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেই চিকিৎসা করা যেতে পারে। যাদের আরও উন্নত চিকিৎসা প্রয়োজন হবে, তাদের নিকটস্থ জেলা শহরের কোভিডের জন্য নির্দিষ্ট হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া যেতে পারে।

জনসংখ্যা এবং সম্ভাব্য কোভিড-১৯-এ আক্রান্ত রোগীর সংখ্যার অনুপাতের ওপর ভিত্তি করে প্রতিটি জেলা শহরের জন্য নিজস্ব কোভিড হাসপাতাল চিহ্নিত করে দিতে হবে। ক্ষেত্রবিশেষে দু-তিনটি সংলগ্ন জেলার জন্য একটি বড় হাসপাতাল কোভিড চিকিৎসার জন্য বরাদ্দ করা যেতে পারে। অক্সিজেন সরবরাহ এবং জরুরি (ICU) চিকিৎসাসেবার জন্য সরকার প্রয়োজনবোধে জেলা পর্যায়েও প্রাইভেট হাসপাতালগুলোর সঙ্গে অংশীদার হতে পারে। একই সঙ্গে এই দুটি সেবা সঠিকভাবে দেওয়ার জন্য অপ্রশিক্ষিত নার্সদের প্রশিক্ষণ দিতে হবে। যেহেতু এ ধরনের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নার্স/সেবাদানকারীর সংখ্যা অপ্রতুল, কিছু কিছু ক্ষেত্রে অনলাইনেও এ ধরনের প্রশিক্ষণ দিয়ে ঘাটতি পূরণ করা যেতে পারে।

কোভিড-১৯-এ আক্রান্ত ও আক্রান্ত নয়, এমন রোগীদের একই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিরাপদে চিকিৎসা দেওয়ার নীতিমালা
১। কোভিড সংকটের সময়কালে প্রতিটি হাসপাতালেই রোগীদের শারীরিক অবস্থা বিবেচনা করে অগ্রাধিকারমূলক চিকিৎসার ব্যবস্থা (triage) নিশ্চিত করতে হবে। শহরভিত্তিক হাসপাতালগুলোর প্রবেশমুখে এ প্রক্রিয়ার জন্য একটি আলাদা স্থান নির্ধারণ করতে হবে, যেখানে চিকিৎসকেরা হাসপাতালে আসা রোগীদের অগ্রাধিকার ঠিক করবেন। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মূল প্রবেশদ্বারের সামনে খোলা জায়গাটি এ কাজে ব্যবহার করা যেতে পারে। স্বল্প দামের তাঁবু বা স্থানীয় কাঁচামালের তৈরি ঘর এ ক্ষেত্রে চমৎকার বিকল্প হতে পারে, যা স্থানীয় পুলিশ/আনসার বাহিনীর সহায়তায় তৈরি করে নেওয়া যেতে পারে। আদর্শ অবস্থায় একটি হাসপাতালের প্রতিটি বিভাগ কোভিড এবং নন-কোভিড—এই দুই ভাগে বিভক্ত থাকবে এবং এ দুটি ভাগের মাঝে কার্ডবোর্ড/কাচের দেয়াল থাকবে।

২। উল্লিখিত অগ্রাধিকার নির্ণয়ের জায়গায় ‘অতি জরুরি ভিত্তিতে সেবা প্রয়োজন (মারাত্মক রোগাক্রান্ত/আহত)’ বা ‘খুব দ্রুত অবস্থার অবনতি হচ্ছে’—এই দুটো মাপকাঠি অনুযায়ী হাসপাতালে আসা রোগীদের পরীক্ষা করতে হবে। যারা এই দুই ক্যাটাগরিতে পড়বে, তাদেরকে জরুরি ব্যবস্থাপনার জন্য পাঠানো হবে, কিন্তু সেই সঙ্গে কোভিড-১৯ নির্ণয়ের ফলাফল নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত অন্য রোগীদের সঙ্গে এক জায়গায় রাখা যাবে না। অন্যদের জ্বর, কাশি, শ্বাসকষ্ট এবং কোভিড-১৯-এর অন্যান্য লক্ষণের ওপর পরীক্ষা করতে হবে। যাদের এসব লক্ষণ আছে, তাদের ক্লিনিক্যাল মাপকাঠি অনুযায়ী উচ্চ, মাঝারি ও নিম্ন ঝুঁকি অনুযায়ী চিহ্নিত করতে হবে। নিম্ন ঝুঁকির রোগীদের নিজগৃহে অথবা আগে উল্লেখ করা অস্থায়ী চিকিৎসাকেন্দ্রে পাঠানো যেতে পারে। মধ্য ও উচ্চ ঝুঁকির রোগীদের বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা অনুযায়ী চিকিৎসাসেবা দেওয়া যেতে পারে। যদি এসব লক্ষণ না থাকে, সে ক্ষেত্রে তাদের অন্য রোগীদের সঙ্গে চিকিৎসা দেওয়া যেতে পারে।

৩। সব হাসপাতালকে সুস্পষ্টভাবে স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীদের জন্য নির্দেশনা এবং রোগীদের জন্য দৃশ্যমান স্বাস্থ্য নির্দেশিকা (সাইনবোর্ড, পোস্টার প্রভৃতি) সরবরাহ করতে হবে। সব স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীকে সংক্রমণ প্রতিরোধ ও প্রতিকারকারী দ্রব্য (IPC Materials) সরবরাহ করতে হবে এবং এগুলো ব্যবহারের সঠিক প্রশিক্ষণ দিতে হবে। পরিধেয় কাপড় বদলানোর জন্য প্রাইভেট ঘর এবং ব্যবহৃত জিনিসপত্র ফেলে দেওয়ার জন্য বর্জ্য ব্যবস্থাপনার সুবিধাও নিশ্চিত করতে হবে।

৪। কোভিড-১৯-এ আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ইতিমধ্যে আমাদের স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার ধারণক্ষমতা অতিক্রম করেছে। দেশের সীমিতসংখ্যক চিকিৎসাকর্মীকে সাহায্য করার জন্য পর্যায়ক্রমে আমাদের স্বেচ্ছাসেবীদের ওপর নির্ভর করতে হবে। হাসপাতালের যেসব সহায়তামূলক কাজ সরাসরি রোগীর চিকিৎসার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত নয়, এসব কাজে স্বেচ্ছাসেবীদের সহায়তা নেওয়া যেতে পারে।

৫। স্বাস্থ্যসেবা বাজেট নির্ধারণের সময় এ প্রবন্ধের শুরুতে বলা ২০ শতাংশ হাসপাতালে ভর্তিযোগ্য রোগী এবং তাদের মধ্যে ৫ শতাংশ জরুরি অবস্থার রোগীদের কথা মাথায় রাখা যেতে পারে। ভেন্টিলেশন-সংক্রান্ত আলোচনায় যাওয়ার আগে সবার জন্য অক্সিজেন সাপ্লাই এবং হাসপাতালগুলোতে পর্যাপ্ত সংখ্যায় রক্তে অক্সিজেন পরিমাপ করার যন্ত্র (pulse oxymeter) নিশ্চিত করতে হবে। এ ছাড়া কোভিড-১৯ শনাক্তকরণ পরীক্ষা অনেক বাড়াতে পারলে রোগীদের শনাক্তকরণই নয়, বরং গোটা জনগোষ্ঠীতে রোগ সংক্রমণ প্রতিরোধেও সহায়তা করবে, এটাও বিবেচনায় রাখা দরকার।

সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালের সমন্বয়
প্রতিটি জেলায় এই সমন্বয় স্থাপন করার জন্য সরকার জেলা প্রশাসকের সার্বিক তত্ত্বাবধানে, সিভিল সার্জনের নেতৃত্বে এবং পুলিশ সুপারের সহায়তাক্রমে একটি কমিটি তৈরি করে দিতে পারে। এ কমিটির কাজ হবে দ্রুততম সময়ে জেলার সরকারি হাসপাতালের সঙ্গে যাচাই-বাছাইকৃত বেসরকারি হাসপাতালগুলোর সমন্বয়সাধন। সিভিল সার্জন এ ক্ষেত্রে চিকিৎসা সুবিধার টেকনিক্যাল ও ম্যানেজমেন্ট সংক্রান্ত বিষয়গুলো দেখবেন, জেলা প্রশাসক আমলাতান্ত্রিক সহায়তা নিশ্চিত করবেন এবং পুলিশ সুপার নিরাপত্তা প্রদানসহ বিশৃঙ্খলা দমনে আইনি ব্যবস্থা নেবেন। উপজেলা পর্যায়ে সমন্বয় কমিটিতে সহকারী সার্জন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং সার্কেল সহকারী পুলিশ সুপার থাকবেন। তাঁরা প্রয়োজন অনুসারে জেলা কমিটিতে বা সরাসরি নিজ নিজ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছে রিপোর্ট করবেন।

শেষ কথা হিসেবে বলা যায়, কোভিড-১৯ ভাইরাসের কারণে বাংলাদেশ সম্ভবত গত কয়েক দশকের সবচেয়ে ভয়াবহ বিপদের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এই চ্যালেঞ্জ সফলভাবে মোকাবিলা করতে হলে আমাদের শুরুতেই কিছু সুচিন্তিত, সুনির্দিষ্ট এবং সুপরিকল্পিত পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন। এ প্রবন্ধের লেখকেরা মনে করেন, উল্লিখিত ধাপগুলো বিবেচনায় আনার মাধ্যমে নীতিনির্ধারকগণ এমনই কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারবেন।

আয়েশা সানিয়া: রিসার্চ সায়েন্টিস্ট (এপিডেমিওলোজিস্ট), কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটি,যুক্তরাষ্ট্র
তৌফিক জোয়ারদার: এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর, পাবলিক হেলথ ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ
মহিব নীরব: ফাউন্ডার, প্ল্যাটফর্ম, বাংলাদেশ
আহমেদ সামি আল হাসান: অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর (সার্জারি), কুর্মিটোলা জেনারেল হসপিটাল, বাংলাদেশ
মাসরুফ হোসেন: জন এফ কেনেডি স্কুল অব গভর্নমেন্ট, হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি, যুক্তরাষ্ট্র