করোনা-পরবর্তী নগর কেমন হওয়া উচিত?

ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

করোনাভাইরাস মহামারির তীব্রতা সবচেয়ে বেশি অনুভূত হয়েছে ঘনবসতির নগরে। নিউইয়র্ক, লন্ডন, মিলান, মাদ্রিদ, বার্সেলোনা, দিল্লি, ঢাকা ও চট্টগ্রামের উদাহরণ দেওয়া যেতে পারে। কোভিড-১৯-পরবর্তী নগরায়ণের ধরন কেমন হওয়া উচিত, তা নিয়ে সারা বিশ্বে আলোচনা চলছে। যেসব প্রশ্ন এই আলোচনার চালিকা শক্তি হিসেবে কাজ করছে, সেগুলো এ রকম: অতীতে মহামারির পর নগরব্যবস্থায় কী ধরনের পরিবর্তন এসেছিল, অর্থাৎ ইতিহাস থেকে কী শেখা যেতে পারে? সামাজিক দূরত্বের প্রয়োজন কীভাবে জনএলাকার ধরনকে পরিবর্তন করতে পারে? নগরের যেসব জায়গায় মানুষের ভিড় বেশি, যেমন গণপরিবহন ব্যবস্থা, স্কুল-কলেজ, বাজার, আর স্টেডিয়াম—সেখানে নগর পরিকল্পনার মাধ্যমে মহামারি সংক্রমণের ঝুঁকি কীভাবে কমানো যায়? পরিকল্পনার মাধ্যমে কীভাবে নগরের জনস্বাস্থ্য সংরক্ষণ আর পরিবেশ উন্নত করা যায়? নগর আর প্রকৃতির সুষম সমন্বয়ের মাধ্যমে কীভাবে জনস্বাস্থ্য উন্নত করা যায়? নগরের তথ্যভান্ডারকে কাজে লাগিয়ে সব অর্থনৈতিক শ্রেণিকে উন্নত, দক্ষ, আর ন্যায্য স্বাস্থ্যসেবা কীভাবে দেওয়া যেতে পারে? পরিকল্পনার মাধ্যমে কী ধরনের নগরজীবন উৎসাহিত করা যায়, যাতে জনসাধারণ শুধু স্বাস্থ্য সচেতনই হবে না, বর্তমান স্বাস্থ্য ঝুঁকিগুলো কমিয়ে আনতে পারবে? করোনাভাইরাস নগরের শ্রেণিবৈষম্য আর সামাজিক অবিচারকে শুধু ফুটিয়েই তোলেনি বরং আরও প্রকট করে তুলেছে। নগর পরিকল্পনা কি এই বৈষম্যের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারে? 

মহামারি প্রস্তুতি আর প্রতিরোধে নগর পরিকল্পনার কোনো শাশ্বত সূত্র নেই অবশ্যই। কারণ, প্রতিটি নগরীর অর্থনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক, প্রশাসনিক, আর জনস্বাস্থ্যের চরিত্র আলাদা। যেমন, নিউইয়র্ক আর ঢাকার মহামারি ব্যবস্থাপনার ধরন হবে আলাদা। এ দুটি শহরে ‘সামাজিক দূরত্বের’ অর্থ মানুষ কীভাবে অনুবাদ করছে, সেটা একেবারেই ভিন্ন হতে পারে। ঢাকার মতো ঠাসাঠাসির শহরে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ অনুযায়ী সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার জায়গা কই? ঢাকার টেম্পোতে অথবা কড়াইল বস্তিতে সামাজিক দূরত্বের ধারণাকে মনে হতে পারে একধরনের নির্মম পরিহাস। ফুটপাত যেখানে চার ফুট প্রশস্ত, সেখানে পথচারীরা প্রস্তাবিত ছয় ফুট সামাজিক দূরত্ব মানবে কীভাবে?
তারপরও অনেক চিরন্তন ব্যাপার আছে, যেগুলো থেকে সব নগরই শিখতে পারে। যেমন, ইতিহাস থেকে অনেক কিছু শেখা যেতে পারে। অতীতে দেখা গেছে অনেক মহামারি বহুমাত্রিক সৃষ্টিশীলতার জন্ম দিয়েছে। ঊনবিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি শিল্পবিপ্লবের প্রভাব পশ্চিমা নগরগুলোর ওপর ফুটে ওঠে তাদের কলকারখানার দরিদ্র শ্রমিকদের অস্বাস্থ্যকর, আলো-বাতাসবিহীন আর পুঁতিগন্ধময় বাসস্থানের মধ্য দিয়ে। মহামারি, যেমন কলেরা, লেগেই ছিল। লন্ডনের শ্রমিক আবাসনের নিদারুণ অবস্থা নিয়ে একজন লেখক ১৮৮৩ সালে লিখেছিলেন: ‘টেনিমেন্ট হাউজিংয়ের স্যাঁতসেঁতে ঘরগুলোর প্রতিটি কক্ষে থাকত একটি বা দুটি পরিবার। একবার একজন স্যানিটারি পরিদর্শক ভূগর্ভস্থ একটি কক্ষে দেখতে পান একজন মা, বাবা, তিন সন্তান, আর চারটা শূকর।’ অলিভার টুইস্ট (১৮৩৭-৩৮) শিরোনামের উপন্যাসে, ‘গরিবের মুখপাত্র’ হিসেবে খ্যাত চার্লস ডিকেন্স কারখানার অতিদরিদ্র শ্রমজীবীদের নিদারুণ দুর্দশার চিত্র ফুটিয়ে তুলেছেন।
এই নগর দুরবস্থা আর কলেরার উপদ্রব মোকাবিলা করতেই লন্ডন, প্যারিস আর নিউইয়র্কের মতো শহরগুলো দরিদ্রদের আবাসনব্যবস্থা আর নগর পয়োনিষ্কাশন অবকাঠামোর আধুনিকায়ন করে। এভাবেই নগর স্যানিটেশনের আধুনিক যুগ শুরু হয়। ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলনের তুঙ্গে থাকার সময় গান্ধী বলেছিলেন, ‘স্যানিটেশন রাজনৈতিক স্বাধীনতার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ।’ বিংশ শতাব্দীর শুরুতে আধুনিক নগর পরিকল্পনার যাত্রা শুরু হয় জনস্বাস্থ্যের মূল ভিত্তি স্যানিটেশনকে ঘিরে। তিন ধরনের পেশাজীবীর সম্মিলিত অবদান নগর পরিকল্পনাকে এগিয়ে নিয়ে যায়। তাঁরা হলেন স্থপতি, জনস্বাস্থ্যকর্মী, আর সমাজকর্মী। স্থপতিরা গৃহায়ণ আর ভূমি ব্যবহার, জনস্বাস্থ্যকর্মীরা নগরের স্বাস্থ্যসম্মত অবকাঠামো আর সমাজকর্মীরা দরিদ্র শ্রমজীবী মানুষদের সামাজিক ক্ষমতায়নে ভূমিকা রাখেন। এ ধরনের কাজ থেকেই নগর পরিকল্পনার নৈতিক অর্থনীতি (মোরাল ইকোনমি) তৈরি হয়েছে। যার মানে হচ্ছে উন্নয়নের মূল চালিকা শক্তি হবে সামাজিক ন্যায়বিচার আর জনগণের বৃহত্তর স্বার্থ, বাজারকেন্দ্রিক অর্থনীতি নয়।
একবিংশ শতাব্দীতে, টেকসই নগর পরিকল্পনার ধারণায় এসব দর্শন মোটামুটি শাশ্বতই ধরা যেতে পারে। পরিবর্তন যা হয়েছে তা হলো, প্রতিটি নগরীর নিজস্ব ভৌগোলিক, সামাজিক আর অর্থনৈতিক চরিত্র বুঝে পরিকল্পনা করার প্রয়োজনীয়তা। বাংলাদেশে করোনা-পরবর্তী নগরায়ণের চিন্তা করতে হবে এখনই, জনস্বাস্থ্যকে ঘিরে। কিন্তু আমরা জনস্বাস্থ্যকে খুব সংকীর্ণভাবে, সরলীকরণ করে সংজ্ঞায়িত করি। আধুনিক, ইনক্লুসিভ জনস্বাস্থ্য মানে হচ্ছে, জনগণের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য সংরক্ষণ, তাদের সাংস্কৃতিক আর নান্দনিক চাহিদা পূরণ, নির্ভয়ে জীবনযাপনের নিশ্চয়তা এবং নগরসেবা, বিশেষ করে স্বাস্থ্যসেবার বৈষম্যহীন বণ্টন। জনস্বাস্থ্যকে যখন এভাবে দেখব, তখন হাসপাতাল, ফুটপাত, নগর বৃক্ষ, খেলার মাঠ, পরিষ্কার নদী আর কাঁচাবাজার, সবই জনস্বাস্থ্যের অবকাঠামো হিসেবে বিবেচিত হবে। (বর্তমানে আমেরিকায় বর্ণবৈষম্যকে জনস্বাস্থ্যের হুমকি হিসেবে বলা হচ্ছে)।

বাংলাদেশের মহামারি-পরবর্তী নগরায়ণ ভাবনা তিনটি বিষয়কে ঘিরে শুরু হতে পারে: ভূমি ব্যবহার, নগরে জনচলাচল ও সামাজিক ন্যায়পরায়ণতা (সোশ্যাল ইক্যুইটি)। সংক্ষেপে আলোচনা করা যাক। মহামারি-প্রতিরোধক ভূমি ব্যবহারে শহরের কাঁচাবাজারগুলোর বর্তমান অবস্থান পুনর্মূল্যায়ন করা যেতে পারে। কাঁচাবাজারে আমরা শুধু সস্তায় সবজি, মাছ, মাংস, মসলা কিনতেই যাই না, এখানে মহল্লার মানুষদের সঙ্গে দেখা হয়। এর একটা সামাজিক মূল্য আছে। কিন্তু চীনের উহানের ‘ওয়েট মার্কেট’ বা কাঁচাবাজার থেকে করোনাভাইরাসের কথিত উৎপত্তির পর থেকে ঘন জনবসতির ভেতরে কাঁচাবাজারের অবস্থান কতটুকু নিরাপদ, তা নিয়ে অনেক বিতর্ক চলছে। ঢাকায় নিউমার্কেট বা মোহাম্মদপুরের কাঁচাবাজারের হইহল্লা ভালো লাগারই কথা, কিন্তু ভাবতে হবে এখানকার অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে কাঁচা মাংস, মাছিতে ভরা মাছের সমারোহ, ধুলাবালির নিচে সবজি, আর গাদাগাদি ক্রেতা, এসব জনস্বাস্থ্যের দৃষ্টিভঙ্গিতে কতটুকু নিরাপদ। তাহলে প্রশ্ন হচ্ছে, এগুলো নগর থেকে কি কিছুটা দূরে সরিয়ে নিতে হবে, নাকি স্বাস্থ্যবিধি মেনে নতুন করে এদের পরিকল্পনা করতে হবে তাদের বর্তমান অবস্থানেই? কাঁচাবাজার কিন্তু শুধু উন্নয়নশীল দেশের সমস্যা নয়। উহান বিতর্কের পরে নিউইয়র্ক শহরের ৮০টি কাঁচাবাজার সরিয়ে নিতে আন্দোলন শুরু হয়েছে। এ ব্যাপারে আমাদেরও ভাবতে হবে।
মহামারি প্রতিরোধে নগরে মানুষজন কীভাবে চলাচল করবে, সেটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। যেহেতু গণপরিবহনে মানুষের ভিড়, সেখানে কী ধরনের নীতিমালা প্রয়োজন? মুখের মাস্ক কি আইন করে বাধ্যতামূলক করা উচিত? সামাজিক দূরত্বের প্রয়োজনীয়তাকে মাথায় রেখে এখনই মেট্রোরেলের অভ্যন্তরীণ নকশার পুনর্বিবেচনা করতে হবে, গণপরিবহনের বিপরীতে ব্যক্তিগত গাড়ির ব্যবহারকে উৎসাহিত না করে হেঁটে কাজে যাওয়া আর সাইকেলে চলাচলকে পরিকল্পনার আওতায় আনার একটা বলিষ্ঠ পদক্ষেপ নিতে হবে। সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, বরিশাল, যশোর, খুলনা, সিলেটকে কি দক্ষিণ এশিয়ার আমস্টার্ডামের আদলে গড়ে তোলা যায় না?
মহামারি রোধে জনস্বাস্থ্য সংরক্ষণের লক্ষ্যে নগরের ‘সফট ইনফ্রাস্ট্রাকচার’, যেমন ফুটপাতকে গুরুত্ব দিতে হবে। নিয়মিত হেঁটে কাজে, বাজারে বা স্কুলে গেলে ডায়াবেটিস কমে, শরীর সচল থাকার ফলে হৃদ্‌যন্ত্র ভালো থাকে, অনেক পূর্ববর্তী ‘মেডিকেল কন্ডিশন’ কমে যায়। গবেষণা দেখিয়েছে, করোনায় আক্রান্তদের মধ্যে যাঁদের আগে স্বাস্থ্যঝুঁকি ছিল, তাঁরা বেশি মারা যাচ্ছেন। নগর পরিকল্পনার মাধ্যমে হাঁটার সংস্কৃতি তৈরি করে স্বাস্থ্যঝুঁকি কমানো যায়। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, আমাদের বুর্জোয়া মধ্যবিত্ত সংস্কৃতিতে সাধারণত রাস্তায় হাঁটাকে সামাজিকভাবে নিচু চোখে দেখা হয়। ফুটপাতকে জনস্বাস্থ্যের অবকাঠামো হিসেবে নতুন করে পরিকল্পনা করে মধ্যবিত্তের এই অযৌক্তিক মানসিকতাকে পরিবর্তন করা সম্ভব হতে পারে।
মহামারি-পরবর্তী নগর পরিকল্পনার অন্যতম বিষয় হতে হবে বৃহত্তর জনস্বাস্থ্য অবকাঠামো কীভাবে নগরের সামাজিক ন্যায়বিচারের ধারণার সঙ্গে একত্রীভূত হচ্ছে। বিভিন্ন দেশে আমরা দেখতে পেয়েছি, নগর দরিদ্ররাই করোনার মৃত্যুহারে এগিয়ে। নিউইয়র্ক শহরের সবচেয়ে দরিদ্র বরো ব্রংক্সের কথা ধরুন। ব্রংক্সের দারিদ্র্যের হার ২৮ দশমিক ৪, যেখানে নিউইয়র্ক শহরের অন্যান্য বরোর হার ১৮ দশমিক ৪। ব্রংক্সের জনসংখ্যার ৩৭ শতাংশ অভিবাসী। বার্ষিক গড় পারিবারিক উপার্জন মাত্র ৩৮ হাজার ডলার, যা অন্যান্য বরোর তুলনায় অনেক কম। ব্রংক্সের স্বাস্থ্যব্যবস্থা সম্পর্কে এখানকার নিম্নবিত্তের মানুষদের অনুভূতি এ রকম: ‘বস্তিবাসীর জন্য স্বাস্থ্যসেবা মানে অনেক লম্বা লাইন, নিজেদের মনে হয় পরিত্যক্ত কুকুর।’ অন্যান্য বরো থেকে এখানে দ্বিগুণ হারে করোনায় আক্রান্ত রোগী মারা গেছে। ঢাকা-চট্টগ্রামে আমরা প্রতিদিন দেখতে পাচ্ছি, হাসপাতালের সামনে দরিদ্র করোনা রোগী বিনা চিকিৎসায় ফুটপাতে মারা যাচ্ছে। পাশে নির্বাক, নিস্তব্ধ পরিবারের সদস্য। এই মহামারি দেখিয়েছে, আমাদের সমাজ আর শহর কত অমানবিকভাবে শ্রেণিবিভক্ত। পশ্চিমা দেশগুলোরও একই অবস্থা। বিশেষ করে আমেরিকাতে। মহামারি আর বর্ণবৈষম্য, দুটো মিলে অনেককেই ভাবাচ্ছে এই ধনী দেশটার মৌলিক জন্মত্রুটি নিয়ে।
দুর্যোগের সময়ে যে শহরে স্বাস্থ্যসেবা দামি, উচ্চবিত্তকেন্দ্রিক ব্যবসায়িক পণ্যে পরিণত হয়, সেই শহর কখনো মানবিক হতে পারে না, অনুপ্রাণিত করতে পারে না কাউকেই, কখনোই। বৃহত্তর জনস্বাস্থ্য আর জনস্বার্থকে পদদলিত করে কখনোই সার্বিক মানব উন্নয়ন হবে না, কখনো হয়নি। কৃত্রিম চাকচিক্য, উড়ালসড়ক, আর ১ শতাংশকেন্দ্রিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন মহামারির সময় তাসের বাড়ির মতোই ধসে পড়ে। এবারের বাজেটে স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে জিডিপির শতকরা ১ ভাগের একটু বেশি (ভারতের অবস্থাও আমাদের মতো; নরওয়ের স্বাস্থ্য ব্যয় শতকরা ১০ ভাগের কাছাকাছি)। সবার প্রবেশাধিকার আছে এমন একটি হাসপাতালের মূল্য একটা উড়ালসড়কের চেয়ে কোনো অংশে কম নয়। এভাবে পরিকল্পনা করা হয় না বলেই আজকের মহামারির সময়ে ধনী আর গরিবের মধ্যে অক্সিজেন হয়ে পড়েছে হিমালয়ের মতো বাধা। পুরোনো ব্যবস্থায় ফিরে না যাওয়ার সাহস এবার দেখাতেই হবে।

*আদনান জিল্লুর মোর্শেদ: স্থপতি, স্থাপত্য ইতিহাসবিদ, নগরবিদ এবং ওয়াশিংটন ডিসিতে অধ্যাপক। ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর ইনক্লুসিভ আর্কিটেকচার অ্যান্ড আরবানিজম-এর নির্বাহী পরিচালক।
[email protected]