কুলাউড়ার তিন সড়ক

প্রথম আলোর খবর অনুযায়ী, মৌলভীবাজারের কুলাউড়া-পৃথিমপাশা ও রবিরবাজার-টিলাগাঁও বাজার সড়ক এবং জুড়ী উপজেলার জুড়ী-বটুলি শুল্ক স্টেশন সড়কের মেরামতকাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল গত ৩০ জুন। অথচ কাজ হয়েছে মাত্র ৪০ শতাংশ। অন্যদিকে জুড়ী-বটুলি শুল্ক স্টেশন সড়কের কাজ হয়েছে ৩০ শতাংশ। যদিও এটি শেষ হওয়ার কথা আগামী ৩১ আগস্ট।

 কুলাউড়া পৌর শহরের চৌমোহনা থেকে উপজেলার পৃথিমপাশা ইউনিয়নের ঝিলেরপাড় পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার এবং রবিরবাজার থেকে টিলাগাঁও ইউনিয়নের টিলাগাঁও বাজার পর্যন্ত চার কিলোমিটার সড়কই দীর্ঘদিন ধরে ভাঙাচোরা অবস্থায় ছিল। এ জন্য সড়ক প্রশস্ত ও মজবুতকরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। যৌথভাবে এ কাজ পায় ‘ওয়াহিদ কনস্ট্রাকশন’ ও ‘স্পেকট্রা ইন্টারন্যাশনাল’ নামের দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

সওজ সূত্র জানায়, উল্লিখিত তিনটি সড়কে প্রতিদিন লক্ষাধিক মানুষ যাতায়াত করে থাকে। এ ছাড়া বটুলি শুল্ক স্টেশন দিয়ে আমদানি-রপ্তানি হওয়া বিভিন্ন ধরনের পণ্যবাহী যানবাহন চলাচল করে। এ রকম গুরুত্বপূর্ণ তিনটি সড়ক সংস্কারের কাজ অসমাপ্ত থাকায় এলাকাবাসীর দুর্ভোগও কমছে না। কাজ দ্রুত শেষ করার দাবিতে গত জানুয়ারি মাসে তঁারা মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন। কিন্তু তাতেও কর্তৃপক্ষের ঘুম ভাঙেনি।

কাজে ধীরগতির জন্য এখন সওজ কর্তৃপক্ষ ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান করোনার অজুহাত দিচ্ছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বলেছে, সড়ক মেরামতের জন্য যে পাথর প্রয়োজন, সেটি আমদানি বন্ধ আছে। পাথরের আমদানি বন্ধ থাকলেও সরবরাহে কোনো ঘাটতি নেই। নদীপথে প্রতিদিন শত শত টন পাথর আসছে উজান থেকে। এই সময়ে দেশে কেবল এই তিনটি সড়কেই মেরামতকাজ হচ্ছে না, আরও অনেক সড়কে কাজ হচ্ছে। অন্যরা পাথর সরবরাহ করতে পারলে এই দুটি প্রতিষ্ঠান কেন পারবে না?

কথায় বলে, খলের ছলের অভাব হয় না। ঠিক সময়ে কাজ শেষ করতে পারেনি বলেই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নানা অজুহাত খাঁড়া করছে। সওজ অধিদপ্তরের মৌলভীবাজার কার্যালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত এক কর্মকর্তা বলেছেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাজে আগে থেকে কিছু সমস্যা ছিল। তারপরও সে ধরনের প্রতিষ্ঠানকে কেন কাজ দেওয়া হলো? এখানে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সুস্পষ্টভাবে চুক্তির শর্ত লঙ্ঘন করেছে। কিন্তু সওজ নির্বিকার। এর পেছনে রহস্য কী?

 অভিযোগ আছে, সরকারি প্রকল্পের কাজে সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে নানা যোগসাজশ থাকে। কাজে বিলম্ব হলে ব্যয় বাড়ে আর তা থেকে উভয় পক্ষ লাভবান হয়। এ ক্ষেত্রেও তেমন কিছু হয়েছে কি না, সেটি খতিয়ে দেখা হোক।