বঙ্গবন্ধু এবং স্বাধীন বাংলাদেশের জন্ম

আগরতলা মামলা প্রত্যাহারের পর মুক্ত শেখ মুজিব। ২২ ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯
আগরতলা মামলা প্রত্যাহারের পর মুক্ত শেখ মুজিব। ২২ ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯

১৫ মার্চ (১৯৭১) নাগাদ বঙ্গবন্ধুর নির্দেশনা এবং আওয়ামী লীগের সামনের সারির নেতৃবৃন্দের সহায়তায় দায়িত্ব পালনরত প্রশাসনটি বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত প্রশাসন এবং রাজনৈতিক কর্তৃপক্ষ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিল। তবে এ নিয়ে তর্ক হতে পারে যে বঙ্গবন্ধুর কর্তৃত্ব কেবল ডি ফেক্টো (কার্যত) ছিল না, বরং এটিকে আইনানুগ হিসেবে আখ্যায়িত করা চলে। যেহেতু বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বের নির্বাচনগত বৈধতা ছিল; জনসাধারণের অনাবিল আস্থা, অকুণ্ঠ সমর্থন তিনি লাভ করেছিলেন। বাংলাদেশের সম্পূর্ণ ভৌগোলিক এলাকার ওপর বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক কর্তৃত্ব বা ক্ষমতা ভিনদেশি সরকারগুলোর স্বীকৃতি পাওয়ার জন্য যতটুকু দরকার, তার চেয়ে ঢের বেশি ছিল।

গোটা বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধুর কর্তৃত্ব বস্তুত সারা পৃথিবীর সামনে প্রকাশ পেয়ে গিয়েছিল বিভিন্ন দেশের বিপুলসংখ্যক সাংবাদিকের মাধ্যমে। তাঁরা তখন বাংলাদেশে অবস্থান করছিলেন, যে নতুন রাষ্ট্রটির অভ্যুদয় ঘটার আভাস পাওয়া যাচ্ছিল, সে সম্পর্কে সংবাদ পরিবেশনের জন্য। বঙ্গবন্ধু একই সময়ে পাকিস্তান সরকারের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের সঙ্গেও যোগাযোগ রাখছিলেন, যেসব নেতা ইয়াহিয়া খানকে বাংলাদেশে প্রস্তাবিত গণতান্ত্রিক পদ্ধতির যৌক্তিকতা মেনে নেওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করার কাজে তাঁকে সহায়তা করতে পারবেন। তবে বিশ্বের গণমাধ্যমগুলোই বঙ্গবন্ধুর বার্তা এসব দেশের সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছাতে সাহায্য করেছিল। আর এর সুবাদেই ১৯৭১ সালের মার্চ মাসে শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্বদরবারে তৃতীয় বিশ্বের অন্যতম পরিচিত মুখ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন।

মার্চের মাঝামাঝিতে ইয়াহিয়া খান যখন সংকট নিরসনের একটি সাংবিধানিক উপায় খুঁজে বের করার উদ্দেশ্য নিয়ে পুনরায় রাজনৈতিক আলাপ-আলোচনা শুরু করতে বাংলাদেশে এসেছিলেন, তখন তিনি মূল বিষয়ের পরিবর্তে রাজনৈতিক সমতা নিয়ে আলোচনা করছিলেন। বঙ্গবন্ধু তখন বাংলাদেশে শুধু একক কর্তৃত্বসম্পন্ন নেতাই ছিলেন না, বরং তাঁর নিজ এলাকা পশ্চিম পাকিস্তানে স্বয়ং ইয়াহিয়া খানের যতটুকু ক্ষমতা, তার চেয়ে অনেক বেশি ক্ষমতা ও কর্তৃত্ব রাখতেন।

১৯৭১ সালের মার্চ মাসে শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্বদরবারে তৃতীয় বিশ্বের অন্যতম পরিচিত মুখ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন।
১৯৭১ সালের মার্চ মাসে শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্বদরবারে তৃতীয় বিশ্বের অন্যতম পরিচিত মুখ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন।

বঙ্গবন্ধু আর ইয়াহিয়ার মধ্যকার সে সময়ের আলোচনা যদি রাজনৈতিক বাস্তবতার ভিত্তিতে হতো, তাহলে উদ্ভূত রাজনৈতিক সমস্যাগুলোর শান্তিপূর্ণ সমাধান হলেও হতে পারত। এ ধরনের সমাধান একটি শিথিল কনফেডারেল ব্যবস্থায় সম্পন্ন হতে পারত, শেষ পর্যন্ত যা হয়তো পাকিস্তানের কাছ থেকে বাংলাদেশকে শান্তিপূর্ণ বিচ্ছিন্ন হওয়ার দিকে নিয়ে যেত। অথচ ভুট্টোসহ কিছু রাঘববোয়ালের কথায় ইয়াহিয়া ঠাউরে বসেছিলেন যে মধ্যবিত্ত বাঙালি নেতাদের চাপের মধ্যে রাখলে কিংবা সহকর্মীদের হত্যার হুমকি দিলেই বুঝি তারা সামরিক জান্তার কাছে হার মানবে। স্বাধীনতাসংগ্রাম ডেকে আনার মতো সামরিক ক্ষমতা কিংবা রাজনৈতিক চেতনা, সাহস বা ঐতিহ্য যে বাঙালিদের মধ্যে থাকতে পারে, সামরিক জান্তার কাছে এটা ছিল কল্পনাতীত। ১৯৭১ সালের মার্চ মাসে বাংলাদেশের মানুষ এভাবে ফুঁসে উঠবে, সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য এভাবে এক হয়ে যে তারা লাগাতার যুদ্ধ চালিয়ে যেতে পারবে, তা তারা বুঝতে পারেনি একদম শেষ মুহূর্ত পর্যন্তও। ইয়াহিয়া আর ভুট্টো মনে করেছিলেন, পরিস্থিতি খারাপ থেকে খারাপতম হলে পাকিস্তান পোড়ামাটি নীতি অবলম্বন করবে, যেখানে বাঙালিদের সার্বভৌমত্বের আকাঙ্ক্ষার মূল্য রক্ত আর আগুন দিয়ে শোধ করতে হবে। ভুট্টো মনে করতেন, বাংলাদেশকে হারালে ইয়াহিয়া আর ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারবেন না। তখন তিনিই (ভুট্টো) হবেন পাকিস্তানের বাকি অংশের শাহেনশাহ।

বাঙালি জাতীয়তাবাদের শক্তিকে দমন করার জন্য ইয়াহিয়া খান রাজনৈতিক আলাপ-আলোচনার আড়ালে বাংলাদেশে সৈন্য পাঠিয়ে তাঁর শক্তি বাড়াচ্ছিলেন। তিনি এ রকম একটি জোরজবরদস্তিমূলক কাজ করছিলেন পাকিস্তানের একটি প্রদেশের ওপরে পাকিস্তানি কেন্দ্রীয় সরকারের রাজনৈতিক আধিপত্য কায়েম করার নামে। কিন্তু ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে ইয়াহিয়া খান গণহত্যা শুরুর চূড়ান্ত আদেশটা যখন জেনারেল টিক্কা খানকে দিয়ে ফেলেছিলেন, তখন আদতে পাকিস্তান গণতান্ত্রিকভাবে সুসংহত বাংলাদেশ নামের সার্বভৌম দেশটির কর্তৃত্ব জবরদখল করে নিয়েছিল। আর এ কারণে বাঙালিদের ওপর পাকিস্তানি সেনাদের আক্রমণের ঘটনাকে একটি সার্বভৌম দেশের ওপরে আরেকটি সার্বভৌম দেশের সামরিক আগ্রাসন হিসেবে দেখা হয়। বিষয়টি বাঙালিরা এভাবেই দেখেছিল এবং বাকি বিশ্বের কাছেও ব্যাপারটা ছিল ঠিক তা–ই।

১৯৭১ সালের মার্চ মাসে বাংলাদেশের জাতীয় চেতনাবোধ সার্বভৌমত্বের মর্যাদার চেতনাবোধে রূপ নেয়। এটা ছিল বঙ্গবন্ধুর দাবিকৃত স্বায়ত্তশাসনের অধিকারবোধ থেকে উদ্ভূত। এভাবে জাতীয় চেতনার ধারণা রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশ গঠনের পথ তৈরি করে দেয়। পলাশী যুদ্ধের পর প্রথমবারের মতো তাদের নিজেদের স্বাধীনভাবে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধির দ্বারা শাসিত হওয়ার আকাঙ্ক্ষায় বাঙালিরা জেগে উঠেছিল।

আইনগতভাবে স্বাধীনতার ঘোষণা দেওয়ার মতো বিশ্বাসযোগ্যতা শুধু একজন ব্যক্তিরই ছিল। সেই মানুষটি বঙ্গবন্ধু।
আইনগতভাবে স্বাধীনতার ঘোষণা দেওয়ার মতো বিশ্বাসযোগ্যতা শুধু একজন ব্যক্তিরই ছিল। সেই মানুষটি বঙ্গবন্ধু।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ থেকেই আমজনতার অন্তরে বাংলাদেশ একটি সার্বভৌম দেশ হিসেবে জায়গা করে নিয়েছিল। ইয়াহিয়া খানের নির্দেশে বাঙালিদের ওপর যে সামরিক হামলা চালানো হয়েছিল, তার জবাবে ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা ছিল একটি ডি ফ্যাক্টো ও বৈধ কর্তৃত্বকে স্বীকৃতি দিয়ে আইনগত ঘোষণা। তাই মুক্তিযুদ্ধ-পরবর্তীকালে স্বাধীনতা ঘোষণা কে দিয়েছিলেন, সেই বিতর্ক নিতান্তই অপ্রাসঙ্গিক বিতর্ক। সাধারণ বোধবুদ্ধিসম্পন্ন যেকোনো মানুষের কাছেই এ বিষয় পরিষ্কার যে স্বাধীনতার ঘোষণা কে দিয়েছিলেন, সেটা কোনো বড় বিষয় নয়, বরং ঠিক কোন সময়টা থেকে বাংলাদেশিরা নিজেদের স্বাধীনতার দাবি করেছিল, সেটাই মুখ্য—তা তারা করেছিল ১৯৭১ সালের মার্চ মাসে। যেকোনো ক্ষেত্রেই স্বাধীনতার ঘোষণা শুধু একটি আইনসিদ্ধ কর্তৃপক্ষের কাছ থেকেই আসতে পারে। অন্যথায় যেকোনো নাগরিক বিশ্বের যেকোনো স্থানকে স্বাধীন বলে দাবি করতে পারে। বাংলাদেশে ১৯৭১ সালে একজন অপরিচিত সামরিক কর্মকর্তা সাড়ে সাত কোটি বাংলাদেশির স্বাধীনতা ঘোষণা করেছিলেন—এই ঘোষণা দেওয়ার কোনো ক্ষমতা ছাড়াই এবং সেটা সবাই গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছিল, এমন চিন্তা অবাস্তব। বস্তুত, এ ধরনের অজ্ঞাত ঘোষণা আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে কেবল এমন ধারণার জন্ম দিতে পারত যে বাংলাদেশ বিশৃঙ্খলায় পতিত হয়েছে। সে সময় আইনগতভাবে স্বাধীনতার ঘোষণা দেওয়ার মতো বিশ্বাসযোগ্যতা শুধু একজন ব্যক্তিরই ছিল। সেই মানুষটি বঙ্গবন্ধু। কারণ, নির্বাচনসংক্রান্ত আইনগত বৈধতা এবং জনগণের কাছ থেকে তাদের হয়ে কথা বলার ক্ষমতা তিনিই লাভ করেছিলেন। সাড়ে সাত কোটি বাংলাদেশির জন্য সার্বভৌমত্ব ঘোষণার মাধ্যমে তিনি যে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন, তা বিশ্বস্বীকৃত। তাই স্থানীয়ভাবে দেওয়া যেকোনো ঘোষণা বঙ্গবন্ধুর পক্ষে তাঁর কোনো প্রতিনিধির দেওয়া ঘোষণা হিসেবেই কেবল গ্রহণযোগ্যতা পেতে পারে। বর্তমানে রাজনৈতিকভাবে দ্বিধাবিভক্ত বাংলাদেশেই এমন একটি অবাস্তব বিতর্ক স্থায়ীভাবে চলছে যে স্বাধীনতার ঘোষক কে? এটা দীর্ঘ সময়ের জন্য এই ধারণারই জন্ম দিতে পারে যে যার মনে এ ধরনের ঘোষণা দেওয়ার ইচ্ছা আছে, তেমন যেকোনো ব্যক্তি স্বাধীনতার ঘোষণা দিতে পারে।

বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের যৌক্তিকতা
বঙ্গবন্ধুর প্রশ্নাতীত কর্তৃত্ব থেকে যে আইনগত বৈধতা উদ্ভূত হয়েছিল, তা মুক্তিযুদ্ধের দীর্ঘস্থায়িত্বের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ যখন আনুষ্ঠানিকভাবে মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণা দেওয়া হয়, তখন বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে স্বাধীনতা আন্দোলনের যে জোয়ার এসেছিল, সেটা ছিল স্বতঃস্ফূর্ত এবং তিনি বিপুল জনসমর্থন নিয়ে বাংলাদেশের কথা বলার অধিকার লাভ করেছিলেন। এমন সমর্থন হয়তো গান্ধী বা নেহরু বা মাও বা হো চি মিন বা বেন বেল্লা কিংবা নকরুমা, নায়ারে অথবা ম্যান্ডেলার মতো ব্যক্তিরাও পাননি। তাঁরা সবাই পরিপূর্ণ নির্বাচনগত বৈধতা পেয়েছিলেন স্বাধীনতার পর। সারা বিশ্বের চোখে বঙ্গবন্ধু আদতে ওই সময়ের মধ্যেই ডি ফেক্টো (কার্যত) কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব বা ক্ষমতার চর্চা শুরু করেছিলেন (যখন তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন)। এই সর্বজনীন স্বীকৃত ক্ষমতার জন্যই বাঙালি বিচারক, আমলা, কূটনৈতিকনির্বিশেষে সবাই বঙ্গবন্ধুকে সমর্থন করেছিলেন। এমনকি পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে নিযুক্ত বাঙালিরাও নিজেদের কর্মক্ষেত্রের শপথ ভেঙে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দিতে দ্বিধা করেননি। মনে রাখতে হবে, কিছু ভিয়েতনামি তাদের মুক্তি আন্দোলন দমনকারী ফরাসিদের পক্ষে যুদ্ধ করেছে। কিছু আলজেরীয়রা এফএলএনদের রুখতে ফরাসিদের সঙ্গে যুদ্ধ করেছে। ব্রিটিশরা শুরু থেকেই তাদের সাম্রাজ্যের ভেতরকার স্বাধীনতাসংগ্রাম রুখতে পুলিশ এবং স্থানীয় বাহিনীকে কাজে লাগিয়ে এসেছে। একমাত্র বাংলাদেশই ছিল এর ব্যতিক্রম। যেখানে ঔপনিবেশিক শাসনের এসব ভৃত্য শাসকের কর্তৃত্বকে অস্বীকার করেছিল এবং একটি বিদ্রোহী পক্ষকে সমর্থন করেছিল। কারণ, তারা এই পক্ষটির নেতাকে সব জনগণের হয়ে কথা বলার ক্ষমতা দিয়েছিল।

১৯৭১ সালের মার্চের পর যখন বাংলাদেশের মানুষ বিশ্বদরবারে তাদের বার্তা নিয়ে উপস্থিত হয়েছিল, তখন সার্বভৌমত্বের সমর্থন আদায়ে তেমন বেগ পেতে হয়নি, এমনকি সে সময় বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের জন্য তাদের সমর্থনে সরকারের আগ্রহ কম থাকা সত্ত্বেও। পাকিস্তানি সেনা আক্রমণ এবং গণহত্যার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ সে সময় বিশ্বের বেশির ভাগ দেশের সমর্থন ও জনপ্রিয়তা লাভ করেছিল। আজ বহু দেশই মনে করে, সেই সময়ের গণহত্যার দুই নায়ক ইয়াহিয়া ও সামরিক অধিনায়ক টিক্কা খানকে তাঁদের বর্বরোচিত আচরণের পরিপ্রেক্ষিতে যুদ্ধাপরাধী বিবেচনা করে বিচার করা উচিত। ১৯৭১ সালে কখনো বাংলাদেশের নাম শোনেনি, এমন সব রাষ্ট্রের মানুষদেরও সমর্থন বাংলাদেশের জন্য জরুরি হয়ে পড়েছিল। বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের ওপর যে ভয়াবহ নৃশংসতা চাপিয়ে দেওয়া হয়েছিল, সারা বিশ্ব তা লক্ষ করেছে। তাই বঙ্গবন্ধুকে বাংলাদেশের নেতা এবং বাংলাদেশকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি পেতে সময় লাগেনি। ১৯৭১ সালের পরে বঙ্গবন্ধু এবং আওয়ামী লীগের ভূমিকা নিয়ে যে যা-ই বলুক না কেন, সব বাংলাদেশিকে অন্তত এ কথা স্বীকার করতেই হবে যে বঙ্গবন্ধু যদি এ দেশের মানুষের মধ্যে জাতীয় চেতনা ও আত্মসচেতনতা না জাগাতে পারতেন (বিশেষ করে মুক্তিযুদ্ধের আগে) এবং তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার নিয়ে তিনি যদি বিশ্বের সামনে প্রস্তাব উত্থাপন না করতেন, তবে আমাদের মুক্তিযুদ্ধ হতো আরও বিলম্বিত এবং দীর্ঘায়িত একটি প্রক্রিয়া।

ইংরেজি থেকে সংক্ষেপিত অনুবাদ
রেহমান সোবহান: বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) চেয়ারম্যান ও বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ।
(২০০৫ সালের ১৫ আগস্ট প্রথম আলোয় প্রকাশিত)