তাই বলে গালে-বুকে অন্যের পতাকা?

অনলাইনে প্রথম আলো (prothom-alo.com) নিয়মিত পড়া হয় ১৯০টি দেশ থেকে। পড়ার পাশাপাশি পাঠকেরা প্রতিদিন রাজনীতি, অর্থনীতি, সমাজ, খেলাসহ বিভিন্ন বিষয়ে তাঁদের মতামত দেন। তাঁদের এ মতামত চিন্তার খোরাক জোগায় অন্যদের। গত কয়েক দিনে বিভিন্ন বিষয়ে পাঠকদের কিছু মন্তব্য ঈষৎ সংক্ষেপিত আকারে ছাপা হলো।

খেলায় পাকিস্তানকে সমর্থন কেন?

এশিয়া কাপে ভিনদেশের পতাকা ওড়ানো নিয়েই মতামত পাতায় এ লেখা প্রকাশিত হয়েছে। রাজনীতি যদি রাজনীতির ময়দানে দাঁড়িয়ে খোলাখুলি করা না যায়, তখন বেজায়গায় তা প্রকাশ পাবেই। খেলার মাঠ নাকি সে রকম এক বেজায়গা। প্রশ্নটা তাই এখন দাঁড়িয়েছে, খেলার সঙ্গে রাজনীতি যদি মেশেই, তাহলে কোন ধরনের রাজনীতি মেশানো শ্রেয়?
এ ব্যাপারে পাঠক এম মোরশেদ লিখেছেন, জাতীয় দলগুলোর নিজস্ব পতাকা থাকা উচিত, ক্লাব দলগুলোর মতো।
এম সাকলাইন: আসলে যেকোনো খেলায় নিজের দেশ বাদ দিয়ে অন্য দেশকে সমর্থন করা অবৈধ।
জেড রহমান: উপমহাদেশে পাকিস্তানের বোলিং আর ভারতের ব্যাটিং-ভক্ত অনেক ক্রিকেটপাগল মানুষ। এটা নিয়ে রাজনীতি না করলেই ভালো হয়। ভারত-পাকিস্তান খেলায় কেউ ভারতকে, কেউ পাকিস্তানকে সমর্থন করতেই পারে। কিন্তু বাংলাদেশের সঙ্গে খেলায় যদি কেউ নিজ মাতৃভূমিকে না করে অন্য দলকে সাপোর্ট করে, তাহলে তাকে রাজাকার বলা চলে।
সুমন: লেখকের সঙ্গে সহমত। ভারত-পাকিস্তান উভয়ের দ্বারা আমরা নির্যাতিত হয়েছি এবং হচ্ছি। খেলার ছলে তাদের পতাকা নিয়ে লাফালাফি করাটা বেমানান।
ইফতেখার চৌধুরী: ছোটবেলায় আমরা ‘আমার জীবনের লক্ষ্য’ নামে রচনা শিখেছিলাম। যেখানে সবাই লিখতাম, ‘বড় হয়ে চিকিৎসক হব এবং গ্রামের গরিব-দুঃখী মানুষের সেবা করব’!! ওই লাইনটা মুখস্থ ছিল, না বুঝেই লিখতাম! পাকিস্তানের সমর্থকেরাও মুখস্থ বলে ‘খেলার সঙ্গে রাজনীতি মেশানো উচিত না!’ ভাই, দেশ ব্যাপারটা কি রাজনীতি? আমি আমার জাতীয়তা দেখাব, সেটা কি রাজনীতি? আচ্ছা মানলাম, খেলায় সমর্থন থাকতেই পারে, তাই বলে মাঠে গিয়ে গালে-বুকে আরেক দেশের পতাকা এঁকে-নাম লিখে, ওই দেশের নামে চিল্লাতে হবে?! পৃথিবীতে আর একটা দেশ দেখাতে পারবেন, যেখানকার দর্শকেরা এমন অদ্ভুত বিজাতীয় ভালোবাসা দেখায়?!! পাকিস্তান-ভারত দুই দলের সমর্থকের কাছেই প্রশ্নগুলো রাখলাম...।
মো. মোক্তারুল ইসলাম: শিরোনামটা ভুল হয়ছে, এমন হওয়া ঠিক ছিল, ‘নিজ দেশের খেলায় ভারত, পাকিস্তানকে সমর্থন কেন?’
মো. নিয়ামুল হক খান: অদ্ভুত লাগে, মানুষের মন্তব্য আর লাইক বা ডিজলাইক দেখেও! পাকিস্তানের পতাকা ওড়ানোর সমর্থনে ভারতকে খারাপ বলে সবাই পার পেয়ে যাচ্ছে! আর খেলায় রাজনীতির কথাও বলা হচ্ছে! এসব মানুষ দেশে সংখ্যাগরিষ্ঠ বলেই আজকে দেশের এ অবস্থা। একাত্তর দেখিনি, কিন্তু শুনেছি। যারা গালে পতাকা আঁকছে বা খেলায় রাজনীতি না আনার দোহাই দিয়ে পাকিস্তানকে সমর্থনের পক্ষে যুক্তি দিচ্ছে, তাদের যদি টাইম মেশিনে করে একাত্তরে পাঠিয়ে দেওয়া যেত, তারপর দেখতাম, তারা শরীরের কোথায় পাকিস্তানের পতাকা আঁকছে আর এটাকে খেলায় রাজনীতি না আনার কথা বলে কীভাবে সমর্থনও দিচ্ছে! সমর্থন করা নিয়ে আমার আপত্তি নেই। খেলায় দল হিসেবে ওদের খেলা ভালো লেগে সমর্থন করলেও শরীরে তাদের পতাকা ধারণ বা হাতে নিয়ে ওড়ানো, কখনোই বাংলাদেশি হিসেবে দেখতে চাই না।

নির্বাচনী সহিংসতা ফিরে আসছে
নির্বাচনী সহিংসতা ফিরে আসছে

কমিশন নিশ্চুপ, নির্বাচনী সহিংসতা ফিরে আসছে!
দেশে নির্বাচনী সহিংসতার সংস্কৃতি আবার ফিরে আসছে। ইতিমধ্যে গাজীপুরের শ্রীপুরে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারের ঘটনা ঘটেছে।
রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মী ও নির্বাচন পর্যবেক্ষকেরা মনে করেন, নির্বাচন কমিশনের (ইসি) নিষ্ক্রিয়তা এর জন্য বহুলাংশে দায়ী। নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের নানা ঘটনায় শক্ত ব্যবস্থা না নেওয়ায় ইতিমধ্যে কমিশন সমালোচিত হয়েছে।
এ ব্যাপারে পাঠক মাহফুজা বুলবুলের মন্তব্য: কমিশনের কি মুখে টেপ লাগানো? হাত-পা বাঁধা?
রাজীব চৌধুরী: দেশে নির্বাচনী সহিংসতার জন্য আওয়ামী লীগ এবং এই অথর্ব নির্বাচন কমিশন দায়ী। আর আমি মনে করি, এটা নির্বাচন কমিশন না, এটা আওয়ামী কমিশন।
করিম হাওলাদার: কী দরকার ছিল আবার এই নির্বাচন দেওয়ার!
মো. শাহ আলম: আওয়ামী লীগের অধীনে নির্বাচন সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ হয়—এমন দাবি এখন বানের পানির সঙ্গে ভেসে গেছে।
শিকদার দস্তগীর: একসময় দেখতাম, রাজনৈতিক চাপের কাছে নতি স্বীকার না করে প্রশাসনের উচ্চপর্যায় থেকে বা এ রকম দায়িত্বশীল পদে থেকে স্বেচ্ছায় রিজাইন করে চলে যেতেন। এতে করে অসুস্থ রাজনীতির চর্চা কিছুটা হলেও হোঁচট খেত। কিন্তু ৩০-৩৫ বছর ধরে সাধারণ জনগণের আশ্রয়স্থল ইনস্টিটিউশনগুলো যেভাবে নিজেদের কবর নিজেরা রচনা করে আসছে, তা দেখে আমজনতা হতবাক হয়ে যাচ্ছে।
সাব্বির আহমেদ জুয়েল: আচরণবিধি লঙ্ঘনের এসব ঘটনার প্রতিটির জন্য শাস্তির বিধান আছে। কিন্তু কমিশন কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। কারণটা কি, দেশটা মগের মুল্লুক নাকি!


ক্রসফায়ারে খুশি হচ্ছে কারা

ক্রসফায়ারের সমালোচনা করে সম্পাদকীয় পাতায় এই মতামত ছাপা হয়েছে। এর পক্ষে-বিপক্ষে নানা মত এসেছে। এর সমালোচনা করে লেখকের উদ্দেশে সাইফ খান লিখেছেন: আমরা আসাদুজ্জামান নূরের ওপর বর্বর আক্রমণের ঘটনা দেখে বিচলিত হয়েছিলাম। কিন্তু নূরের বহরে হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে আজকের মতো কোনো ক্ষুরধার লেখা আপনার কলমে আসেনি সেদিন, সেই ঘটনার বিরুদ্ধে কিছু লিখতে হবে বলে সারা সপ্তাহ ধরে কোনো পত্রিকায় কলাম লেখা পর্যন্ত বন্ধ রেখেছিলেন।
আব্দুল্লাহ আল মামুন: ক্রসফায়ার একটি পক্ষের প্রতিশোধের হাতিয়ার।
এফ ফয়সল: একজন মন্ত্রী প্রকাশ্যে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড সমর্থন করছেন, এর চেয়ে ন্যক্কারজনক আর কী হতে পারে? অন্য দেশ হলে শুধু এই কারণে মন্ত্রিত্ব চলে যেত।
সাহিদুল ইসলাম: যারা বন্দুকযুদ্ধ বা ক্রসফায়ারে নিহত ব্যক্তিদের লাশ আনতে যায়, সকালে বা সন্ধ্যায়, তাদের বোবা প্রতিবাদের ভাষা পড়ার ক্ষমতা জাতি হিসেবেই হয়তো আমরা হারিয়ে ফেলেছি।
এফ আর শামস: ক্রসফায়ারে আমি খুশি—গৎবাঁধা কথার বুলি আওড়াতে চাই না। মানবাধিকার থাকবে। তবে যে সন্ত্রাসী একাধিক ব্যক্তির অধিকার ক্ষুণ্ন করে, তার অধিকার রক্ষা করার কোনো মানে হয় না।


৬১ ফুট গভীর থেকে গৃহবধূর লাশ উদ্ধার

কুমিল্লার দেবীদ্বার উপজেলায় পরিত্যক্ত গভীর নলকূপের ৬১ ফুট গভীর থেকে শাহিনা আক্তার নামের এক গৃহবধূর অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এক মাস আগে প্রবাসী স্বামীর ভাড়াটে লোকেরা তাঁকে হত্যা করে নলকূপে ঢুকিয়ে রেখেছিল। হত্যাকাণ্ডের প্রায় এক মাস সাত দিন পর উদ্ধার করা হলো হতভাগ্য গৃহবধূর লাশ। এ ব্যাপারে পাঠক আব্দুল হকের মন্তব্য: মানুষের মানসিকতা, মনুষ্যত্ব কোথায় গিয়ে ঠেকেছে, তা ভাবতে হবে এখনই। প্রতিরোধের পথ আবিষ্কার করতে হবে। সবাই মিলে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলুন এই পশুদের বিরুদ্ধে।
জহিরুল ইসলাম: ধন্যবাদ, পুলিশ ভাইদের। ওপরের চাপ না থাকলে আমাদের দেশের পুলিশ ভাইয়েরা সবই করতে পারেন।
রবিউল হোসেন: খুবই হূদয়বিদারক ঘটনা। জড়িত ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। তাহলে এমন অপরাধ করার সাহস কেউ পাবে না।
(পাঠকের মন্তব্য বিস্তারিত পড়তে ও আপনার মতামত জানাতে ভিজিট করুন prothom-alo.com)