ভেজাল খাদ্য

সুশাসন, প্রতিরোধ ও প্রতিকারের অভাবে বাজারে ভেজাল খাদ্য বিক্রয়ের পরিমাণ ক্রমাগত বাড়ছে। জনগণ বিশুদ্ধ খাদ্য খাওয়ার অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। শাকসবজি, মাছ-মাংস, খাওয়ার পানি, ফলমূলসহ বিভিন্ন প্রকার খাদ্যপণ্যে ক্ষতিকর রাসায়নিক প্রয়োগের মতো গর্হিত কর্মকাণ্ড অব্যাহত গতিতে বেড়েই চলছে। ক্রেতা সাধারণ নিরুপায়। তাই বাধ্য হয়ে তারা ভেজাল খাদ্যপণ্য ক্রয় করে এবং খেয়ে জীবন ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলছে।
সম্প্রতি ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে খাদ্যে ভেজালের ভয়াবহ চিত্র ফুটে উঠেছে। ঘুষ-দুর্নীতি, আইনি ফাঁকফোকর ইত্যাদির কারণে খাদ্যপণ্যে ভেজাল প্রয়োগ বন্ধ করা এবং নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। এ মুহূর্তে সরকার যদি নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতকরণ কর্মকাণ্ড জোরদার না করে, তাহলে জনজীবন মারাত্মক হুমকির মধ্যে পতিত হবে, তা নির্দ্বিধায় বলা যায়।
আমাদের দেশে যারা খাদ্যে ভেজাল মিশিয়ে বিক্রয়ের সঙ্গে জড়িত, তাদের অভিযুক্ত করে যে শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে, তা খুবই দায়সারা গোছের। এ ব্যাপারে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা না করা হলে ভেজাল খাদ্য বিক্রয়ের প্রবণতা কমবে না। খাদ্যপণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ভেজাল ও মানবহির্ভূত নিম্নমানের পণ্য তৈরি এবং বাজারে বিক্রয় করে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছে। অথচ তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। ছিটেফোঁটা যা নেওয়া হচ্ছে, তাতে করে এর কোনো প্রতিকার হচ্ছে না।
জনগণের জীবনমরণ সমস্যা সমাধানে সরকার কঠোর না হলে এবং এ ব্যাপারে কঠিন পদক্ষেপ গ্রহণ না করা হলে ভবিষ্যতে এর ভয়াবহতা রোধ করা অসম্ভব হয়ে পড়বে।
অতএব, এ ব্যাপারে যত দ্রুত সম্ভব, শিগগিরই সম্ভব সজাগ এবং সঠিক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জরুরি পদক্ষেপ নিতে সরকারের বিশেষ দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
মাহতাব আলী
মিরপুর, ঢাকা।