স্বতন্ত্র বেতনকাঠামো

আমার স্বামী একটি সরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তা। আজ প্রায় ৩৬ বছর চাকরি জীবনে যাঁর কোনো সঞ্চয় নেই। কারণ, দুর্নীতি তাঁকে কোনো দিন ছুঁতে পারেনি। কিন্তু যাঁরা দুর্নীতি করেন না, তাঁদের জীবনে কী কষ্ট, আমি দাম্পত্য জীবনে দেখলাম। বর্তমান যুগে বাসা ভাড়া দিয়ে ছেলে-মেয়ের খরচ চালিয়ে শহরে থাকা যে কত কষ্টকর। তবু কোনোরকমে চলে যাচ্ছিল। কিন্তু সে মুহূর্তে এল ওপেন হার্ট সার্জারি, যার ব্যয় প্রায় পাঁচ লাখ টাকা।
তাই আত্মীয়স্বজন থেকে ধার করে সেই খরচ বহন করি। ওই ধার মেটাতে তাঁকে চারটা লোন নিতে হয় ব্যাংক থেকে। এখন তাঁর বেতন প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে। ভেবেছিলাম, কিছু টাকা হয়তো ব্যাংক থেকে পাওয়া যাবে। কিন্তু জানলাম, মাসিক যে ৭০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা দেওয়া হয়, সেটাই চিকিৎসার জন্য শেষ।
সরকারের কাছে আমার প্রশ্ন, মাসিক ৭০০ টাকা দিয়ে কি পাঁচ লাখ টাকার চিকিৎসা করা যায়? যাঁরা দুর্নীতি করেন না, তাঁদের জীবনে কি শুধু কষ্টই থাকবে? যাঁরা আমার স্বামীর মতো সৎ লোক, তাঁদের পুরস্কৃত করা উচিত। তবু যখন শুনলাম ‘স্বতন্ত্র বেতনকাঠামো’ দেওয়া হবে, তখন অনেক আশা নিয়ে প্রতিদিন অর্থ ও বাণিজ্য পাতা দেখি।
১৬ মার্চ অর্থমন্ত্রী বললেন, অবিলম্বে স্বতন্ত্র বেতনকাঠামো ঘোষণা করা হবে। তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের জন্য কিছুদিন লাগতে পারে। তাই মাননীয় অর্থমন্ত্রীর কাছে প্রশ্ন, যাঁরা ছয় মাস বা এক বছরের মধ্যে অবসরে চলে যাবেন, তাঁরা কি এই সুবিধা পাবেন?

নাবিলা, চট্টগ্রাম।