রাসায়নিক ত্রাস ও ভেজাল

রাসায়নিক ত্রাস ও ভেজাল বর্তমানে মানুষের উদ্বেগের বৃহত্তর জায়গা দখল করে আছে। রাসায়নিক দ্রব্য ও ভেজালমিশ্রিত খাদ্য গ্রহণ করার জন্য গত ৩০ বছরে আমাদের গড় উচ্চতা ১ থেকে ১ দশমিক ৫ ইঞ্চি কমে গেছে, কমে গেছে জীবনীশক্তি। পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের ‘বিষাক্ত খাদ্য জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি’ শীর্ষক সেমিনারের তথ্য থেকে জানা যায়, শুধু ভেজাল খাদ্য গ্রহণের ফলে প্রতিবছর প্রায় তিন লাখ লোক ক্যানসারে আক্রান্ত হচ্ছে, ডায়াবেটিসে আক্রান্তের সংখ্যা দুই লাখ। এ ছাড়া গর্ভবতী মায়ের শারীরিক জটিলতাসহ গর্ভজাত বিকলাঙ্গ শিশুর সংখ্যা প্রায় ১৫ লাখ। ২০১২ সালে কীটনাশক বিষমিশ্রিত লিচু খেয়ে দিনাজপুরে ১৪টি শিশুর অকালমৃত্যুর ঘটনা সবার জানা, ২০১৪ সালে রাসায়নিক দ্রব্যমিশ্রিত তরমুজ খেয়ে অনেক লোকের তাৎক্ষণিক মৃত্যু ঘটেছে। এই রাসায়নিক ত্রাস ও ভেজালের রোষের মুখে মানুষ যেন নিতান্তই অসহায় হয়ে পড়েছে। আমাদের ভোক্তা অধিকার আইনেও রয়েছে দুর্বলতা, সেখানে ‘ভোক্তা অধিকার আইন, ২০০৯’–এ বলা হয়েছে, ক্ষতিগ্রস্ত ভোক্তা নিজে মামলা করতে পারবেন না, করবেন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক। কিন্তু সেখানেও রয়েছে নানা প্রতিবন্ধকতা। তবে আশার বিষয় হলো, সম্প্রতি ১১ জুন ২০১৪ থেকে সরকারের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী-পুলিশ এই মৌসুমি ফলের মৌসুমে রাসায়নিক দ্রব্যমিশ্রিত ফল ঢাকায় প্রবেশ করতে দেবে না বলে ঘোষণা দিয়েছে। কিন্তু আমরা চাই, শুধু এই মৌসুমে নয়, সারা বছর দেশের সর্বত্রই এই রাসায়নিক ত্রাস ও ভেজালের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা অব্যাহত থাকবে। আশা করি, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে বিশেষ দৃষ্টি দেবে।
হীরক লিংকন
রাজশাহী ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজ রাজশাহী।