শিক্ষার্থীদের পোশাকের রং

বাংলাদেশের বেশির ভাগ মানুষই দরিদ্র। এই দরিদ্র মানুষের সন্তানেরাই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ে। তাদের পোশাক পুরোনো, ছেঁড়া। পায়ে জুতা নেই। কেউ হয়তো আছে সচ্ছল পরিবারের সন্তান। তার পোশাক থাকে আলাদা, চোখ কাড়া, সুন্দর, পরিচ্ছন্ন। তার সামনে তারই দরিদ্র সহপাঠীদের ম্লান দেখায়। এই বিব্রতকর পরিস্থিতিতে যাতে শিশুশিক্ষার্থীদের পড়তে না হয়, তাই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ইউনিফর্ম চালু করা হলো।
কিন্তু দেখা গেল, বিভিন্ন বিদ্যালয়ে ইউনিফর্মের যে রং নির্বাচন করা হয়, তার বেশির ভাগই থাকে ঘন নীল, কটকটে সবুজ বা খয়েরি। এসব রঙে দরিদ্র শিশুদের আরও দরিদ্র লাগে, অনুজ্জ্বল লাগে। আমার মনে হয় ইউনিফর্মের রং নির্বাচনে সচেতন হওয়া দরকার। এ ক্ষেত্রে সারা দেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে একই রঙের ইউনিফর্ম চালু করা যেতে পারে। সেটা এমন হবে, যাতে শিশুশিক্ষার্থীদের সুন্দর দেখায়, উজ্জ্বল দেখায়। তবে কে কোন বিদ্যালয়ের, সেটা আলাদা করতে চাইলে বিদ্যালয় তাদের পছন্দমতো বিভিন্ন রঙের লেস বা স্টিকার যুক্ত করতে পারে। আমি আমার বিদ্যালয়ের মেয়েদের জন্য হালকা মিষ্টি গোলাপি এবং ছেলেদের জন্য হালকা আকাশ নীল রং নির্বাচন করেছি। আমি দেখেছি, এতে শিশুশিক্ষার্থীদের ফুলের মতোই সুন্দর লাগে। যা কালো, শ্যামলা বা ফরসা—সব রঙের ছেলেমেয়েদের সঙ্গে মানিয়ে যায়। ইউনিফর্মের এই রংটা সারা দেশের শিক্ষার্থীদের জন্য নির্দিষ্ট করে দেওয়া যেতে পারে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি বিবেচনা করে দেখতে অনুরোধ করছি।
তাসনীম চৌধুরী
সহকারী শিক্ষিকা, লামা কাগাবলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মৌলভীবাজার।