অর্পিত সম্পত্তি

দৈনিক প্রথম আলোয় ৩০ মে ২০১৩ প্রকাশিত প্রত্যর্পণ আইনের সংশোধনী চেয়ে বিজ্ঞ আইনজীবী সুবল চন্দ্র সাহার মতামতের জন্য ধন্যবাদ। জনাব সাহার মতামতের মধ্যে মূলত প্রণিধানযোগ্য চারটি পয়েন্ট রয়েছে দেখা যায়। তাই শুধু এই চারটি পয়েন্টের ওপরই আমার মতামত বা ব্যাখ্যা প্রদান করছি জনাব সাহাসহ সংশ্লিষ্ট সবার ভ্রান্তি অপনোদনের জন্য। আমার ধারণায় তিনি একটু ভুল বুঝেছেন। তিনি দেওয়ানি আদালতের হায়ারার্কি বা পদক্রম বিন্যাসের সঙ্গে এই ট্রাইব্যুনালকে এক করে দেখেছেন। এই আইনের ১৬(৪)১ ধারায় গঠিত সিনিয়র সহকারী জজ, যুগ্ম জেলা জজ বা অতিরিক্ত জেলা জজ নিয়ে গঠিত ট্রাইব্যুনালের ক্ষমতা ও মর্যাদা সমপর্যায়ের। এ ক্ষেত্রে অতিরিক্ত জেলা জজের ট্রাইব্যুনালকে বেশি ক্ষমতা বা মর্যাদা দেওয়া হয়নি। অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইনের আওতায় গঠিত সব ট্রাইব্যুনালের ক্ষমতা ও মর্যাদায় ইতরবিশেষ নেই। আবার সিনিয়র সহকারী জজ থেকে অতিরিক্ত জেলা জজ পর্যন্ত সব ট্রাইব্যুনালের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল হবে জেলা জজ পর্যায়ের আপিল ট্রাইব্যুনালে। এর সঙ্গে বাস্তব হায়ারার্কির কোনো মিল নেই। এ ক্ষেত্রে প্রকৃত হায়ারার্কিকে উপেক্ষা করতে হবে।

দ্বিতীয়ত, যেহেতু কোনো কোনো জেলায় মামলার আধিক্যের কারণে ট্রাইব্যুনালের সংখ্যা বাড়ানোর প্রয়োজন রয়েছে, সেহেতু মূল ট্রাইব্যুনালে অতিরিক্ত জেলা জজ আদালত পর্যন্ত অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। আর তার আপিলের সংখ্যা যেহেতু কম হওয়ার সম্ভাবনা, সেহেতু জেলা জজকেই আপিল ট্রাইব্যুনালের প্রধান করা হয়েছে।

তৃতীয়ত, আইনের ২০(ক) ধারাটি নতুন সংযোজন। মামলার সংখ্যা বিবেচনায় কাজের সুবিধার্থে সাতটি বিভাগীয় সদরে সাতটি অতিরিক্ত বিশেষ ট্রাইব্যুনাল করা হয়েছে। এটি বিচারপ্রার্থীকে অধিকতর দ্রুত বিচার সেবা প্রদানের উদ্দেশ্যেই করা। এটি মূল আপিল ট্রাইব্যুনালের পরিপূরক, প্রতিস্থাপক বা সাংঘর্ষিক নয়।

চতুর্থত, জনাব সাহা কমিটিগুলোর ওপর অন্যায্যভাবে দোষ দিয়েছেন। এখানে প্রণিধানযোগ্য বিষয় হলো, কমিটিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ‘খ’ তালিকার বিষয়ে, যেসব সম্পত্তি সরকারের দখলে বা ব্যবস্থাপনায় নেই। এ ক্ষেত্রে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) বা কমিটির রেকর্ডের বাইরে কিছুই করার নেই।

মোহাম্মদ শফিউল আলম

চেয়ারম্যান (সরকারের সচিব), ভূমি আপিল বোর্ড, ঢাকা।