নতুন বিদ্যুৎ-সংযোগ

দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বাড়াতে গত মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) যে প্রকল্প অনুমোদন করেছে, তা আশাব্যঞ্জক। যেকোনো দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের পূর্বশর্ত নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ। বর্তমান যুগে বিদ্যুৎ ছাড়া মানুষের দৈনন্দিন জীবন থেকে শুরু করে শিল্পকারখানা, ব্যবসা-বাণিজ্য সবই অচল। যদিও পূর্ববর্তী সরকারগুলো এ ব্যাপারে সীমাহীন ঔদাসীন্য দেখিয়ে আসছিল। চারদলীয় জোট সরকারের আমলে মাইলের পর মাইল খাম্বা বসানো হলেও নতুন বিদ্যুৎ-সংযোগ দেওয়া হয়নি। বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়াতে নেওয়া হয়নি কোনো পদক্ষেপ। শেখ হাসিনার বিগত সরকার সংকট সমাধানে রেন্টাল ও কুইক রেন্টাল প্রকল্প নিলেও সেটি ছিল সাময়িক ব্যবস্থা। সংকট উত্তরণে বৃহৎ আকারের বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রতিষ্ঠার বিকল্প নেই।
প্রস্তাবিত প্রকল্পের জন্য নতুন এক হাজার ৮১ কিলোমিটার বিদ্যুৎ বিতরণ লাইন নির্মাণ ও ৭৭৭ কিলোমিটার বিদ্যমান লাইন মেরামত করতে হবে। আর মেয়াদটি শেষ হওয়ার কথা ২০১৮ সালের জুন মাসে। সে ক্ষেত্রে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষ এই মুহূর্তে বাড়তি বিদ্যুতের আশা করতে পারছে না। প্রায় চার বছর পর প্রকল্পের আওতায় যখন ২৩০ মেগাওয়াট নতুন বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে, তখন চাহিদা কয়েক গুণ বেড়ে যাবে।
তাই চাহিদা ও সরবরাহের মধ্যে সমন্বয় আনতে বিক্ষিপ্ত প্রকল্প না নিয়ে সমন্বিত কর্মসূচি নেওয়াই সময়ের দাবি। দ্বিতীয়ত, একনেকে অনেক প্রকল্প অনুমোদন পাওয়ার পর এর বাস্তবায়ন নিয়ে গড়িমসি দেখা দেয়। সময়মতো অর্থায়ন না হলে সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও বাস্তবায়নের মধ্যে মস্ত বড় ফারাক থাকে। স্বার্থান্বেষী মহলের লক্ষ্য থাকে প্রকল্পের সময় বাড়িয়ে রাষ্ট্রীয় অর্থের অপচয় করা। এ বিষয়েও কর্তৃপক্ষকে সজাগ থাকতে হবে। আমাদের আশা থাকবে, দায়িত্বপ্রাপ্ত ওয়েস্ট পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি প্রকল্প বাস্তবায়নের প্রতিটি ধাপে সর্বোচ্চ স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করবে।