চট্টগ্রামের দুঃখ

চট্টগ্রামের দুঃখ এর জলাবদ্ধতা। এই দুর্দশা দূর করায় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন বরাবরই গাফিলতি দেখিয়েছে। এবার অভিযোগ উঠেছে, সমস্যার গোড়ায় হাত না দিয়ে ভোটের আগে লোক দেখানো খাল খনন চলছে। সাধারণত সিটি করপোরেশন নির্বাচনের আগে ভোটারদের খুশি রাখতে বিভিন্ন রকমের তোড়জোড় করে প্রশাসন। খাল খনন তারই অংশ, কিন্তু চট্টগ্রামের আসলে প্রয়োজন ১৯৯৫ সালে প্রণয়ন করা ড্রেনেজ মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন।
দৃশ্যত বর্ষা মৌসুমের আগে নগরের খাল, নালা ও পয়োনিষ্কাশনব্যবস্থা সংস্কার করা ভালো উদ্যোগ। কিন্তু স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের একাংশসহ প্রকৌশলী ও নাগরিক প্রতিনিধিরা বলছেন, সমস্যার গোড়ায় হাত দেওয়া হচ্ছে না। নগর প্রশাসন বলছে অর্থাভাবের কথা। কিন্তু বছরের পর বছর সেই অভাব মিটছে না কেন? তহবিল জোগাড়ের কোনো উদ্যোগ নেই কেন? অন্যান্য বরাদ্দ কমিয়ে জলাবদ্ধতা দূর করার সুবুদ্ধি হচ্ছে না কেন? গত শুক্রবারের প্রথম আলোয় এ বিষয়ে প্রকাশিত সংবাদে মেয়রের ভাষ্যে এসবের কোনো উত্তর পাওয়া গেল না! যেখানে দরকার নতুন তিনটি খাল খনন এবং অপরিকল্পিতভাবে গড়ে উঠতে থাকা পয়োনিষ্কাশন প্রণালিগুলোকে সুবিন্যস্ত করা, সেখানে গতানুগতিকভাবে কিছু খাল সংস্কার করাকে জলাবদ্ধতার সমাধান দাবি করা হাস্যকর।
ভোটের আগে লোক দেখানো খাল খনন!খালগুলো অবশ্যই সংস্কার করতে হবে, পরিষ্কার করতে হবে এবং দখল থেকে উদ্ধার করতে হবে; পাশাপাশি প্রস্তাবিত মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের উদ্যোগও এখনই নেওয়া চাই। এবং কাজটি করতে হবে সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে পানি উন্নয়ন বোর্ড, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, রেলওয়ে, ওয়াসা এবং সংশ্লিষ্ট আরও সব প্রতিষ্ঠানের সমন্বিত কর্মসূচির মাধ্যমে।
নগরবাসীর বর্জ্য পরিবহন করার জন্য খাল নয়। যদিও বাস্তবতার তাগিদে সেটাই হয়েছে বিকল্প পথ। কিন্তু ড্রেনেজ মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের বিকল্প নেই। আসন্ন বর্ষায় চট্টগ্রামের মতো মহানগরের দুর্দশা কেউ দেখতে চায় না।