মন্ত্রী-সচিবদের সততা

কিছুদিন আগেই দুর্নীতি বৃদ্ধির বিষয়ে টিআইবির প্রতিবেদনকে জোরালো ভাষায় নাকচ করেছিল দুদক। এবং তার সঙ্গে সরকারও সুর মিলিয়েছিল। যদিও দুর্নীতির ব্যাপকতার বিষয়ে ক্ষমতাসীন দলের তরফে কেউ কেউ কালেভদ্রে ইঙ্গিত করেন। তবে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য, সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বছরের শেষে এসে মনে হচ্ছে, দুর্নীতি দমন প্রশ্নে বর্ষসেরা মন্তব্য করেছেন। তাঁর কথায়, মন্ত্রী-সচিবেরা সৎ হলে ৫০ শতাংশ দুর্নীতি কমে যাবে।
মন্ত্রী সাপ না মেরে লাঠি ভাঙার চেষ্টা করেছেন। সাধারণভাবে দুর্নীতি আছে সেটা কারও পক্ষে অস্বীকার করা সম্ভব নয়। কিন্তু মুশকিল হলো, দুর্নীতি দমনের কথা এলেই সবার নজর দুদকের দিকে ধাবিত হয়। অথচ সবাই যদি কেবল দুদকের দিকে ভরসা করে, তাহলে দুর্নীতির লাগাম টানা অসম্ভব হবে।
দুর্নীতির বড় অধিক্ষেত্র হচ্ছে সরকারি অফিস-আদালতের ব্যবস্থাপনা। আর মন্ত্রণালয়গুলো এর তদারকির কাজে নিয়োজিত। সেখানে মন্ত্রী-সচিবদের ভূমিকাই মুখ্য। আমরা তো এ রকম খবর পাই না যে কোন কোন মন্ত্রণালয় প্রতি মাসে কতগুলো দুর্নীতির অভিযোগ নিষ্পত্তি করে কী পদক্ষেপ নিয়েছে। বিভাগীয় মামলা দিয়ে দুর্নীতির প্রকোপ কতটা কমানো যাবে, সে বিষয়ে সন্দেহ আছে। ওবায়দুল কাদের যথার্থ বলেছেন যে মন্ত্রীদেরই সংশ্লিষ্ট কাজের তদারক করতে হয়। অন্যথায় কাজের দৃশ্যমান অগ্রগতি হয় না। ঠিকাদারেরাও কাজ করেন না। দায়িত্বশীল ব্যক্তিরাও গাফিলতি করেন।
মন্ত্রীর এই কথায় তাঁর সতীর্থদের পীড়িত বোধ করার কিছু নেই। তবে প্রশ্ন উঠবে, তাঁর নিজের মন্ত্রণালয়ের কাজ কতটা কী হচ্ছে। কিন্তু তাঁর যুক্তি নাকচ করা যাবে না। মন্ত্রিসভার একজন সদস্য হয়েও তিনি যে দুর্নীতির বিষয়টি সামনে এনেছেন, এ জন্য ধন্যবাদ পেতে পারেন। একই সঙ্গে তাঁর দায়িত্বও বেড়ে গেল। কারণ, তাঁকে কথায় না বড় হয়ে কাজে বড় হওয়ার অগ্নিপরীক্ষায় অবতীর্ণ হতে হবে।