চেয়ারম্যান কী বলেন

জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের (এনএইচসি) চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান জনগণের জানমাল ও অধিকার রক্ষার জন্য কখনো কখনো শক্তি প্রয়োগ অপরিহার্য হয়ে পড়ে বলে যে মন্তব্য করেছেন, তা আমাদের উদ্বিগ্ন না করে পারে না। মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে তাঁর দায়িত্ব মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী, সে যে–ই হোক না কেন, তার বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়া। কিন্তু আমরা তাঁর কাছ থেকে সেই ধরনের সাহসী বক্তব্য পাই না।
তিনি একদিকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোর প্রতি রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শক্তি প্রয়োগ করার নির্দেশকে সমর্থন করেন, অন্যদিকে মানবাধিকার যাতে লঙ্ঘিত না হয় সে বিষয়েও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সজাগ থাকতে বলেন। এটি স্ববিরোধী। আইনের চোখে যে অপরাধী, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেবে, সেটাই স্বাভাবিক। তাহলে শক্তি প্রয়োগের প্রশ্ন আসে কেন?
‘শক্তি প্রয়োগ যেন মানবাধিকার লঙ্ঘন না করে’এনএইচসি চেয়ারম্যান যখন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সীমিত শক্তি প্রয়োগের কথা বলছেন, তখন বাস্তবে আমরা কী দেখছি? ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থী, যিনি একটি ইংরেজি পত্রিকার বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিও, আরেক সতীর্থকে নিয়ে মোটরসাইকেলে গেলে পুলিশ আইনের দোহাই দিয়ে তাঁদের নামিয়ে দেয়। কিন্তু দুই পুলিশ সদস্য একই কাজ করার সময় ওই শিক্ষার্থী তাঁদের ছবি তুলতে গেলে তাঁরা ‘পুলিশের জন্য কোনো আইন নেই’ বলে তাঁদের ওপর নির্যাতন চালান। যেখানে পুলিশ ছাত্র ও সাংবাদিকসহ সাধারণ নাগরিকদের ওপর নিয়ত মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটিয়ে চলেছে, সেখানে এনএইচসি চেয়ারম্যানের বক্তব্য ভুল বার্তা দেবে এবং তারা আরও বেপরোয়া হবে।
আন্দোলনের নামে যারা নৃশংসতা ঘটাচ্ছে, তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক, সেটি আমাদেরও দাবি। তাই বলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জনগণকে নিরাপত্তা দেওয়ার নামে এমন কিছু করতে পারে না, যা আইনের পরিপন্থী। এনএইচসি চেয়ারম্যান কি আইনের পরিপন্থী কাজ করতেই সংশ্লিষ্টদের উৎসাহিত করছেন?