জিনিয়া হারবে না

৭ মার্চ সকালে প্রতিদিনের মতো পত্রিকায় চোখ বোলাতে গিয়ে একটা খবরে চোখ আটকে গেল, ‘মেধাবী জিনিয়া কি হেরে যাবেন?’ চাপা হাসির মিষ্টি একটা মেয়ের ছবি। নাম নুসরাত জেরিন জিনিয়া। ছোটবেলা থেকেই নিয়তির নিষ্ঠুর রূপটাই তিনি দেখে আসছেন। টিউশনি করে নিজের পড়াশোনার খরচ জোগানো, সংসারের ব্যয়ভার ও সব প্রতিকূলতাকেই শক্ত হাতে দমন করেছেন তিনি।
আর্থিক সংকট তাঁর মেধা আর অদম্য ইচ্ছাশক্তিকে দমিয়ে রাখতে পারেনি। যার প্রমাণ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো বিদ্যাপীঠ থেকে সিজিপিএ–৩.৯০ নিয়ে স্নাতক পাস। স্নাতকোত্তরেও তার ধারা অব্যাহত রেখেছেন। তাঁর সারা জীবনের কষ্টগুলো আজ যখন সার্থক হওয়ার সময় এসেছে, তখনই তাঁর শরীরে বাসা বেঁধেছে প্রাণঘাতী ক্যানসার।
তিনি হারতে চান না, তাঁর সাজানো হাজারো রঙিন স্বপ্নকে ধূসর হতে দিতে চান না। যে দারিদ্র্যকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে তিনি সমাজে মাথা উঁচু করে বেঁচে থাকার সংগ্রাম করে আসছেন, সেই দারিদ্র্যই কি আজ তাঁকে পরাস্ত করবে?
তাঁর চিকিৎসার জন্য প্রয়োজন ৬০ থেকে ৭০ লাখ টাকা। কিন্তু আমাদের মোট জনগণের তুলনায় টাকার অঙ্কটা অতি নগণ্য। প্রতিদিন প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে কত টাকাই আমরা কতভাবে খরচ করি। আমাদের উড়িয়ে দেওয়া এ টাকাই পারে জিনিয়ার নিভুনিভু করা জীবনপ্রদীপ আবার জাগিয়ে তুলতে।
আমরা মানুষ। অলৌকিক কিছু করার ক্ষমতা আমাদের নেই। কিন্তু আমাদের সবচেয়ে বড় অস্ত্র হলো ভালোবাসা। আসুন, সেই ভালোবাসার তাগিদ থেকেই আমরা একাত্ম হই তাঁর সঙ্গে। অন্তরের অন্তস্তল থেকে তাঁর জন্য প্রার্থনা করি—তিনি অফুরান প্রাণশক্তিতে ফিরে আসুন আমাদের মাঝে।
ইসরাত আরা, ঢাকা।