পদযাত্রা কর্মসূচি

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার আদালতে হাজির হওয়ার দিনটিতে রাজধানীর যান চলাচলে যে বাড়তি চাপ পড়তে পারে, তা নগরবাসীর ধারণার বাইরে ছিল না। রাজধানীবাসীকে এখন আগাম সাত-পাঁচ ভেবে পা ফেলতে হয়। সে কারণে তাঁরা হয়তো আদালতপাড়া ও বিএনপির নেত্রীর বাসভবনে চলাচলের বিষয়টি মাথায় রেখে দিনের পরিকল্পনা করেছিলেন। কিন্তু নগরবাসী উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করেছে যে দৃশ্যত খোদ নৌপরিবহনমন্ত্রী ঠিক ওই দিনই পদযাত্রায় নেতৃত্ব দিলেন। মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ থেকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান পর্যন্ত ওই পদযাত্রা কর্মসূচির কারণে পুলিশ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে যান চলাচল বন্ধ করে দেয়। ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার বলেছেন, ‘নৌপরিবহনমন্ত্রীর পদযাত্রা কর্মসূচির কারণে রাস্তা বন্ধ করে দিতে হয়েছে।’ কিন্তু তিনি এটা প্রকাশ করেননি যে কোন ক্ষমতাবলে তাঁরা রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছেন। আইনসংগতভাবে এ সিদ্ধান্ত নেওয়ার এখতিয়ার তাঁর ছিল কি না।
নৌমন্ত্রীর নেতৃত্বে পদযাত্রা, নগরে অসহনীয় যানজটযদি তর্কের খাতিরে কেউ মেনেও নেন যে খালেদা জিয়াকে গ্রেপ্তারের দাবিতে তাঁর আদালতে হাজির হওয়ার দিনটিতেই নৌপরিবহনমন্ত্রী ও তথ্যমন্ত্রীকে রাস্তার ওপরে ট্রাকে স্থাপন করা মঞ্চে বক্তৃতা করতে হবে এবং পদযাত্রার মতো কর্মসূচিও
দিতে হবে, তা হলেও সরকারের তরফে এই ভাষ্য আসা দরকার যে এ ধরনের কর্মসূচি পালনে সরকারের কোন কর্তৃপক্ষের কাছে এ জন্য কবে কখন অনুমতি চাওয়া হয়েছিল এবং কী শর্তে তা মঞ্জুর করা হয়েছিল। এটা যদি অনুমতিপ্রাপ্ত না হয়,
তাহলে বলতেই হবে যে গ্রেপ্তার হওয়ার দাবি তুলতে গিয়ে তিনি নিজেই আইনের পরিপন্থী কাজ করেছেন।
আমরা জনদুর্ভোগ বাড়িয়ে যেকোনো ধরনের হরতাল, ধর্মঘট, পিকেটিং ইত্যাদি ধরনের রাজনৈতিক কর্মসূচির প্রতিবাদ করে আসছি, সেই অবস্থানের ধারাবাহিকতায় নৌপরিবহনমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন পদযাত্রা কর্মসূচিরও নিন্দা জানাই। এই কর্মসূচি ছিল অপ্রয়োজনীয় ও অসময়োপযোগী।