আশুলিয়ায় ব্যাংক ডাকাতি

ব্যাংক ডাকাতির ঘটনা বাংলাদেশে নতুন নয়। কিন্তু সাভারের আশুলিয়ায় ব্যাংক ডাকাতেরা এতটাই দুর্ধর্ষ যে গুলি করে তিনজন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে হত্যা করেই ক্ষান্ত হয়নি, জনপ্রতিরোধের মুখে তারা গুলি, বোমা চালিয়ে আরও চারজনকে হত্যা করে। গণপিটুনিতে এক ডাকাত মারা যায় এবং আরেকজন আহত হয়। পুলিশের ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজির দাবি, এটি কেবল ব্যাংক ডাকাতি ছিল না। গ্রেপ্তার হওয়া এক আসামি শিবিরের কর্মী বলে জানান তিনি।
ডাকাতদের উদ্দেশ্য ও পরিচয় যা–ই থাকুক না কেন, সেটি খুঁজে বের করার দায়িত্ব আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর। ডিআইজির ভাষ্যমতে এটি যদি ‘ডাকাতির চেয়েও বেশি কিছু’ হয়ে থাকে, তা রোধ করতে তাঁরা কী ব্যবস্থা নিয়েছিলেন? যেকোনো ঘটনা ঘটার পর ব্যাখ্যা দেওয়া কিংবা ঘটনা আড়াল করার চেষ্টা (সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে পয়লা বৈশাখের নারী নির্যাতনের ঘটনা) কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। ডাকাত দলের বেপরোয়া আক্রমণ, পরিকল্পনা ও কৌশল বিবেচনায় নিলে এটা স্পষ্ট যে সরকারি নিরাপত্তা বাহিনীর কাছ থেকে বাধাগ্রস্ত না হওয়ার ব্যাপারে তারা সন্দেহমুক্ত ছিল। উল্লেখ্য, জীবন বাজি রেখে স্থানীয় জনগণ এগিয়ে না এলে ডাকাত দলের সব সদস্যই নির্বিঘ্নে পালিয়ে যেত।
পুলিশ কর্মকর্তার বক্তব্য অনুযায়ী আশুলিয়ার ব্যাংক ডাকাতিতে যদি অত্যাধুনিক অস্ত্র ও বোমা ব্যবহৃত হয়ে থাকে, সেটি আরও বেশি উদ্বেগের বিষয়। প্রশ্ন, এই অত্যাধুনিক অস্ত্র ও বোমাবাজ ডাকাত ঠেকাতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কী পদক্ষেপ নিয়েছে?
মানুষ ব্যাংককেই নিরাপদ স্থান ভেবে অর্থ জমা রাখে। সেখানেও যদি এ ধরনের ডাকাতি হয় এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীরা খুন হতে থাকেন, তাহলে তারা কোথায় ভরসা পাবে? অতীতের ব্যাংক ডাকাতিগুলোর বিচার হলে এবং অপরাধীরা শাস্তি পেলে হয়তো এ নৃশংস ঘটনা এড়ানো যেত।
আশুলিয়ার ব্যাংক ডাকাতির ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক। সেই সঙ্গে ব্যাংকসহ আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা জরুরি।

আরও পড়ুন