সীমান্তজয়ী শেখ হাসিনা

.
.

ডটার অব দি ইস্ট নামে পাকিস্তানের প্রয়াত নেত্রী বেনজির ভুট্টোর একটি বই আছে। আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য উপযুক্ত বিশেষণ কী হতে পারে? ডটার অব বর্ডারস। কারণ, তিনি নিশ্চিতভাবেই এক অনন্যসাধারণ সীমান্তজয়ী। কারণ, তাঁর প্রথম মেয়াদে মিয়ানমারের সঙ্গে স্থলসীমান্ত চুক্তির পূর্ণতা পায়। ভারতের মতো বর্মি পার্লামেন্টও স্থলসীমান্ত চুক্তি অনুসমর্থন করেছিল।
শেখ হাসিনা এই পর্বে ক্ষমতায় এসে ভারত ও মিয়ানমার উভয়কে বুদ্ধিদীপ্ত কূটনীতিতে বিহ্বল করে দিয়ে জাতির জন্য অবিস্মরণীয় সমুদ্রজয় এনে দিয়েছেন। এরপর ভারতের সঙ্গে স্থলসীমান্ত চুক্তির অনুসমর্থনটাও সম্পন্ন করলেন। তাই আজ গণতন্ত্র ও আইনের শাসনের ঘাটতি এক পাশে সরিয়ে রেখে কেবল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রশংসা করব। সহস৶ কণ্ঠে তাঁকে অভিবাদন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে অভিবাদন। বিরোধী দলের নেতা সোনিয়া গান্ধীকেও অভিবাদন। অভিবাদন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকেও, রাষ্ট্রের এই গৌরবে অংশগ্রহণের জন্য। ভারতকে ধন্যবাদ জানাতে তিনি বিলম্ব করেননি।
অবশ্য এটাও বলতে হবে, সীমান্ত নিয়ে বঙ্গবন্ধুর সরকার যে নীতি নিয়েছিল, তা মোটামুটি সবগুলো সরকার সমর্থন করেছে। ভারতীয় বিলের প্রস্তাবনায় চুয়াত্তরের ইন্দিরা-মুজিব চুক্তি ও ২০১১ সালের প্রটোকল ছাড়াও ১৯৮২ ও ১৯৯২ সালের সীমান্ত চুক্তির উল্লেখ করা হয়েছে। জেনারেল এরশাদ ও খালেদা জিয়ার আমলেও স্থলসীমান্তে অগ্রগতি ঘটেছিল। তবে সমুদ্র জয়ে শেখ হাসিনার প্রজ্ঞা ও দূরদর্শিতা নিরঙ্কুশ, এটা তাঁর অমলিন কীর্তি হয়ে থাকবে।
আশা করব প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আসন্ন সফরটি একটি সর্বদলীয় আবহে সম্পন্ন হবে। যেখানে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া ও ২০-দলীয় মোর্চার নেতারা মোদির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে মিলিত হবেন। এ বিষয়ে ক্ষমতাসীন দল সংকীর্ণতার ঊর্ধ্বে উঠতে পারবে। জাতীয় স্বার্থে আমাদের ভারতবিরোধিতার পাকিস্তানি মাইন্ডসেট থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।
কেবল ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের জন্য নয়, নরেন্দ্র মোদি বিশ্ববাসীর কাছে একটি শান্তির বার্তা পৌঁছে দিয়েছেন। দক্ষিণ চীন সমুদ্রকে ঘিরে চীনের সঙ্গে জাপান, ভিয়েতনাম, ফিলিপাইনের সম্পর্ক যখন খাবি খাচ্ছে, ভারত নিজেও ভূখণ্ডগত বিরোধে পীড়িত, তখন বাংলাদেশ, বিশেষ করে ভারতীয় উপমহাদেশে ভূখণ্ডগত বিরোধমুক্ত রাষ্ট্রে রূপান্তরিত হয়ে সৃষ্টি করল নতুন ইতিহাস।
এবং আবারও, কী আশ্চর্য সবার অলক্ষ্যে ধর্মীয় ভেদাভেদনির্ভর দ্বিজাতি তত্ত্ব ভুল প্রমাণিত হলো। কারণ, ভারত তার বৃহৎ প্রতিবেশী চীন ও চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তান ছাড়াও নেপালের সঙ্গে ভূখণ্ডগত বিরোধ মেটাতে পারেনি। ইরাক-ইরান সীমান্ত নিয়েই দশক দীর্ঘ রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ করেছে। কিন্তু হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠের দেশটি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ প্রতিবেশীর সঙ্গে শান্তিপূর্ণভাবে ভূখণ্ডগত বিরোধের নিষ্পত্তি করতে সক্ষম হলো। আসামের মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ। আসাম ভাগ নিয়ে বাড়তি জটিলতার শিকড় কিন্তু ইতিহাসেই। সিলেট ভাগ নিয়েই গণভোট করতে হয়েছিল। আজ আমরা যে সীমান্ত পেলাম, সেটা ঠিক করার কারিগর ছিলেন স্যার সিরিল রেডক্লিফের নেতৃত্বাধীন বাউন্ডারি কমিশনের পাঁচ সদস্য। পরে সুইডেন সুপ্রিম কোর্টের সাবেক বিচারপতি অ্যালগট ব্যাগি, মাদ্রাজ ও ঢাকা হাইকোর্টের দুই বিচারকের সমন্বয়ে করা একটি ট্রাইব্যুনালও কঠোর পরিশ্রম করেছে। আমরা কেবল লাল কালিতে দাগ টেনে সীমান্তরেখা আঁকিয়ে রেডক্লিফের কথাই জানি, অ্যালগট ব্যাগিও আমাদের সীমান্তরেখা টেনেছিলেন। এটা ব্যাগি লাইন হিসেবে পরিচিত। আমি আজ বাউন্ডারি কমিশন ও ট্রাইব্যুনালের আট সদস্য, যাঁদের বেশির ভাগই ভারত ও পাকিস্তানের বিচারপতি ছিলেন, তাঁদের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করি। আর স্মরণ করি দুই রাষ্ট্রের জন্মলগ্নে (১৩ আগস্ট, ১৯৪৭) করা স্যার রেডক্লিফের একটি উক্তি: ‘আসাম ও পূর্ব পাকিস্তানের মধ্যে ভূখণ্ডগত কিছু বিনিময় অবশ্যই ঘটাতে হবে, কিছু অমুসলিম ভূখণ্ড পূর্ববঙ্গে, কিছু মুসলিম ভূখণ্ড আসামে যাবে।’ ৬৮ বছর পরে তাই চূড়ান্তভাবে ফলল।
ঐতিহাসিকভাবে ভূখণ্ডগত বিরোধ বিশ্বশান্তির প্রতি একটি বিরাট হুমকি হিসেবে গণ্য হয়ে আসছে। যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জন এ ভাসকুইজ ও ম্যারি টি হ্যানেহান দেখিয়েছেন, ‘দুই শতাব্দী ধরে বাণিজ্য ও সরকারের ধরনের মতো বিষয় নিয়ে বিরোধের চেয়ে ভূখণ্ডগত বিরোধ নিয়েই পূর্ণাঙ্গ আন্তর্জাতিক যুদ্ধ হয়েছে। ভূমি বিরোধেই অধিকাংশ যুদ্ধের সূচনা ঘটেছে।’ ২০০২ সালে মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক পল কে. হাথ ও টড এল. অ্যালি এক সমীক্ষায় দেখান, ভূখণ্ডগত বিরোধের বিস্তার অতীতের পরিত্যক্ত কোনো বিষয় নয়। ১৯৯৫ সালেও বিশ্বে ৬৭টি ভূখণ্ডগত বিরোধ সক্রিয় ছিল। ১৯৯৯ সালে আরেক গবেষক (অ্যান্ডারসন) দাবি করেছিলেন যে বিশ্বের এক-চতুর্থাংশ ভূমি এবং দুই-তৃতীয়াংশ সমুদ্রসীমা বর্তমানে স্থিতিহীন। এসব তথ্য উল্লেখ করে কলোরাডো বোল্ডার বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. জারোজাভ তির তাঁর রিড্রয়িং দ্য ম্যাপ টু প্রমোট পিস: টেরিটোরিয়াল ডিসপিউট ম্যানেজমেন্ট ভায়া টেরিটোরিয়াল চেঞ্জেস (লেক্সিংটন বুকস, ২০০৬) বইয়ে মন্তব্য করেন যে, ‘সুপ্ত অবস্থায় থাকা ভূখণ্ডগত বিরোধের পরিমাণ তর্ক সাপেক্ষে বরং আরও বেশি।’ আমরা কিন্তু আজ একটি নিখুঁত মানচিত্র পাব।
১৯৫৮ সালে পূর্ব পাকিস্তানের মুসলিম লীগ এবং ভারতের কট্টরপন্থীরা এই সীমান্ত চুক্তি সুনজরে দেখেনি। সেই কট্টর মুসলিম লীগারদের উত্তরসূরিরা আজ ২০-দলীয় জোটে ভর করেছে। আমি নূন-নেহরুর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করি। চুক্তিটা হয়েছিল ১৯৫৮ সালের ১০ সেপ্টেম্বর। টাইম সাময়িকী ২২ সেপ্টেম্বর ১৯৫৮ লিখেছে, ‘এই গ্রীষ্মে পূর্ব পাকিস্তানের দুর্বলভাবে চিহ্নিত থাকা সীমান্তে গোলযোগ ছড়িয়ে পড়ল। এবং আবারও পাকিস্তানি মুসলিম লীগাররা (ভারতের বিরুদ্ধে) পবিত্র যুদ্ধে যেতে হাঁক দিলেন। প্রথাগতভাবে পাকিস্তানের যে রাজনীতিকই ভারতের সঙ্গে সম্প্রীতির সুরে কথা বলবেন, সেটা তাঁর জন্য রাজনৈতিক আত্মহত্যার শামিল বলে গণ্য হতে পারে। কিন্তু দীর্ঘদেহী, অক্সফোর্ড শিক্ষিত অভিজাত ফিরোজ খান নূন, যিনি গত শীতে পাকিস্তানের সপ্তম প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন, তিনি মনস্থির করেছেন যে এ ধরনের দায়িত্বহীন চটকদার বাগাড়ম্বরকে বড় বেশি বাড়াবাড়ি রকমের বাড়তে দেওয়া হয়েছে, এটা আর নয়।’ আমি আজ খালেদা জিয়ার কাছেও একই দৃষ্টিভঙ্গির আরও বেশি জোরালো বহিঃপ্রকাশ আশা করি।
জামায়াতের ভারতকে অভিনন্দন জানানো ইতিবাচক। অন্য ইসলামি দল ও সংগঠনগুলোরও উচিত এতে শরিক হওয়া। আমাদের উচিত হবে পাকিস্তানি ধারার ভারতবিরোধিতার বৃত্ত ভেঙে দিয়ে কেবল বাংলাদেশের জাতীয় স্বার্থের শর্তে প্রয়োজনে ভারতের বিরোধিতা করার বন্ধুত্বপূর্ণ ও গঠনমূলক একটি শক্তিশালী ধারার প্রবর্তন করা। ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা স্বার্থ কেবল আওয়ামী লীগের হাতেই বেশি নিরাপদ, এই ধারণার ছেদ ঘটাতে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষেরই কমবেশি ভূমিকা রাখার সুযোগ আছে। নরেন্দ্র মোদি শেখ হাসিনাকে ফোন করে বলেছেন, ‘আপনার পিতার হাতে যে চুক্তির সূচনা, আপনার আমলেই তার সার্থক পরিণতি।’ কথাটি নিপাট সত্য। কিন্তু আরও বড় সত্য হলো, যে রাজনীতি নরেন্দ্র মোদিকে আজ প্রধানমন্ত্রী করেছে, তার মূলে রয়েছে ভারতের হিন্দুত্ববাদী সংগঠন ‘ভারতীয় জনসংঘ, যেটি আশির দশকে বিজেপিতে মিশে গেছে। রাষ্ট্রীয় সেবক সংঘের রাজনৈতিক সহযোগী হিসেবে ভারতীয় জনসংঘ নূন-নেহরুর মূল চুক্তির প্রচণ্ড বিরোধিতা করেছিল। সংগঠনটি ওই চুক্তি বাতিলে ভারতের সুপ্রিম কোর্টে জোর আইনি লড়াই চালিয়েছিল। চুয়াত্তরের চুক্তি আটান্নর চুক্তির কার্বন কপি। বাংলাদেশ ১০ হাজার একর বেশি জমি পেয়েছে বলে অনেকে অবাক হন। তাঁদের জানা দরকার যে, নূন-নেহরুর সীমান্ত চুক্তি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে যখন শুনানি চলছিল, তখন ভারতের সরকার আদালতকে বলেছে, সংবিধান সংশোধন না করে ১৯৫১ সালের চুক্তির আওতায় আমরা তো ভুটানকে ৩২ বর্গমাইল জায়গা ছেড়ে দিয়েছি, যা ছিল আসাম অংশের।
ভারতের সুপ্রিম কোর্ট পই পই করে বলে দিয়েছিলেন, ইন্দিরা-মুজিব চুক্তি বাস্তবায়নে সংবিধানের সংশোধনী আনার দরকার নেই। কিন্তু ভারতের সংসদ সে কথায় কর্ণপাত করেনি, এটা আমার কাছে একটা মস্ত ধাঁধা হয়ে থাকবে। উপরন্তু এত সময় নিয়েও তারা ভুলভাবে পাস করাল। অথচ বিরোধপূর্ণ এসব ছিটমহল কখনো ভারতের অবিচ্ছেদ্য ভূখণ্ড ছিল না। সুপ্রিম কোর্টের পরামর্শে ভারত নবম সংশোধনী আনার পরে একই বিষয়ে আবারও সংবিধান সংশোধন বিল পাস করে তার লাভটা কী হলো? প্রতিবেশী কোনো দেশ স্বাধীন হলে এবং তার সঙ্গে চুক্তি থাকলে কি আগে থেকে স্বাধীন হওয়া দেশকে তার সংবিধান শোধরাতেই হয়? যে দেশের রাজনীতি সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনাকে এভাবে অগ্রাহ্য (তিনবিঘা স্মরণযোগ্য) করতে পারে, সেখানে জুডিশিয়াল রিভিউ নিয়ে এতটা অহংকার কীভাবে তৈরি হতে পারল? একটি আন্তর্জাতিক চুক্তি করার পরে তার বাস্তবায়নে ৪১ বছরের বিলম্ব বিশ্বের বৃহত্তম গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের রাজনীতিকদের জন্য গৌরবজনক নয়।
গঙ্গা নদী নিয়ে ভারতের সঙ্গে ট্রিটি আছে, আরও ট্রিটি লাগবে। তাই আমাদের ধরে নিতে হবে, ভারতের রাজনীতিটাই শেষ কথা। এই সীমান্ত চুক্তি বিষয়ে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট বাস্তবসম্মত একটি উক্তি করেছেন: ‘ট্রিটি রাজনৈতিক, আদালতের হাতের নাগালের বিষয় এটি নয়।’ তালপট্টি নিয়ে আমরা বিরোধ করেছি। ১৯৭৪ সালেই ইন্দিরা শ্রীলঙ্কার কাছে ‘কাছাতিভু’ দ্বীপের মালিকানার দাবি ত্যাগ করেন। ২০০৮ সালে তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে জয়ললিতা সংবিধান সংশোধন না করে ওই দ্বীপ হস্তান্তর অবৈধ দাবি করে সুপ্রিম কোর্টে রিট করেন। মনমোহনজির সরকার আদালতে সাফ বলেছেন, ওটা সব সময় বিরোধপূর্ণ ছিল। কখনো ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিল না। একই যুক্তিতে ভারত আমাদের ছিটমহলগুলো অনেক আগেই দিতে পারত।
তবে কথা হলো আজ ৬৮ বছর পরে দুই পারের প্রায় ৮৫ হাজার মানুষ ‘স্বাধীনতা’ পেল। দেশে গণতন্ত্র ও আইনের শাসনের যে বিরাট ঘাটতি চলছে, তা মানতে পারি না। কিন্তু সম্ভবত এটা মানতেই হয় যে শেখ হাসিনার জন্যই আমরা আজ ভূখণ্ডগত বিরোধমুক্ত একটি জাতিরাষ্ট্রে পরিণত হতে পেরেছি। এই সাফল্যের চূড়ান্ত দাবিদার নিশ্চয় আমাদের জনপ্রতিনিধি ও নেতারা। কিন্তু এই একটি ক্ষেত্রে সবাইকে ছাপিয়ে যাবেন শেখ হাসিনা। দেশ শাসনে নানা বিপর্যয় চলছে, জনপ্রশাসন যেন ভেঙে পড়ার উপক্রম, বিরোধী দলের প্রতি তাঁর ও তাঁর সরকারের অসূয়াপ্রসূত মনোভাব কঠিন থেকে কঠিনতর হচ্ছে। তদুপরি সীমান্ত জয়ের এই লগ্নে জনগণের নেত্রী শেখ হাসিনা, তাঁর যে সত্তা মানবিক, রাষ্ট্রনায়কোচিত, সেই সত্তার প্রতি আমাদের অভিবাদন।
মিজানুর রহমান খান: সাংবাদিক৷
[email protected]