'সমালোচনা অনভিপ্রেত'

১৩ মে প্রথম আলোর মতামত পাতায় ‘মানব পাচার বন্ধে যৌথ কমিশন গঠন করুন’ শীর্ষক বিশেষ সাক্ষাৎকারটিতে তাসনীম সিদ্দিকী ‘বৈদেশিক কর্মসংস্থান ও অভিবাসী আইন, ২০১৩’ আইনটির দুর্বলতাসহ বিভিন্ন বিষয়ে নেতিবাচক বক্তব্য দিয়েছেন। বিচার-প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে আইনে দুর্বলতা রয়েছে বলে দাবি করেছেন। সত্যিকার অর্থে এ আইনের বিচার-প্রক্রিয়ায় কোনো দুর্বলতা নেই। তবু রামরুর দৃষ্টিতে এ আইনে কোনো দুর্বলতা থাকলে রামরু এ ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট মতামত মন্ত্রণালয়কে জানাতে পারে। ঢালাওভাবে দুর্বলতার কথা প্রচারের কারণে জনমনে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হচ্ছে।
‘বৈদেশিক কর্মসংস্থান ও অভিবাসী আইন, ২০১৩’ অনুযায়ী আইন অমান্যকারীদের যথাযথ শাস্তি আরোপের ব্যবস্থা নেওয়ার বিধান রয়েছে। এ আইনের সব অপরাধের বিচার ভ্রাম্যমাণ আদালতে হয় না। তবে ভ্রাম্যমাণ আদালতের ব্যবস্থা থাকায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিরা তাৎক্ষণিকভাবে বিচার লাভ করে থাকেন। সাক্ষাৎকারে রামরুর চেয়ারম্যান প্রকৃত তথ্য উপস্থাপন না করে মালয়েশিয়ায় জি টু জি চুক্তির সমালোচনা করেছেন। সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার উদ্দেশ্যে মনগড়া তথ্য উপস্থাপন করেছেন।
উল্লেখ্য, ২০০৭ ও ২০০৮ সালে মালয়েশিয়ায় স্বল্পতম সময়ে অপরিকল্পিতভাবে মোট ৪ লাখ ৪ হাজার ৯৬৩ জন কর্মচারী
প্রেরণ করা হয় এবং মালয়েশিয়া সরকার ২০০৯ সাল থেকে বাংলাদেশ থেকে কর্মী গ্রহণ সাময়িকভাবে স্থগিত রাখে। এরপর থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত মালয়েশিয়ায় কোনো কর্মী প্রেরণ সম্ভব হয়নি। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ হাইকমিশনের সামনে হাজার হাজার বাংলাদেশি কর্মী কাজ না পেয়ে অবস্থান নেওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে সেখানে শেল্টার হাউস চালু করতে হয়।
সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের সফল শ্রম কূটনৈতিক প্রচেষ্টার ধারাবাহিকতায় মালয়েশিয়া সরকার বাংলাদেশ থেকে কেবল জি টু জি প্রক্রিয়ায় কর্মী গ্রহণে আগ্রহ প্রকাশ করে। কোনোভাবেই তারা বেসরকারি রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে কর্মী নিতে আগ্রহী না হওয়ায় তাদের প্রদত্ত শর্তানুযায়ী জি টু জি প্রক্রিয়ায় সম্ভাবনাময় এ বিশাল শ্রমবাজারকে পুনরুদ্ধার করার বিকল্প ছিল না। বর্তমানে বিশ্বের ১৬০টি দেশে বাংলাদেশ থেকে জনশক্তি প্রেরণ করা হচ্ছে। তার মধ্যে শুধু মালয়েশিয়ায় জি টু জি প্রক্রিয়ায় কর্মী প্রেরণ করা হচ্ছে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই জি টু জি প্রক্রিয়ার সমালোচনা অনভিপ্রেত ও দুরভিসন্ধিমূলক বলে মনে হয়।
শহিদুল আলম মজুমদার
জনসংযোগ কর্মকর্তা, প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়।