যন্ত্রগুলো নষ্ট কেন

মাসের পর মাস ধরে নষ্ট হয়ে পড়ে আছে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সাতটি গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্র, যেগুলো ছাড়া অনেক রোগ নির্ণয় করা যায় না। রেডিওলজি ও ইমেজিং বিভাগের জন্য ওই যন্ত্রগুলো কেনা হয়েছে অনেক অর্থ খরচ করে, যাতে দরিদ্র জনগোষ্ঠী সরকারি ওই হাসপাতালে গিয়ে স্বল্প খরচে রোগ নির্ণয়ের আধুনিক সুবিধা পেতে পারে। কিন্তু যন্ত্রগুলো নষ্ট হয়ে পড়ে থাকায় রোগীদের বেশি টাকা খরচ করে বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো থেকে রোগ নির্ণয়ের পরীক্ষা করাতে হচ্ছে। এই পরিস্থিতি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
গতকাল প্রথম আলোয় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের দুটি সিটি স্ক্যান যন্ত্রের মধ্যে দুটিই নষ্ট। একই অবস্থা ম্যাগনেটিক রিসোন্যান্স ইমেজিং (এমআরআই) যন্ত্রেরও। কম্পিউটার রেডিওথেরাপির (সিআর) দুটি যন্ত্রের মধ্যে একটি নষ্ট। মূল্যবান যন্ত্রগুলো দীর্ঘ সময় ধরে এভাবে নষ্ট হয়ে পড়ে থাকায় রোগীরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, একই সঙ্গে এসব আধুনিক যন্ত্রপাতি কেনার উদ্দেশ্যও ব্যাহত হচ্ছে। কিন্তু যন্ত্রগুলো মেরামতের ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোনো তাগিদ আছে বলে মনে হচ্ছে না। রেডিওলজি ও ইমেজিং বিভাগে রোগ নির্ণয়ের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাতে এসে রোগীদের ফিরে যেতে হচ্ছে। এসব রোগীর সংখ্যা অনেক: একজন চিকিৎসকের ভাষ্য অনুযায়ী এ সপ্তাহে ২০০ রোগী ফিরে যেতে বাধ্য হয়েছে।
একটি বিভাগীয় সদরের সরকারি হাসপাতালের এই অবস্থা মোটেও গ্রহণযোগ্য নয়। উত্তরাঞ্চলের বিপুলসংখ্যক রোগী রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা নিতে যায়। হাসপাতালের পরিচালক প্রথম আলোকে বলেছেন, নষ্ট যন্ত্রগুলো মেরামত করার জন্য তিনি ঢাকায় বহুবার তাগিদ দিয়েছেন, কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। এটা বিস্ময়কর যে একটি বিভাগীয় সদর হাসপাতালের অতি জরুরি যন্ত্রপাতি নষ্ট হলে সেগুলো মেরামত করার জন্য ওপর মহলের মর্জির ওপর নির্ভর করতে হয়, আর ওপর মহলকে বারবার জানানো সত্ত্বেও তাদের টনক নড়ে না।
আর সময় নষ্ট না করে অবিলম্বে যন্ত্রগুলো মেরামত করার উদ্যোগ নেওয়া হোক।

আরও পড়ুন