পোশাকশিল্পে ঈদের বোনাস

পোশাকশিল্প নাবালক থেকে সাবালক হলো, ঈদের আগে শ্রমিকের বেতন-বোনাসের সমস্যা মিটল না। শ্রমিকের মে দিবসে সব শ্রমিকের ছুটি হয় না, পোশাক বানান যে শ্রমিক, তাঁর সন্তানের গায়ে নতুন জামা ওঠে না। এই পরিহাসের কি শেষ নেই?
রাজধানীর আশপাশসহ পোশাকশিল্প অঙ্গনে ধিকিধিকি অসন্তোষ ও হতাশা। আবারও ঈদ এসেছে, আবারও অনেক কারখানাতেই শ্রমিকেরা ঈদের বোনাস পাচ্ছেন না। আবারও রাজপথে গণমাধ্যমে আবেদন-নিবেদন-প্রতিবাদ, ‘বোনাস দাও, ইনসাফ করো’। সরকার জানত যে সমস্যা হতে পারে। বিজিএমইএ জানত যে কতিপয় মালিক আবারও ফাঁকি দিয়ে শিল্পে অস্থিরতা তৈরি করছেন। ঢাকা ও চট্টগ্রামে অনিয়মের ঝুঁকিতে থাকা কারখানাগুলোর তালিকা প্রণয়ন হলেও কেন প্রতিকারের কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হলো না?
কয়েক বছর যাবৎ ঈদের আগে বেতন-বোনাস দেওয়ার জন্য সরকার ও পোশাকশিল্প মালিকদের সমিতি (বিজিএমইএ) বিভিন্ন রকম অনুরোধ ও নির্দেশ দিয়ে থাকে। এমনকি বোনাস দেওয়ার তারিখও নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু অভিজ্ঞতা বলে, ঈদের ঠিক আগে আগে এমনভাবে তারিখ নির্ধারণ করা হয়, যাতে সরকারি কর্মদিবস ফুরিয়ে যায়। এভাবে সুযোগ পেয়ে অনেক মালিক শ্রমিকদের প্রবঞ্চনা করে শেষ সময়ে লাপাত্তা হয়ে যান। এদিকে আশায় আশায় দিন গুনতে গুনতে একসময় ছুটি শুরু হয়ে যায়। ব্যর্থ মনোরথে শ্রমিকেরা গুমরে মরেন, কিছুই করার থাকে না।
এখানেই সরকারের ভূমিকার প্রশ্ন আসে। এবার সরকার তারিখ নির্ধারণ না করলেও বিজিএমইএ ১০ জুলাইয়ের মধ্যে বেতন ও ১৫ জুলাইয়ের মধ্যে বোনাস পরিশোধের তারিখ নির্ধারণ করেছিল। সেই তারিখ ফুরানোর মুখে। ১৬ জুলাই বৃহস্পতিবার শেষ সরকারি কর্মদিবস। ফলে এবারও অনেক শ্রমিকের প্রতারিত ও বঞ্চিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। শ্রমিকদের পক্ষ থেকে ২০ রোজার মধ্যে বেতন-বোনাস পরিশোধের দাবি বহুদিনের। এই দাবি বাস্তবসম্মত ও ন্যায্য।
তৈরি পোশাকশিল্পের শ্রমিকদের ঈদের আগে পুরো বেতন ও বোনাস নিশ্চিত করায় এ মুহূর্তেই সরকারের হস্তক্ষেপ চাই।