বিমানবন্দরে সন্ত্রাসীদের হামলা

একদল সন্ত্রাসী ১০ আগস্ট দুপুরে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টমসের কার্গো কমপ্লেক্সে কীভাবে হামলা চালিয়ে পণ্য ছিনতাই করতে পারে, তা অচিন্তনীয়। মাত্র তিন মাস আগেও একই কায়দায় এ রকম হামলা চালানো হয়েছিল। দেশের প্রধান বিমানবন্দরে কি তাহলে নিরাপত্তা বলতে কিছু নেই? এলাকাটি কেপিআই, অর্থাৎ আনুষ্ঠানিকভাবে সর্বোচ্চ নিরাপত্তার আওতায় রয়েছে। গোয়েন্দা সংস্থা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ ২২টি সংস্থার কঠোর নজরদারির মধ্যে যদি বিমানবন্দরে সন্ত্রাসী হামলা চালানো যায়, তাহলে দেশের কোন এলাকাটি নিরাপদ?
যুবলীগের নেতার পরিচয়ে এক ব্যক্তি ও তাঁর দলবল নাকি বিমানবন্দরের ভেতর ঢুকে অবাধে হামলা-ভাঙচুর-লুটপাট চালাচ্ছেন। তাঁদের বিরুদ্ধে আগেও মামলা হয়েছে, এবারও হয়েছে। কিন্তু তাঁরা এতই দুর্দমনীয় যে কিছুই হয় না। দু-একজন গ্রেপ্তার হলেও অনায়াসে জামিনে বেরিয়ে এসে আগের মতোই তাণ্ডবলীলা চালিয়ে যেতে পারেন। গত সোমবার ঘটে যাওয়া এই ঘটনার পর এখনো আট আসামির কাউকেই গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
শাহজালাল বিমানবন্দরে হামলা চালিয়ে পণ্য ছিনতাইস্মরণযোগ্য যে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল এভিয়েশনের শর্ত পূরণে ঘাটতি থাকায় বাংলাদেশের বিমান উড্ডয়ন রেটিং প্রথম ক্যাটাগরি থেকে দ্বিতীয় ক্যাটাগরিতে নেমে এসেছে। ফলে এখন যুক্তরাষ্ট্রের আকাশে বাংলাদেশের বিমান প্রবেশ করতে পারে না। শর্ত পূরণ করে আবার প্রথম ক্যাটাগরিতে ওঠার চেষ্টা করছে বাংলাদেশ। এ অবস্থায় বিমানবন্দরে নিরাপত্তা ঝুঁকি বাড়লে আন্তর্জাতিক সিভিল এভিয়েশন অথরিটির (আইসিএএ) কাছেও একটি নেতিবাচক বার্তা যাবে। যুক্তরাষ্ট্রে বিমানের প্রথম ক্যাটাগরির সুযোগ অর্জনের সম্ভাবনার পথেও সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে।
বিমানবন্দর একটি দেশের প্রবেশদ্বার। সেখানে যদি সোনা চোরাচালান, মারধর, ভাঙচুর, কার্গো কমপ্লেক্স থেকে মালামাল ছিনতাই, শুল্ক কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে জীবনের হুমকি চলতে থাকে, তাহলে বিশ্বের চোখে এটি একটি অনিরাপদ বিমানবন্দর হিসেবে চিহ্নিত হতে পারে। অবিলম্বে সন্ত্রাসীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। বিমানবন্দরে আর কোনো অরাজকতা চলতে দেওয়া যাবে না।