জলবায়ু পরিবর্তন জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি

এ এন এম মুনিরুজ্জামান
এ এন এম মুনিরুজ্জামান
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব পিস অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজের (বিআইপিএসএস) সভাপতি মেজর জেনারেল (অব.) এ এন এম মুনিরুজ্জামান ২০১২ থেকে হেগভিত্তিক গ্লোবাল মিলিটারি অ্যাডভাইজরি কাউন্সিল অন ক্লাইমেট চেঞ্জের (জিএমএসিসিসি) চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক টেলিভিশন ও গবেষণা সংস্থা ওয়েদার চ্যানেল বিশ্বের শীর্ষ প্রভাবশালী ২৫ জলবায়ু–বিষয়ক কণ্ঠস্বরের যে তালিকা সম্প্রতি প্রকাশ করেছে, তাতে এশিয়া থেকে শুধু তিনিই রয়েছেন। ৩৮ বছরের সামরিক পেশাগত জীবনে তিনি যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, চীন, ভারত ও পাকিস্তানে উচ্চতর প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। বর্তমানে তিনি জাতিসংঘের বিশ্ব নিরাপত্তা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা–বিষয়ক কোর গ্রুপের অন্যতম সদস্য হিসেবেও কাজ করছেন

প্রথম আলো : জলবায়ু পরিবর্তন বাংলাদেশের সার্বিক জাতীয় নিরাপত্তার ওপর কী ধরনের চাপ সৃষ্টি করছে?
মুনিরুজ্জামান : জলবায়ু পরিবর্তন যেসব দেশকে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় ফেলবে, তার মধ্যে প্রথম সারিতে আছে বাংলাদেশ। আমরা যে বদ্বীপে আছি এবং সমুদ্রের সঙ্গে যে সম্পর্ক, তাতে আমরা খুব নাজুক পরিস্থিতিতে আছি। এর বিরূপ প্রভাব এমন চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে যাচ্ছে, যা জাতীয় নিরাপত্তায় হুমকি হিসেবে দেখা দিতে পারে। বাংলাদেশের দক্ষিণে সমুদ্রের স্তর যদি এক মিটার বাড়ে, তাহলে আইপিসিসির প্রাক্কলন অনুযায়ী বাংলাদেশের ১৭ থেকে ২০ শতাংশ জমি সমুদ্রে বিলীন হয়ে যাবে। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে যে জাতীয় কৌশলপত্র প্রণয়ন করা হয়, তাতে প্রায় ২ কোটি জলবায়ু উদ্বাস্তু হওয়ার কথা বলা হয়েছে। আমরা অনুমান করতে পারি, এত ছোট দেশে যদি ২০ শতাংশ জমি সমুদ্রে চলে যায়, এবং যদি প্রায় ২ কোটি মানুষ উদ্বাস্তুতে পরিণত হয়, তাহলে তাদের দেশের মধ্যে অন্যত্র স্থানান্তরের সুযোগ নেই। শহর এলাকায় জনসংখ্যার চাপ আরও বাড়বে। সামাজিক মৈত্রী ভেঙে পড়তে পারে। ঢাকায় দেড় কোটি লোক আছে। এখানে যদি আরও ২০ লাখ লোক আসার চেষ্টা করে, তাহলে ঢাকা এটা সহ্য করতে পারবে না। তাই সামাজিক শৃঙ্খলা ভেঙে পড়ার হুমকি দেখা দেবে।
প্রথম আলো : বাংলাদেশিদের বিদেশে যাওয়ার মরণপণ চেষ্টা আমরা দেখতে পাই। থাইল্যান্ডের গণকবর, ভূমধ্যসাগর থেকে সার্বিয়া সীমান্ত—সর্বত্র তারা ইতিমধ্যে বেপরোয়া।
মুনিরুজ্জামান : তারা প্রথমে আমাদের প্রায় তিন দিক থেকে ঘিরে থাকা ভারতে যাওয়ার প্রবণতা দেখাবে। কিন্তু ভারত কাঁটাতারের বেড়া দিয়েছে এবং সীমান্তে মানুষ হত্যার ঘটনা ঘটছে, তারপরও যদি কেউ দেশটিতে প্রবেশের চেষ্টা করে, তখন তারা সশস্ত্রভাবে প্রতিহত করতে পারে। আর বিদেশে যারা যাচ্ছে, সেই স্তরের লোকেরা এখনো জলবায়ু পরিবর্তনের কথা চিন্তায় আনতে পারছে বলে মনে হয় না। যারা যাচ্ছে, তারা অর্থনৈতিক অভিবাসী।
প্রথম আলো : যেভাবে ভারত সীমান্ত চলাচলকে প্রতিহত করে চলছে, তাতে এই বার্তাই স্পষ্ট কি না যে বাংলাদেশ যেন ভুলেও যেকোনো উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ভারতকে সম্ভাব্য আশ্রয়স্থল হিসেবে না ভাবে।
মুনিরুজ্জামান : তারা ভবিষ্যতে যে সমস্যাটা আসতে পারে, সেটা এখন থেকেই বুঝতে পারছে। সেটা ভেবেই প্রতিনিয়ত তারা সীমান্তে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করার মাধ্যমে বিষয়টা বুঝিয়ে দিচ্ছে। সমস্যাটা যাতে কখনো তাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে না যায়, সে জন্য তারা এখন থেকে শক্ত অবস্থান নিয়েছে। এ ছাড়া আমরা এখন ইউরোপে যে ধরনের উদ্বাস্তু-সমস্যা দেখতে পাচ্ছি, তাতে বোঝা যায়, কোনো দেশই ভিন্ন কোনো দেশের উদ্বাস্তুকে গ্রহণ করতে চাইবে না। উপরন্তু, বাংলাদেশে যখন উদ্বাস্তু সংকট তৈরি হবে, তখন ভারতেরও বহু অঞ্চলে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বিরূপ প্রভাব সৃষ্টি হবে। ভারতের নিম্ন ও প্লাবনভূমিতে বিরাট বিরূপ প্রতিক্রিয়া পড়বে।
প্রথম আলো : মিয়ানমারে কি প্রভাব পড়তে পারে? সেখানেও এমনটা ঘটলে আরও রোহিঙ্গা কি বাংলাদেশে আশ্রয় নেবে?
মুনিরুজ্জামান : সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বেড়ে যাওয়ার কারণে আরাকানসহ মিয়ানমারের বহু এলাকা সমুদ্রে তলিয়ে যাবে। বাংলাদেশেরটা হবে অনেক বড়। কারণ দেশ ছোট, মানুষ বেশি। বহু দেশ যারা একইভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে, তারা বড় দেশ হওয়ার কারণে অভ্যন্তরীণ স্থানান্তরের মাধ্যমে সমস্যা মোকাবিলা করবে, যা বাংলাদেশ পারবে না।
প্রথম আলো : জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবকে মূলত কীভাবে বিবেচনায় নেওয়া সমীচীন হবে?
মুনিরুজ্জামান : একে সম্পূর্ণভাবে নিরাপত্তা ঝুঁকি হিসেবে দেখতে হবে। বিশ্বে কয়েক হাজার উদ্বাস্তু সৃষ্টি হলেই নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয়ে যায়। যেটা আমরা সিরিয়ার ক্ষেত্রেও দেখতে পাচ্ছি। এটা নতুন মাত্রা। আর এভাবে বিশ্বের বেশির ভাগ দেশ তাদের কৌশলে পরিবর্তন আনছে। চোখের সামনে এটা ঘটতে যাচ্ছে। কিন্তু প্রস্তুতি নেওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এখনো পিছিয়ে আছে। খাদ্যনিরাপত্তায় বড় চাপ আসছে। ২০ শতাংশ জমি যাবে, জনসংখ্যা বাড়বে। আর লবণাক্ততা যেটা বাড়বে, তার ফলে উৎপাদনশীলতা হ্রাস পাবে। ইতিমধ্যে মিঠা পানির জলাধারেও লবণাক্ততা এসে যাচ্ছে। তাই খাদ্য উৎপাদনে যে সক্ষমতা এখন আছে, সেখানে বিরাট চাপ সৃষ্টি হবে। ২০৫০ সালের মধ্যে যে চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা আছে, সেটা ৮ শতাংশ কমে যাবে। গম উৎপাদন কমবে ৩২ শতাংশ। তখন এর ওপরে কৃষিজমি কমবে, মানুষ বাড়বে। সুতরাং খাদ্যনিরাপত্তা যেটা এখন আছে, সেটা জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে আমরা হয়তো ধরে রাখতে পারব না। আর বিভিন্ন সমীক্ষা ও গবেষণা থেকে পরিষ্কার যে খাদ্যনিরাপত্তাহীনতার কারণে রাষ্ট্রের নিরাপত্তা ও রাষ্ট্রের স্থিতিশীলতা, এমনকি আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা বিঘ্নিত হয়ে যায়।
প্রথম আলো : এর পক্ষে কোনো উদাহরণ দেওয়া যায়?
মুনিরুজ্জামান : তিউনিসিয়ায় যখন বিপ্লবটা শুরু হলো, তার প্রধান কারণ দেশটির খাদ্যনিরাপত্তায় বিরাট চাপ সৃষ্টি হয়েছিল। আমি কৌতূহলোদ্দীপক একটি গবেষণার কথা বলতে চাই; যাতে বলা হয়েছে, এর শুরুটা হয়েছিল রাশিয়াতে। খরার কারণে রাশিয়ার গম উৎপাদন কমে গিয়েছিল। তখন তারা গম রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে। এর ফলে তিউনিসিয়ার গম আমদানি হঠাৎ করে কমে যায়। এবং সেখানে খাদ্যের দাম বেড়ে যায়। যার কারণে সেখানে খাদ্যদাঙ্গা বাধে। আর তাতে যে অস্থিতিশীলতা দেখা দেয়, সরকার তা কঠোরভাবে প্রতিহত করার চেষ্টা করে। এবং সেই অসন্তোষের সূত্রেই সেখানে সরকারবিরোধী আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। তাই গবেষকেরা বলছেন, আরব বসন্তের সূচনার পেছনে কাজ করেছে খাদ্যনিরাপত্তাহীনতা। আর সেই আরব বসন্তই গোটা মধ্যপ্রাচ্যে ছড়িয়ে গিয়ে সিরিয়ায় ভয়ংকর রূপ নিয়েছে।
প্রথম আলো : বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে আপনি কী ধরনের পূর্বাভাস দিতে চান?
মুনিরুজ্জামান : এখানে খাদ্যনিরাপত্তায় চাপ সৃষ্টি হলে অভ্যন্তরীণ স্থিতিশীলতা ধরে রাখা কঠিন হবে। কারণ, খাদ্য মানুষের মৌলিক প্রয়োজন। তখন তারা প্রতিবাদ করে এবং বিভিন্নভাবে রিক্রুট হয়ে যেতে পারে। পরিসংখ্যানগত দিক দিয়ে এটা প্রমাণিত যে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশের খাদ্যনিরাপত্তা নষ্ট হবে, সেটার জন্য আমাদের ওপর বড় ধরনের নিরাপত্তা চাপ আসবে, যা আর খাদ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না। এর ওপরে পানির নিরাপত্তায় বিরাট চাপ আসবে। বাংলাদেশে সুপেয় পানির বিরাট ঘাটতি দেখা যাচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণেই পানির চক্রগুলো বদলে যাচ্ছে। যখন পানি আসার কথা, তখন পর্যাপ্ত পানি আসছে না। একই সঙ্গে নিম্ন অববাহিকার দেশ হওয়ার কারণে উজান থেকে যে প্রবাহ আসার কথা, সেটাও আসছে না। সেখানে নানা বাধা সৃষ্টি হয়েছে এবং আরও হতে যাচ্ছে। আন্তনদীসংযোগ প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে তার আরও অবনতি ঘটাবে। বড় একটা এলাকায় মরুকরণ ঘটাবে। আমরা বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম নদীমাতৃক বদ্বীপ। পানি শুধু মানুষের জীবন–জীবিকার জন্য নয়, পুরো ইকোসিস্টেমকে বাঁচাতে লাগে। এটা বেশি দিনের ব্যাপার নয়, খুব অল্প সময়ের মধ্যে পরিবেশে মারাত্মক বিপর্যয় ঘটতে পারে। সুন্দরবনে লোনা পানি ভেতরে চলে আসছে, এ কারণে অনেক গাছ মরে যাচ্ছে, সমুদ্রের স্তর বাড়ার কারণে এর একটা অংশ তলিয়ে যাবে এবং যাচ্ছেও। সুন্দরবন দুর্যোগ ঠেকায়, তখন আর ঠেকাবে না। সিডর, আইলা হয়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ আরও বাড়বে। মানুষের জীবন, জীবিকা ও স্বাস্থ্যের ওপর চাপ বাড়তে থাকবে। পানিবাহিত রোগ বাড়ছে। জনগণের জীবন ও মানের ওপর চাপ বৃদ্ধি পেয়ে চলেছে। চিকিৎসা সাময়িকী ল্যানসেট বলছে, সাত কোটির বেশি মানুষ আর্সেনিকে আক্রান্ত হচ্ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, এটা বিশ্বের বৃহত্তম গণবিষক্রিয়ার ঘটনা। দুর্ভাগ্য হলো, আমরা এর গভীরে যাচ্ছি না। কারণ, আপাতদৃষ্টিতে আমরা ভালো আছি।
প্রথম আলো : জনজীবন এভাবে ভঙ্গুর হয়ে পড়া কী করে জঙ্গিবাদ বা সন্ত্রাসবাদ বৃদ্ধিতে প্রভাব ফেলতে পারে?
মুনিরুজ্জামান : মানুষের জীবন যখন ভঙ্গুর ও নিরাপত্তাহীন হয়ে পড়ে, তখন তাদের বিভিন্ন ধরনের অবৈধ তৎপরতার সঙ্গে যুক্ত করা সহজ হয়। আন্তর্জাতিক অপরাধী গোষ্ঠীগুলো তাদের নিয়োগ করার প্রবণতা দেখিয়ে থাকে, যার আলামত ইতিমধ্যে দেখতে পাচ্ছি। যেমন রোহিঙ্গারা নিয়োগ পেতে শুরু করেছে। মাদক ও আদম পাচারে তারা যুক্ত হচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তন যত বেশি লোককে নিরাপত্তাহীন করবে, তত বেশি লোককে বেআইনি কাজে নিয়োগের আশঙ্কা বাড়বে। যেহেতু আমরা উদ্বাস্তু পুনর্বাসন করতে পারব না, তাই সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলো তাদের ভাড়া করবে, এটা ঠেকানোর বাইরে চলে যাবে। রাষ্ট্রের নিরাপত্তায় জলবায়ু পরিবর্তন তাই বিরাট হুমকি হিসেবে আসছে। ফলে রাষ্ট্রের স্থিতিশীলতা বিঘ্নিত হতে পারে। অন্য যেকোনো দেশের চেয়ে বাংলাদেশে এটা আগে ঘটার আশঙ্কা বেশি। বিশ্বের যেখানেই জলবায়ু নিয়ে আলোচনা হয়, সেখানেই বাংলাদেশ থাকে। সম্প্রতি প্যারিসে ৮০টির বেশি দেশের প্রতিনিধিরা এসেছিলেন; সেখানেও বাংলাদেশ আলোচনার শীর্ষে ছিল। সামনে যে সম্মেলনে শুরু হচ্ছে, সেখানেও সবার নজরে আমরা থাকব। এবং আমিও তাতে যোগ দিচ্ছি।
প্রথম আলো : আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বিষয়টিকে কীভাবে দেখে?
মুনিরুজ্জামান : তারা কাগজে-কলমে বাংলাদেশ যে প্রস্তুতি বা রূপকল্প নিয়েছে, তাকে ইতিবাচক হিসেবে মনে করে। কিন্তু তা বাস্তবায়নে যত অর্থসম্পদ দরকার, তা আমাদের হাতে নেই। এটা রাষ্ট্রের ক্ষমতার বাইরে। এ জন্য বৈশ্বিক যে সহায়তাকাঠামো তৈরির কথা, তা এখনো আমরা দেখতে পাই না। এটা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের বড় ব্যর্থতা।
প্রথম আলো : সরকারের কী করা উচিত?
মুনিরুজ্জামান : তার এ ব্যাপারে আরও সোচ্চার হওয়া উচিত। মানবিক বিপর্যয় বললে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় অনেক সময় গা করে না। কিন্তু রাষ্ট্রীয় ও আঞ্চলিক নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার কথা বললে তারা সক্রিয়তা দেখায়। সরকারকে বোঝাতে হবে, এখানে নিরাপত্তা বিঘ্নিত হলে তা কেবল দেশে আটকে থাকবে না, সীমান্তের বাইরে যাবে। বিশ্বের বহু স্থানে তা দ্রুত পৌঁছে যেতে পারে। একটা ছোট রোগ মহামারির রূপ নিতে পারে আর তা বিশ্বের বিমান রুট থেকে অনেক কিছুকেই নিরাপত্তাহীন করে দিতে পারে। আফ্রিকায় ছোট আকারে দেখা দেওয়া ইবোলা সমগ্র বিশ্বের যাতায়াতব্যবস্থাকে অচল করে দিয়েছিল। বাংলাদেশের বড় ভয় জনগোষ্ঠী, এখানে যা-ই হবে, মেগা স্কেলে হবে। হাজার লাখে নয়, যা-ই ঘটবে, কোটির হিসাবে হবে। সামাল দেওয়া যাবে না। সে কারণেই সব ফোরামে বাংলাদেশ থাকছে।
প্রথম আলো : বাংলাদেশের কি কোনো জলবায়ু-বিষয়ক বিশেষ রাষ্ট্রদূত আছেন? প্রধানমন্ত্রীর প্যারিস সফর বাতিল করা কি ঠিক ছিল?
মুনিরুজ্জামান : না, নেই। নিয়োগ দেওয়া উচিত। বিশ্বের বহু দেশ এটা দিয়েছে। প্যারিসে প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতি খুবই দরকার ছিল। জাতীয় কৌশলপত্র যেটা আছে, সেখানে নিরাপত্তার হুমকিগুলো যথাযথভাবে আসেনি। যেমন ২ কোটি মানুষের উদ্বাস্তু হওয়ার কথা আছে, কিন্তু তার প্রভাব কী হবে, দেশের ওপর কী চাপ আসবে, তার উল্লেখ সেখানে নেই। বিশ্বের অন্যত্র আলোচনা ও উদ্বেগ আছে, কিন্তু বাংলাদেশে এমন কোনো দলিলপত্র আমি দেখিনি, যেখানে এর উল্লেখ আছে।
প্রথম আলো : আপনাকে ধন্যবাদ।
মুনিরুজ্জামান : ধন্যবাদ।