ত্বকী হত্যার পরের তিন মাস

তানভীর মুহাম্মদ ত্বকীর পরিবার, স্থানীয় লোকজন ও জনপ্রিয় রাজনীতিবিদেরা পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জের প্রভাবশালী শামীম ওসমান পরিবারের প্রতিই অভিযোগ করেছেন। অথচ পুলিশ এখন পর্যন্ত তাঁদের কাউকেই জিজ্ঞাসাবাদ করেনি। আটক তিন সন্দেহভাজনের কাছ থেকেও বিশেষ তথ্য বের করতে পারেনি বলে জানিয়েছে পুলিশ। ত্বকীর বাবার অভিযোগ, ত্বকী নিখোঁজ হওয়ার পরপরই র‌্যাব-পুলিশের কাছে শামীম ওসমান পরিবারের বিশেষ একটি ভবনে সন্ধান চালানোর জন্য আরজি জানিয়েও কাজ হয়নি। মঙ্গলবারের প্রথম আলোর সংবাদে পুলিশের সূত্রের বরাতে বলা হয়েছে, মূল অভিযুক্তদের পক্ষে শক্তিশালী রাজনীতিকেরা প্রভাব খাটানোয় পুলিশ কাজ করতে পারছে না। পুলিশ কর্মকর্তারা মনে করেন, শীর্ষ পর্যায়ের রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত ছাড়া এ মামলার তদন্ত এগোনো কঠিন। বুঝতে কারোরই বাকি থাকার কথা নয় যে বাধা কোথায়।

ত্বকীর বাবা রফিউর রাব্বির পরিচয়, তিনি এলাকার সাংস্কৃতিক সংগঠক এবং নাগরিক আন্দোলনের নেতা। বিভিন্ন সময় জনস্বার্থের আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়ার কারণে তিনি এলাকার প্রতাপশালী শামীম ওসমান পরিবারের বিরাগভাজন হন। অতীতে এ রকম বিরোধের জেরে বেশ কয়েকজনই ত্বকী-হত্যার পদ্ধতিতে খুন হয়েছেন, যাঁদের মধ্যে একজন তরুণ নাট্যকারও রয়েছেন। সুতরাং ত্বকী হত্যা নারায়ণগঞ্জের জনস্বার্থ বনাম গোষ্ঠীস্বার্থের বিরোধের ফল বলে ভাবার অবকাশ আছে।

ত্বকী হত্যার বিচারের দাবিতে গড়ে ওঠা নারায়ণগঞ্জের নাগরিক আন্দোলনের বিরুদ্ধে শামীম ওসমান স্বয়ং হুমকিধমকি দিয়ে বেড়াচ্ছেন। হত্যার আলামত এবং হত্যা-পরবর্তী ঘটনায় স্পষ্ট যে ত্বকী হত্যার সুতোটি কোথায় বাঁধা এবং সেই সুতার রক্ষক কারা। হত্যার কী বিচার হয় তা দেখার অপেক্ষায় দেশবাসী। নগ্ন দলবাজির কাছে বিচারের বাণী কি বোবা কান্না কেঁদে যাবে?