বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরের নতুন যাত্রা

গত বৃহস্পতিবার থেকে পঞ্চগড় জেলার বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে মানুষ চলাচল শুরু হওয়া উভয় দেশের জনগণের জন্য যারপরনাই আনন্দদায়ক ঘটনা। এই মুহূর্তটির জন্য বহুদিনের প্রতীক্ষা ছিল বিশেষত বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোর মানুষের। আমরা পঞ্চগড় থেকে সংবাদ পেয়েছি, বৃহস্পতিবার ইমিগ্রেশন চালু হওয়ায় জনসাধারণের মধ্যে ব্যাপক আনন্দ-উল্লাস লক্ষ করা গেছে। ভারতীয় অংশের জনগণেরও একই রকমের আনন্দ প্রকাশের খবর পাওয়া গেছে পশ্চিমবঙ্গের সংবাদমাধ্যমে।
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে অর্থনৈতিক সহযোগিতা সম্প্রসারণের প্রসঙ্গে যে ‘কানেকটিভিটি’ বা সংযোগের প্রসঙ্গ উচ্চারিত হয়, আমরা সেটাতে মানুষে–মানুষে যোগাযোগের ওপর সবিশেষ গুরুত্ব দিতে চাই। সাধারণ মানুষের পর্যায়ে মেলামেশা ও আদান-প্রদানের মধ্য দিয়েই প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে মৈত্রী ও সৌহার্দ্য বৃদ্ধি পায়। সীমান্তের উভয় পাশের মানুষের মধ্যে আদান-প্রদান ও মেলামেশার সুযোগ সম্ভাব্য সব পন্থায় বাড়ানোর গুরুত্ব অপরিসীম। তবে, এ ক্ষেত্রে বাড়তি গুরুত্ব হচ্ছে এই বাংলাবান্ধার মাধ্যমেই নেপাল ও ভুটানের সঙ্গেও স্থলপথে যোগাযোগ প্রতিষ্ঠা হওয়ার কথা। আমরা আশা করব, চারটি দেশের নাগরিেকরা এই সুবিধা পুরোপুরি পাবেন। তাহলেই কানেকটিভিটি বা সংযোগ নতুন মাত্রা পাবে।
এখন দুই দেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্যের আরও প্রসারের পাশাপাশি শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পর্যটন খাতের অগ্রগতির পথ খুলে গেল। অবশ্য সে জন্য আমাদের কিছু অবকাঠামো সম্প্রসারণ করতে হবে। বিশেষত, আমাদের উত্তরের জেলাগুলো থেকে বাংলাবান্ধা যাওয়া-আসার সড়কপথ বাড়াতে হবে। পঞ্চগড় শহরের মধ্য দিয়ে একটি মাত্র মহাসড়ক দিয়েই এখন পর্যন্ত সব যানবাহন চলাচল করে। বাইপাস সড়ক নির্মাণের কাজ প্রক্রিয়াধীন আছে, তা ত্বরান্বিত করা জরুরি। পঞ্চগড় থেকে বাংলাবান্ধা পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণের প্রক্রিয়াও ত্বরান্বিত করা প্রয়োজন
ব্যবসা-বাণিজ্যের ব্যাপক প্রসার ও পর্যটনশিল্পের অভাবনীয় বিকাশের যে সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে, তা যথাযথভাবে কাজে লাগানোর জন্য সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে উদ্যোগ নিতে হবে। অবকাঠামোগত সুবিধাগুলো নিশ্চিত করতে হবে সরকারকে; আর বেসরকারি খাতকে এগিয়ে আসতে হবে বিনিয়োগের উদ্যোগ নিয়ে। বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরের ইমিগ্রেশন সুবিধার সর্বোচ্চ সদ্ব্যবহারের প্রতি মনোযোগী হওয়া প্রয়োজন।