পরিবেশ বনাম উন্নয়ন ও রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প

রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প সুন্দরবনকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে
রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প সুন্দরবনকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে

রাশিয়ায় অক্টোবর বিপ্লবের নেতা ও সোভিয়েত সমাজতন্ত্রের প্রতিষ্ঠাতা ভি আই লেনিন বলছিলেন, সোভিয়েত যোগ বিদ্যুৎ হচ্ছে কমিউনিজম। সোভিয়েত হলো শাসনব্যবস্থার একটি রূপ। অন্যদিকে ‘বিদ্যুৎ’ কথাটির দ্বারা অর্থনৈতিক উন্নয়ন বোঝানো হয়েছে। পুঁজিবাদী হোক আর সমাজতন্ত্রই হোক, আজকের পৃথিবীতে বিদ্যুৎ ছাড়া উন্নয়ন ভাবাই যায় না। আমার মনে পড়ে, আমি যখন যশোরে ক্লাস ফাইভে পড়তাম, ১৯৫২ সালে, তখন রাতে হারিকেনের আলোতে পড়তাম। এখন জেলা শহর কেন, গ্রামাঞ্চলেও বিদ্যুৎ গেছে। বিদ্যুৎ কেবল ঘরের আলোর জন্যই নয়, কৃষিকাজে সেচের জন্যও বিদ্যুৎ লাগে। বিদ্যুতের চাহিদা প্রতিদিন বাড়ছে। তাই বিদ্যুৎ উৎপাদন বর্ধিত হারে দরকার। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য পরিবেশকে ক্ষতিগ্রস্ত করা কি গ্রহণযোগ্য হবে? হ্যাঁ, যেকোনো উন্নয়নমূলক কাজে রাস্তাঘাট, কলকারখানা নির্মাণের জন্য প্রকৃতি ও পরিবেশকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে হবে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, কতটা? এখানে একটা সীমার কথা বলেছেন লেনিন এবং তাঁর আগে মার্ক্স অ্যাঙ্গেলস। প্রকৃতির দ্বন্দ্ববাদ শীর্ষক গ্রন্থে ফ্রেডরিক অ্যাঙ্গেলস বলছেন, ‘প্রকৃতির ওপর আমাদের বিজয় নিয়ে নিজেদের গর্বিত ভাবার দরকার নেই। কারণ, প্রতিটি বিজয়ের পর প্রকৃতি প্রতিশোধ নেয়। প্রথম দফায় আশানুরূপ ফল পাওয়া যেতে পারে, কিন্তু দ্বিতীয় ও তৃতীয় দফায় ফলাফলটা হয় অন্য রকম, যা প্রায়ই প্রথম ফলকে বাতিল করতে পারে।’
লেনিনের দেশ সোভিয়েত ইউনিয়নে ত্রিশের দশকে যখন উন্নয়নমূলক কাজ শুরু হয়েছিল বিশাল আকারে, তখনো তারা পরিবেশের প্রতি যত্নবান ছিল। বিশেষ করে বনাঞ্চল রক্ষার জন্য খুবই সতর্ক ছিল। কমিউনিস্টবিদ্বেষী জার্মান গবেষক ডির্ক ভ্যান লক সোভিয়েতের প্রথম যুগের বিশালাকার প্রকল্পগুলোর সমালোচনা করে একটি বই লিখেছিলেন শ্বেতহস্তী শিরোনামে। কিন্তু তিনিও এ কথা স্বীকার করেছেন যে সোভিয়েত বিদ্যুৎ উৎপাদন ছিল প্রধানত জলশক্তির ওপর নির্ভর করে, যা আবার অন্যত্র কৃষি ও শিল্পে কাজে লাগানো হয়েছিল। ২০১০ সালে মিসিসিপি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক স্টিফেন ব্রেইন (তিনি কোনোভাবেই সমাজতন্ত্রী নন) ‘স্তালিনের পরিবেশবাদিতা’ শীর্ষক এক তাৎপর্যপূর্ণ প্রবন্ধে দেখিয়েছেন যে স্তালিন আমলে পরিবেশ ও বন রক্ষায় প্রশাসন কত যত্নবান ছিল। গবেষকের মতে, সেই সময় সোভিয়েতের ‘পরিবেশ রক্ষার স্তরটি ছিল পৃথিবীর মধ্যে অতুলনীয়।’
কিন্তু পুঁজিবাদী ব্যবস্থায় মুনাফা যেখানে একমাত্র আরাধ্য দেবতা, সেখানে পরিবেশের প্রশ্নটি অত গুরুত্বপূর্ণ নয়। আমরা দেখছি, সুন্দরবনের গা ঘেঁষে রামপালে যে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র নির্মাণের জন্য তোড়জোড় চলছে, সেখানে আমাদের সুন্দরবন ধ্বংস হওয়ার নিশ্চিত আশঙ্কা থাকলেও সরকার জেদ ধরে বসে আছে, বিদ্যুৎকেন্দ্র ওখানেই করতে হবে। এখানেও কারও মুনাফার বিষয়টি আছে নাকি?
আছে বৈকি! বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য যে কয়লা আসবে সমুদ্রপথে, তার গন্তব্যস্থল বঙ্গোপসাগরের নিকটবর্তী হলে পরিবহন খরচ কম হবে। তাই বেছে নেওয়া হয়েছে রামপালকে। হোক না তা সুন্দরবনের গা ঘেঁষে। মুনাফা তো একটু বেশি হবে। আমাদের অবশ্য আশ্বস্ত করা হচ্ছে এই কথা বলে যে কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পে ‘সুপার ক্রিটিক্যাল টেকনোলজি’ ব্যবহার করা হবে। তাতে নাকি ক্ষতি কম হবে। কিন্তু কী পরিমাণ কম? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই প্রযুক্তি সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ ক্ষতি কমাতে পারে। এবার দেখা যাক, রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প সুন্দরবনকে কতটা ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।

দুই.
২০১৩ সালের ৫ অক্টোবর রিমোট কন্ট্রোলের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রামপাল কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র উদ্বোধন করেন। ধাপে ধাপে এই প্রকল্পের বিভিন্ন অংশের উদ্বোধনকাজও চলছে। এই বিদ্যুৎকেন্দ্রে ১৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হবে। খুবই ভালো কথা। কিন্তু এটি হচ্ছে কয়লাভিত্তিক উৎপাদন কেন্দ্র। অর্থাৎ কয়লা পুড়িয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হবে। কয়লা আনা হবে বিদেশ থেকে। সমুদ্রপথে কয়লা আসবে বঙ্গোপসাগরের আকরাম পয়েন্টে। তারপর ছোট ছোট জাহাজে করে সুন্দরবনের মধ্য দিয়ে নদীপথে তা রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রে পাঠানো হবে। বছরে ৪৭ লাখ ২০ হাজার টন কয়লা পুড়বে। প্রতিদিন জাহাজে করে আসবে ১৩ হাজার টনের বেশি কয়লা।
এটি একটি যৌথ প্রকল্প। বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় সংস্থা বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) ও ভারতের কোম্পানি ন্যাশনাল থারমাল পাওয়ার করপোরেশনের (এনটিপিসি) যৌথ উদ্যোগে প্রকল্পটি প্রতিষ্ঠিত হবে এবং চালু থাকবে। মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১৬ হাজার কোটি টাকা। পিডিবি ও ভারতের এনটিপিসি প্রত্যেকে ১৫ শতাংশ করে পুঁজি বিনিয়োগ করবে। বাকি ৭০ শতাংশ আন্তর্জাতিক বাজার থেকে ঋণ আকারে সংগ্রহ করা হবে। জানা গেছে যে ঋণের টাকা প্রধানত আসবে ভারত থেকে ১৪ শতাংশ হারে চড়া সুদে। অন্যান্য কাজ, যেমন নির্মাণকাজ, সরবরাহ, ঠিকাদারি প্রধানত ভারতই পাবে। যা-ই হোক, এই প্রবন্ধে প্রকল্পটির অর্থনৈতিক দিক নিয়ে আলোচনা করা হচ্ছে না। আমরা প্রধানত উদ্বিগ্ন পরিবেশ নিয়ে। প্রকল্পটি সুন্দরবনের গা ঘেঁষে (১৪ কিলোমিটারের মধ্যে) বাগেরহাট জেলার রামপাল উপজেলায় প্রতিষ্ঠিত হবে। আমাদের আশঙ্কা, আমাদের ঐতিহ্য, আমাদের গর্বের ধন, আমাদের বিশাল প্রাকৃতিক সম্পদ, পৃথিবীর বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল সুন্দরবন ধ্বংস হয়ে যাবে। কীভাবে? আমরা এবার সংক্ষেপে সেই আলোচনায় প্রবেশ করব। প্রসঙ্গক্রমে আরও উল্লেখ্য, সুন্দরবনের ভেতরেই মোংলা বন্দরের পাশে আরেকটি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র নির্মাণের অনুমতি সরকারের বিবেচনাধীন আছে। সেটি হলো ওরিয়ন নামে বাংলাদেশি কোম্পানি। তারা উৎপাদন করবে ৬২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। এখানেও আমাদের একই আপত্তি।

তিন.
কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে যে সালফার ডাই-অক্সাইড (SO2) এবং নাইট্রাস অক্সাইড (NO2) নির্গত হবে, তা সহনশীল পরিমাণের চেয়ে অনেক বেশি হবে। বনাঞ্চল ও প্রাণিজগৎকে তা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। ৮০ শতাংশ লোড ফ্যাক্টর ধরলে প্রতিবছর কার্বন ডাই-অক্সাইড (CO2) নির্গমনের পরিমাণ হবে ৭৯ লাখ টন। সুন্দরবনের ওপর তার মারাত্মক প্রভাব পড়বে। ইআইএ রিপোর্ট (পরিবেশ সমীক্ষা) অনুসারে, ২৭৫ মিটার উঁচু চিমনি থেকে নির্গত গ্যাসীয় বর্জ্যের তাপমাত্রা হবে ১২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অর্থাৎ বাতাসের তাপমাত্রার ওপর এর প্রভাব পড়বে। প্রাণীর ওপর এর কি প্রতিক্রিয়া হবে না?
কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বছরে কয়লা পুড়িয়ে ৭ লাখ ৫০ হাজার টন ফ্লাই অ্যাশ ও ২ লাখ টন বটম অ্যাশ (দুই ধরনের ছাই) উৎপাদন করবে। সিলেটের সিমেন্ট কোম্পানিগুলো বলছে, তা দিয়ে তারা সিমেন্ট উৎপাদন করবে। ভালো কথা। এক প্রকল্প থেকে যদি আরেকটা ‘বাই-প্রোডাক্ট’ হিসেবে পাওয়া যায়, সে তো ভালো কথা। কিন্তু তার আগেই সেই ছাই উড়ে গিয়ে যে গাছপালা ও পশুপাখির ক্ষতি করবে, সেই ক্ষতির কী হবে?
কয়লা বহন করবে যে জাহাজ, সেই জাহাজ থেকে অথবা স্তূপ করে রাখা কয়লা থেকে কিছু গুঁড়ো কিছু ক্ষুদ্র কণা বাতাসে উড়ে পানিতে ও স্থলভাগে পড়বে না, এই নিশ্চয়তা কে দেবে? ইআইএ রিপোর্ট অনুসারে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ব্যবহারের জন্য পশুর নদী থেকে প্রতি ঘণ্টায় ৯ হাজার ১৫০ ঘন মিটার পানি প্রত্যাহার করা হবে এবং ব্যবহারের পর ৫ হাজার ১৫০ ঘন মিটার পানি নদীতে ফেরত যাবে। এতে নদীর পানি কমতে থাকবে। ফলে নদীর প্রবাহ, লবণাক্ততা ইত্যাদির ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে, যা আবার জলজ প্রাণীর জন্য ক্ষতিকর হবে।
এ ছাড়া জাহাজ চলাচল এবং টারবাইন, কম্প্রেসর, পাম্প ইত্যাদি যন্ত্রের ব্যবহারের কারণে শব্দদূষণ ও বায়ুদূষণও হবে। পরিবেশের কারণে এই ভারতীয় কোম্পানিকে পশ্চিমবঙ্গে সুন্দরবনের কাছাকাছি কোনো জায়গাতেই কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র করার অনুমতি দেওয়া হয়নি। অথচ তারা সুন্দরবনের ১৪ কিলোমিটারের কম দূরত্বে (বাফার জোন ধরলে দূরত্ব ৯ কিলোমিটারেরও কম) তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করার জন্য বাংলাদেশ সরকারের কাছ থেকে সহজেই অনুমোদন পেয়ে গেল! ভারতের ‘তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনসংক্রান্ত গাইডলাইন ১৯৮৭’ ‘ভারতের ওয়াইল্ড লাইফ প্রোটেকশন অ্যাক্ট ১৯৭২’, এবং ভারতের পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় প্রণীত ‘পরিবেশ সমীক্ষা (ইআইএ) গাইডলাইন ম্যানুয়াল: ২০১২’ অনুযায়ী বনাঞ্চল, বন্য প্রাণীর অভয়ারণ্য, জীববৈচিত্র্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ স্থান, জাতীয় উদ্যান ইত্যাদি এলাকার ২০ কিলোমিটারের মধ্যে বিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মাণ করা যায় না। পরিবেশগত কারণেই ভারতে কর্ণাটক, তামিলনাড়ু ও মধ্যপ্রদেশে কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ প্রকল্প বাতিল করা হয়েছে। এখন অনেক উন্নত দেশে কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ প্রকল্প বাতিল করা হয়েছে। তা দেখেও কি আমরা শিক্ষা নিতে পারি না?

চার.
কয়েকটি বামপন্থী রাজনৈতিক দল এবং অনেক সামাজিক সংগঠন, পরিবেশবাদী ও বেশ কয়েকজন বুদ্ধিজীবী এবং তেল-গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি রামপাল প্রকল্পের বিরোধিতা করে আসছে। এর সমালোচনা করে সরকারের তরফে এমন কথাও বলা হয়েছে যে, কিছু লোক উন্নয়ন বাদ দিয়ে পশুপাখি রক্ষার জন্য উঠেপড়ে লেগেছেন। বস্তুত, এটা শুধু পশুপাখির প্রতি প্রেম নয়, সুন্দরবনের মতো সম্পদ হারানোর ভয়। বিদ্যুৎ তৈরি করতে গিয়ে যদি হাজার বছরে তৈরি সুন্দরবন ধ্বংস করি, তবে তা আর ফিরে পাওয়া যাবে না।
আবারও বলছি, আমরা বিদ্যুৎ উৎপাদনের মোটেও বিরুদ্ধে নই। তবে যেহেতু কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুতের বিকল্প আছে, বায়ুচালিত বিদ্যুৎ (জার্মানিতে এই কৌশলের ব্যাপক ব্যবহার হচ্ছে), সৌরবিদ্যুৎ, জলস্রোত থেকে উদ্ভূত বিদ্যুৎ, এমনকি বর্জ্য পদার্থ থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের মতো বিকল্প সম্ভাবনা আছে, তাই পরিবেশ ধ্বংসকারী কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুতের উৎপাদনের পদ্ধতিটি বাদ দেওয়াই ভালো। বিশেষ করে বাংলাদেশের মতো ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় তা অনুমোদনযোগ্য হতে পারে না। আর যা-ই হোক, অন্তত সুন্দরবনের ধারেকাছে যেন এমন প্রকল্প স্থাপন না করা হয়। এ ব্যাপারে সরকারের জেদ ধরে থাকা এবং প্রতিবাদকারীদের প্রতি মারমুখী হওয়া মোটেও ঠিক হচ্ছে না। সরকারের প্রতি আমাদের বিশেষ অনুরোধ, যদি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র করতেই হয়, তবে তা যেন রামপাল বা মোংলা থেকে সরিয়ে অন্যত্র স্থাপন করা হয়। সুন্দরবনকে রক্ষা করুন। উন্নয়নের নামে এত বড় সর্বনাশ করবেন না।
হায়দার আকবর খান রনো: রাজনৈতিক বিশ্লেষক। সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি।