এমন হাস্যকর নির্বাচন মানুষ চায় না

রাশেদা কে চৌধূরী
রাশেদা কে চৌধূরী

দশম জাতীয় সংসদের নির্বাচন একটি হাস্যকর বিষয়ে পরিণত হয়েছে। আমাদের দেশের প্রজ্ঞাবান রাজনীতিকেরা এটা কী করছেন, তা বুঝতে পারছি না! তবে একজন ভোটার হিসেবে আমি এমন নির্বাচন কখনোই চাই না। দেশের কোনো সাধারণ মানুষই এ রকম নির্বাচন চায় বলেও মনে করি না।
ভোটারবিহীন নির্বাচনের মতো প্রার্থীবিহীন এই নির্বাচন রাজনীতিকদের জন্য মোটেই সম্মানজনক হবে না। তেমনি জনগণের জন্যও এই নির্বাচন কোনো কল্যাণ বয়ে আনতে পারবে না। সর্বসাধারণের কাছেও এই নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না। তাই এ ধরনের নির্বাচনের ফলাফলকে জনগণের রায় বলা বা মেনে নেওয়া কারও পক্ষেই সম্ভব হবে না।
গত কয়েক বছরে বাংলাদেশ সারা পৃথিবীতে উন্নয়ন ও অগ্রগতির একটি মডেল হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। এ ধরনের একটি প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচন সেই উন্নয়ন ও অগ্রগতির পথে দেশের সব অর্জনকে ম্লান করে দেবে। এ ধরনের নির্বাচন দেখে নতুন প্রজন্ম রাজনীতি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে পারে।
এই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আরও বড় একটি আশঙ্কা জনমনে সৃষ্টি হয়েছে, তা হলো প্রধান বিরোধী দল ছাড়া এ ধরনের একটি নির্বাচন কি দেশে শান্তি ও স্থিতিশীলতা আনতে পারবে? এখন যে অস্থিতিশীল অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে, নির্বাচনের পর কি তার অবসান হবে? এটা শুধু আশঙ্কা নয়, জনমনের বিরাট বড় এক প্রশ্নও। এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
দেশের প্রধান রাজনৈতিক শক্তিগুলোর মধ্যে যে পারস্পরিক দোষারোপ ও কাদা-ছোড়াছুড়ি এই নির্বাচনকে ঘিরে চলছে, তার সুযোগ নিয়ে আরেক অপশক্তি মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। এই শক্তি সাধারণ মানুষের জন্য এক আতঙ্কের পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। সারা দেশে তারা জনগণের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা বিঘ্নিত করে চলেছে। কিন্তু সরকার বা রাষ্ট্রশক্তি তাদের প্রতিরোধ করতে ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছে। প্রধান বিরোধী দলও তাদের ব্যাপারে চুপ। এটা জাতির জন্য মোটেই মর্যাদার বিষয় নয়।

-সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা