নির্বাচনের নামে দেশে একটা তামাশা হচ্ছে

রফিক-উল হক
রফিক-উল হক

নির্বাচনের নামে দেশে একটা তামাশা হচ্ছে। ৩০০ আসনের সংসদের অর্ধেকের বেশি আসনে প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়ে গেছেন। এমন আজগুবি নির্বাচন এর আগে কেউ কোথাও দেখেছে কি না, সন্দেহ আছে।
প্রধান বিরোধী দল বিএনপিও এ ব্যাপারে কিছুই বলছে না। বিএনপির নেতারা দেখি এখন সরকারি দলের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন। তাতে কোনো দলই অবস্থান পরিবর্তন করবে—এমন আভাস পাওয়া যায় না। তা হলে এ আলোচনা কী জন্য, বুঝি না। এদিকে নির্বাচন তো যেকোনোভাবে হয়েই যাচ্ছে।
এরশাদ সাহেব কখন কী বলেন, কী করেন, তা বোঝা যায় না। তাঁর স্ত্রী, জাতীয় পার্টির আরেকজন শীর্ষস্থানীয় নেতা বলছেন আরেক কথা। তাঁদের দলের অনেকের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করা হলো। অনেকের হলো না। কেন হলো, আর কেন হলো না, কেউ বলতে পারে না।
অন্যদিকে হরতাল-অবরোধে সারা দেশে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিদিন সাধারণ মানুষের প্রাণ যাচ্ছে। মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা দারুণভাবে ব্যাহত হচ্ছে। মানুষের সম্পদ ধ্বংস হচ্ছে। লুটপাটও হচ্ছে।
সব মিলিয়ে খুবই একটা খারাপ পরিস্থিতি সৃষ্টি হচ্ছে। আমরা সবাই এর ভুক্তভোগী হচ্ছি। আরও কত দিন ভুগতে হবে, কেউ জানে না।
নির্বাচন যেভাবে হচ্ছে, তা স্থগিত কিংবা বাতিল করাও এখন কঠিন। কারণ, নির্বাচন কমিশন এখন তেমন পদক্ষেপ নিলে যাঁরা ইতিমধ্যে নির্বাচিত হয়ে গেছেন বা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়ে যাওয়ার পথে, তাঁরা তা চ্যালেঞ্জ করবেন। তাঁরা আদালতে যাবেন। তা নিয়ে সৃষ্টি হবে আরেক ধরনের জটিলতা।
এই পরিস্থিতির অবসান কীভাবে এবং কত দিনে হবে, সেটা বোঝা যাচ্ছে না। সে কারণে সাধারণ মানুষ আরও বেশি উদ্বিগ্ন। কারণ, তারা এই পরিস্থিতির অবসান চায়। দ্রুত জীবনযাত্রায় স্বাভাবিকতা ফিরে আসুক, সেটা চায়। সরকার সে জন্য কী করছে, তা দৃশ্যমান নয়।
দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে সাধারণ মানুষের শঙ্কা, আতঙ্ক দূর করতে ভূমিকা রাখা সব রাজনৈতিক দলের অবশ্যকর্তব্য। তবে সে ক্ষেত্রে সরকারের দায়িত্ব অনেক বেশি। আমরা সরকারের এবং সব রাজনৈতিক দলের কাছে সেই দায়িত্বশীল আচরণ আশা করছি।
রফিক-উল হক, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী।