৭ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে মংলা বন্দরে দীর্ঘদিন ধরে পড়ে থাকা ২ হাজার ৭৯টি রিকন্ডিশন্ড গাড়ি বন্দর থেকে অপসারণ করে পুলিশের তত্ত্বাবধানে রাখার যে সিদ্ধান্ত হয়েছে, তা দেশের প্রচলিত আইন সমর্থন করে না। গতকাল সংবাদ সম্মেলন করে এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়েছে রিকন্ডিশন্ড গাড়ি আমদানিকারকদের সংগঠন বারভিডা। এসব গাড়ির বর্তমান বাজারমূল্য আনুমানিক ৩০০ কোটি টাকা।
পত্রিকার খবর অনুযায়ী, ২ হাজার ৭৯টি গাড়ির মধ্যে ৫১২টি গাড়ি আমদানি নীতি মেনে আমদানি না করায় বন্দর কর্তৃপক্ষ সেগুলো ছাড় করতে অস্বীকৃতি জানায়। তবে এর বাইরে বন্দরে যে ৮৮৪টি গাড়ি খালাস হয়নি শুল্কায়ন মূল্য জটিলতার কারণে। আইনানুযায়ী যেকোনো পণ্য বন্দরে আসার ৩০ দিনের মধ্যে ছাড় করিয়ে নিতে হয়।
আটকে থাকা গাড়ি পুলিশের তত্ত্বাবধানে না দেওয়ার দাবিগাড়ির আমদানিকারকেরা আইন ভেঙেছেন, সন্দেহ নেই। কিন্তু প্রশ্ন হলো, তার প্রতিকার করতে গিয়ে সরকার আইনবিরুদ্ধ কিছু করতে পারে কি না? গাড়ির মালিকেরা গাড়ি না নিলে সরকার আইনি প্রক্রিয়া শেষ করে সেগুলো বাজেয়াপ্ত করে নিলাম ডাকতে পারে। সে ক্ষেত্রে সর্বাধিক দরদাতাই সেসবের মালিক হবে, সরকারের পছন্দসই কোনো সংস্থা নয়।
বারভিডা গত বছরের ৭ জুলাই প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে দেওয়া নির্দেশনার ভিত্তিতে সমস্যার সমাধান চায়। সেই নির্দেশনায় আমদানি নীতি না মেনে আনা ৫১২টি গাড়ি জরিমানা সাপেক্ষে খালাসের অনুমতি, অন্য গাড়িগুলো প্রয়োজনে শুল্ক ছাড়, ভাড়া মওকুফ করে হলেও খালাসের সুযোগ দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। উল্লিখিত গাড়িগুলো ছাড় করিয়ে না নেওয়ায় সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয়েছে। এখন সরকারকে এমন সিদ্ধান্ত নিতে হবে, যাতে সেই রাজস্ব আদায় হয়।
অতএব, একতরফা সিদ্ধান্ত চাপিয়ে না দিয়ে আলোচনার মাধ্যমে এ বিষয়ে বাস্তবসম্মত ও যৌক্তিক সমাধানে আসতে হবে; যাতে বন্দর কর্তৃপক্ষ তার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারে এবং আমদানিকারকেরাও গাড়ি ছাড় করিয়ে নিতে পারেন।