ট্রেনের বগি মেরামতে

সম্পাদকীয়

রেল নিয়ে উন্নয়নের শেষ নেই। নতুন নতুন ট্রেন, বগি ও ইঞ্জিন কেনা হয়, ট্রেনলাইন চালু হয়, ভাড়াও বাড়ানো হয়, কিন্তু সেবার মান নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়। বগির সংকট তো থেকেই যায়, তার মধ্যে অনেক সময় মেরামতের জন্য বগি নিয়ে যাওয়া হয় কারখানায়। মাসের পর মাস সেই বগি আর আসে না। যেসব এলাকার মানুষ রেলের ওপর নির্ভরশীল, সেখানে চরম দুর্ভোগ তৈরি হয় তখন। যেমন আমরা দেখছি নীলফামারীর দুটি ট্রেনের ক্ষেত্রে। সেখানে সীমান্ত ও রূপসা এক্সপ্রেস নামের দুটি ট্রেনে নীলফামারীর যাত্রীদের জন্য বরাদ্দ দুটি বগি অকেজো হয়ে আছে এক মাস ধরে। ফলে নির্ধারিত বগি না থাকায় নীলফামারী স্টেশন থেকে দুটি আন্তনগর ট্রেনে করে বিভিন্ন গন্তব্যে যেতে অসুবিধা পোহাতে হচ্ছে স্থানীয় যাত্রীদের।

প্রথম আলোর প্রতিবেদন জানাচ্ছে, খুলনা ও যশোরগামী যাত্রীরা প্রতিদিন টিকিট কাউন্টারের সামনে ভিড় করছেন। কিন্তু সীমান্ত ও রূপসা এক্সপ্রেসে নীলফামারী থেকে যশোর ও খুলনা যাওয়ার কোনো টিকিট বিক্রি হচ্ছে না। এ বিষয়ে নীলফামারী রেলস্টেশনের স্টেশনমাস্টার বলেছেন, ট্রেন দুটির দুটি বগি অকেজো হওয়ায় মেরামতের জন্য গত ২৩ ডিসেম্বর কারখানায় পাঠানো হয়েছে। বিকল্প বগি না দেওয়ায় ওই পথের যাত্রীদের আসন দেওয়া যাচ্ছে না।

এর আগেও বগি মেরামতের জন্য নিয়ে যাওয়ায় এমন দুর্ভোগের শিকার হতে হয়েছিল যাত্রীদের। সৈয়দপুর রেল কারখানা থেকে সেই বগি মেরামত হয়ে আসতে আসতে কয়েক মাস লেগে যায়। এবারও তেমন পরিস্থিতি হলে মানুষের ভোগান্তি আরও বাড়তে থাকবে। ফলে বগি মেরামতের কাজ দ্রুত শেষ করা হোক বা বিকল্প বগি এ দুই ট্রেনের সঙ্গে যুক্ত করা হোক।

রূপসা ও সীমান্ত এক্সপ্রেস ছাড়াও নীলফামারী থেকে ঢাকা পর্যন্ত নীলসাগর এক্সপ্রেস, নীলফামারী থেকে রাজশাহী পর্যন্ত বরেন্দ্র এক্সপ্রেস ও তিতুমীর এক্সপ্রেস নামে আরও তিনটি ট্রেন চলাচল করে। এতগুলো ট্রেন চলাচল করলেও পর্যাপ্ত বগি না থাকায় আসনসংকট থেকেই গেছে। যেমন নীলফামারী স্টেশন থেকে দিনাজপুরের পার্বতীপুর, বগুড়ার সান্তাহার, জয়পুরহাট, নাটোর, পাবনার ঈশ্বরদী, কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা, যশোর, খুলনার যাত্রীদের জন্য রূপসা ট্রেনে আসন বরাদ্দ আছে ৫৫টি। সীমান্ত এক্সপ্রেসে ৭৭টি। এত কম আসন নিয়ে এতগুলো জায়গার মানুষের যাতায়াতের প্রয়োজন মেটানো কিছুতেই সম্ভব নয়। অনেকে জরুরি প্রয়োজনে ভেঙে ভেঙে টিকিট করে গন্তব্যে যান। অনেকে বিনা টিকিটে চলাচলেও বাধ্য হন। ফলে নীলফামারীর ট্রেনগুলোর বগি ও আসনসংকট মেটানোর জোর দাবি জানাচ্ছি।