ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় ঢাকা–আগরতলা আন্তর্জাতিক সড়কের পাশে অবৈধ বালু রাখায় সড়কের এক পাশ ধসে যাওয়ার জন্য তিন ঠিকাদারকে ১৭ লাখ টাকা জরিমানা করেছে উপজেলা প্রশাসন। আমরা মনে করি, এটি সঠিক কাজ হয়েছে।
প্রথম আলোর খবরে প্রকাশ, আখাউড়া পৌর এলাকায় আখাউড়া-আগরতলা আন্তর্জাতিক মহাসড়ক ও ঢাকা-চট্টগ্রাম-সিলেট রেলপথের মাঝখানে তিতাস নদ থেকে বালু তোলেন তিন ঠিকাদার। তাঁদের মধ্যে একজন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু নাহিদ। অপর দুজন কোড্ডা গ্রামের বাসিন্দা শানু খলিফা ও আখাউড়া উপজেলার রাধানগর গ্রামের বাসিন্দা হাসান খলিফা। অভিযোগ আছে, ঠিকাদারেরা খননযন্ত্রের মাধ্যমে অবৈধভাবে এই বালু তুলে জড়ো করেন আখাউড়া–আগরতলা আন্তর্জাতিক মহাসড়কের পাশে রেলওয়ের জায়গায়। এতে তিতাস নদের ওপরের সেতুর সামনের ডান দিকের মহাসড়কের ১২০ ফুট অংশ ধসে নদে পড়ে যায়। ধসের পর থেকে ঝুঁকি নিয়ে মহাসড়কের এক পাশ দিয়ে যানবহন চলাচল করছে। এই প্রেক্ষাপটে সোমবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশে তিন ঠিকাদারকে আটক করে ১৭ লাখ টাকা জরিমানা করে ছেড়ে দেওয়া হয়। সওজ ক্ষতির যে হিসাব দিয়েছে, তা পুরোটাই জরিমানা হিসেবে আদায় করা হয়েছে।
এখানে ঠিকাদারেরা দুটি অন্যায় করেছেন। প্রথমটি তিতাস নদ থেকে অবৈধভাবে বালু তোলা। দ্বিতীয়টি সেই বালু এমন স্থানে রেখেছেন, যার জন্য সড়কটির একাংশ ধসে পড়ল। প্রশ্ন হলো ঠিকাদারেরা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু তুলতে পারলেন কীভাবে? বিষয়টি অভ্যন্তরীণ নৌপরিহন কর্তৃপক্ষের দেখার কথা। তারা কী করেছে? দ্বিতীয়ত, সড়কের পাশে বালু রাখায় সড়কটি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে সওজ কর্তৃপক্ষের কি জানা ছিল না? কেন তারা আগেভাগে ঠিকাদারের কাজে বাধা দেয়নি?
কথায় বলে ছাগল নাচে খুঁটির জোরে। ঠিকাদারেরা বেপরোয়া হয়ে ওঠেন ক্ষমতার জোরে। ক্ষমতার রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরাই সরকারি কাজের ঠিকাদারি পেয়ে থাকেন এবং খেয়ালখুশিমতো কাজ করেন। আইনকানুনের তোয়াক্কা করেন না।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জরিমানা আদায় করে একটি নজির সৃষ্টি করেছেন। কিন্তু সড়ক নির্মাণে সওজের কাজে কোনো গাফিলতি ছিল কি না তা–ও তদন্ত করে দেখা উচিত। একজন ঠিকাদার বলেছেন, শুধু বালু রাখার জন্য সড়কে ধস নামেনি। কাজের মানও খারাপ ছিল। অবৈধ বালু রাখার শাস্তি ঠিকাদারেরা পেয়েছেন। সওজের কাজের মান খারাপ হয়ে থাকলে দায়িত্বশীলদের জবাবদিহির আওতায় আনা হোক।