পাহাড় কেটে কারখানা নির্মাণ

পাহাড় কাটা আইনত নিষিদ্ধ, কিন্তু চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের বড় কুমিরা এলাকায় একজন সাংসদের পারিবারিক প্রতিষ্ঠান ইস্পাত কারখানা নির্মাণের জন্য পাহাড় কাটছে—এমন অভিযোগের সচিত্র সংবাদ ছাপা হয়েছে বুধবারের প্রথম আলোয়।
৬০ হাজার বর্গফুট আয়তনের ইস্পাত কারখানাটির নির্মাণকাজ চলছে চার মাস ধরে। পাহাড়ের যে অংশ কাটা হচ্ছে, তা টিনের প্রাচীর দিয়ে ঘেরাও করে রাখা হয়েছে। তবু স্পষ্টভাবেই দেখা যাচ্ছে, সেখানে পাহাড় কাটার কাজ চলছে। কিন্তু কারখানা কর্তৃপক্ষ বলছে, পাহাড় কাটা হচ্ছে না। সাংসদ দিদারুল আলম পাহাড় কাটার অভিযোগের ব্যাপারে বলেছেন, ‘যদি পাহাড় কেটে থাকে, তাহলে আমি প্রয়োজনে এসি ল্যান্ড পাঠিয়ে ব্যবস্থা নেব।’
সীতাকুণ্ডে পাহাড় কাটছে সাংসদের প্রতিষ্ঠানকিন্তু পাহাড়ের কিছু অংশ যে ইতিমধ্যে কাটা হয়েছে, তা অস্বীকার করার কোনো সুযোগ নেই। এলাকার লোকজন মোবাইল ফোনে পাহাড় কাটার ছবি তুলেছেন। তাঁদের ছবি তোলা বন্ধ করতে একজন দারোয়ান নিয়োগ করা হয়েছে। এলাকাটা টিন দিয়ে ঘেরাও করাও হয়েছে লোকজন ছবি তোলার পর থেকে। তারপরও যদি সাংসদের সন্দেহ থাকে, তাহলে তাঁর উচিত হবে সশরীরে সেখানে গিয়ে স্বচক্ষে সবকিছু দেখা।
এ ব্যাপারে পরিবেশ অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম আঞ্চলিক শাখার আচরণ বিস্ময়কর। তারা ওই কারখানা নির্মাণের জন্য পরিবেশগত ছাড়পত্র দিয়েছে, কিন্তু নির্মাণকাজ শুরু হওয়ার পর আর কখনো ওই এলাকা পরিদর্শন করেনি। পরিচালক মো. মকবুল হোসেন বলেছেন, ‘আমরা পাহাড়ে হাত দিতে নিষেধ করেছিলাম। এখন যদি পাহাড় কাটে, তাহলে বিষয়টি দেখব।’ এ ধরনের ধরি মাছ না ছুঁই পানি আচরণ একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়। পাহাড় কাটার পরে ‘বিষয়টা দেখা’র কী থাকে? কাটা পাহাড় কি আগের অবস্থায় ফেরানো যায়?
পরিবেশ অধিদপ্তর ও স্থানীয় প্রশাসনের আশু কর্তব্য, এই মুহূর্তে ওই পাহাড় কাটা বন্ধ করা এবং ভবিষ্যতে যেন পাহাড়ের আর এক ইঞ্চি মাটিও কেউ কাটতে না পারে, তা নিশ্চিত করা। শুধু ওই এলাকায় নয়, সারা দেশের সবখানে পাহাড় কাটা সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করতে হবে।