মাদারীপুরে স্কুলছাত্রীকে অপহরণ করে ধর্ষণের পর পরিবারটিকে নিজ বাড়িতে ঘেরাও করে রাখা, মামলা করলে খুন করার হুমকি দেওয়ার পরও গ্রেপ্তার হননি ধর্ষণে অভিযুক্ত খোকা শিকদার ও তাঁর সাঙ্গাতেরা। ক্ষমতাবান এই ব্যক্তি যুবলীগের নেতা এবং স্থানীয় ইউপি সদস্যের ভাই। ঢাকায় আরেক ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের দায়ে গ্রেপ্তার হয়েছেন একজন।
তিনি সবুজবাগ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। ক্ষমতাসীন দলে থাকার ক্ষমতা কি ধর্ষণ-নিপীড়নে সহায়ক হয়, নাকি যৌন নির্যাতকেরাই দুষ্কর্মের ঢাল হিসেবে রাজনৈতিক দলের প্রভাবকে ব্যবহার করেন?
আশ্চর্যের বিষয় এই, এক স্কুলছাত্রীকে বাড়ির সামনে থেকে তুলে নিয়ে সারা রাত নির্যাতনের পর ফেলে যাওয়া হলো, কিন্তু এলাকার জনপ্রতিনিধি, সরকারি প্রশাসন এবং ক্ষমতাসীন দলের নেতারা কিছুই করলেন না! তাঁদের এই নীরবতা আরও মারাত্মক হয়ে ওঠে, যখন দেখা যায় ধর্ষকেরা দলবল নিয়ে নির্যাতনের শিকার মেয়েটির পরিবারকে দুদিন ধরে নিজ বাড়িতে অবরুদ্ধ করে রাখেন। নির্যাতকেরা প্রকাশ্যে মোটরসাইকেল নিয়ে মহড়া দিলেন, পরিবারের কাউকে পেলেই খুন করার ঘোষণা দিলেন; অথচ সমাজ-রাজনীতি-প্রশাসন চেয়ে চেয়ে দেখল? দলে থাকা কেউ অপরাধ করলে গোটা দলকে দোষী করা যায় না, কিন্তু অভিযুক্ত অপরাধী যদি দলের পরিচয়ে জঘন্য অপরাধ করে যেতে থাকেন, তখন তাঁকে থামানো কিংবা তাঁর সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করা দলের জরুরি দায়িত্ব হয়ে দাঁড়ায়। ঢাকা ও মাদারীপুরের দুটি ঘটনায় সেই দায়িত্বশীলতা দেখা যায়নি।
দুটি ঘটনাতেই পরিবারের লোকেরা সাহস করে থানায় মামলা করেছেন, এলাকাবাসী, প্রশাসন এবং জনপ্রতিনিধিদের উচিত তাঁদের পাশে দাঁড়ানো। পুলিশের সুষ্ঠু তদন্ত না হলে নির্যাতিত ব্যক্তিদের সুবিচার পাওয়ার সম্ভাবনা কমে যাবে। এই দিকটি সম্পর্কে হুঁশিয়ার থাকা প্রয়োজন। মাদারীপুরের ঘটনায় অপরাধীরা সবাই গ্রেপ্তার না হলে পরিবারটির পক্ষে এলাকায় ফিরে নিরাপদে বাস করা এবং মেয়েটির শিক্ষাজীবন চালিয়ে যাওয়া কঠিন হবে।
আমরা রাজনৈতিক ক্ষমতার আশ্রয়ে অপরাধী লালনের ধারার অবসান চাই।