শেওলা আর কচুরিপানায় ভরপুর জায়গাটা দেখলেই মনে হবে একটি জলাশয়। আবার সেখানে ফুটবল খেলার গোলপোস্টও দেখা যাচ্ছে। এতেই বোঝা যায়, এখানে একসময় খেলার মাঠের অস্তিত্ব ছিল। করোনাকালের আগে খেলার আসরে মুখর থাকা মাঠটিকে এখন জলাশয়ই বলা যায়। বিধিনিষেধের সময় রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে এমন অবস্থা হয়েছে। নওগাঁর রানীনগর উপজেলার পাইলট সরকারি মডেল উচ্চবিদ্যালয়ের মাঠটির বর্তমান চিত্র নিয়ে স্থানীয় ক্রীড়াপ্রেমীরা হতাশা প্রকাশ করেছেন। কারণ, এটি শুধু স্কুলের মাঠই নয়, গোটা সদরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খেলার মাঠ।
প্রথম আলোর প্রতিবেদন জানাচ্ছে, করোনা পরিস্থিতির কারণে দীর্ঘদিন স্কুল বন্ধ। যে মাঠে একসময় শিক্ষার্থীরা খেলাধুলায় মেতে থাকত, দীর্ঘদিন অব্যবহৃত থাকায় সেই মাঠের এখন এমন অবস্থা হয়েছে। বিদ্যালয়ের আশপাশে বসবাসকারী ব্যক্তিদেরও এই মাঠ পার হতে গিয়ে বিভিন্ন সময় ভোগান্তিতে পড়তে হয়। তাঁদের অভিযোগ, বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার কারণে মাঠটির এমন অবস্থা হয়েছে। কিন্তু মাঠটির এই অবস্থার জন্য এলাকাবাসীও কম দায়ী নন। গত দেড় বছরে এর আশপাশে যেসব স্থাপনা গড়ে তোলা হয়েছে, সেগুলোর মধ্য দিয়ে পানিনিষ্কাশনের কোনো পথ রাখা হয়নি। ফলে সামান্য বৃষ্টিতেই মাঠে পানি জমে। পাশে যে সরকারি খাল ছিল, তা-ও দখল করে অপরিকল্পিতভাবে স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে। এ কারণে জমে থাকা পানিতেই কচুরিপানা জন্মে মাঠটি এখন অনেকটা জলাশয়ে পরিণত হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এই মাঠে একসময় জেলা-উপজেলা পর্যায়ের ফুটবল টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হতো। এ ছাড়া ক্রিকেট, হ্যান্ডবলসহ উপজেলা পর্যায়ের সব ধরনের খেলা, বিভিন্ন দিবসের অনুষ্ঠান আয়োজন করা হতো। করোনা পরিস্থিতির কারণে এখন এসবের কিছুই হয় না। তাই মাঠটির দিকে কারও নজর নেই। প্রথম আলোর প্রতিনিধি জানালেন, মাঠটির চারপাশে অপরিকল্পিতভাবে ঘরবাড়ি নির্মাণ এবং খাল দখলের কারণে আশপাশের পানি কোথাও যেতে পারে না। ফলে মাঠটিতে পানি জমে থাকে। শুকনা মৌসুমে মাটি ফেলে মাঠটি উঁচু করতে হবে। আর খাল অবমুক্ত করে পানি বের হওয়ার জায়গা করে দিতে হবে।
ইতিমধ্যে উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার পক্ষ থেকে মাঠটি দ্রুত সংস্কারের মাধ্যমে খেলাধুলার উপযোগী করার জন্য স্থানীয় সাংসদের কাছে আবেদন করা হয়েছে। আর স্কুল কর্তৃপক্ষও মাঠের দুর্দশার বিষয়টি লিখিতভাবে স্থানীয় সাংসদ ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানিয়েছে। তাঁরা বিষয়টি সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, তিনি মাঠটি পরিদর্শন করেছেন। দ্রুত মাটি ভরাট করে মাঠটি খেলার উপযোগী করা হবে। এখন কী পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে, সেটিই দেখার বিষয়।