টাঙ্গাইলের সদর উপজেলার গালা ইউনিয়নের ভাটচান্দা গ্রামে জুয়েল নামের ছয় বছরের শিশুটিকে যেভাবে হত্যা করা হয়েছে, তা শুধু নৃশংসই নয়, চরম নিষ্ঠুরতাও বটে। এ ঘটনায় বোঝা যায়, দেশে নিরাপত্তা বা আইনশৃঙ্খলা বলতে কিছু নেই।
প্রথম আলোর খবরে বলা হয়েছে, গত শনিবার সকালে ভাটচান্দা গ্রামের একটি ধানখেত থেকে শিশুটির লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। তার একটি চোখ ছিল ওপড়ানো। আগের রাতে একটি ওয়াজ মাহফিলে গিয়ে আর ফিরে আসেনি শিশুটি। একটি নিষ্পাপ শিশুর এমন মৃত্যু কিছুতেই মেনে নেওয়া যায় না।
প্রশ্ন হচ্ছে, এত ছোট শিশুর সঙ্গে কার কী এমন শত্রুতা ছিল যে তাকে হত্যা করা হলো? কেন উপড়ে নেওয়া হলো তার চোখ? সে কার কী ক্ষতি করেছিল? শিশুটির মা-বাবা কাউকে সন্দেহ করতে পারছেন না। কেননা তাঁদের সঙ্গে কারও কোনো শত্রুতা নেই।
শিশুদের নৃশংসভাবে হত্যার নজির শুধু এটাই নয়। সিলেটের রাজন, খুলনার রাকিব, বরিশালের হাফিজুল—এদের সবাইকে নিষ্ঠুর কায়দায় হত্যা করা হয়েছে। দেখা গেছে, তুচ্ছ সব কারণে শিশুদের খুন করা হচ্ছে। আবার দেখা গেছে, জমি নিয়ে বিরোধ, পারিবারিক কলহ, স্বামী বা স্ত্রীর পরকীয়া কিংবা মা-বাবার সম্পর্কের জটিলতায়ও শিশু খুনের ঘটনা ঘটছে।
৬৭টি সংগঠনের মোর্চা শিশু অধিকার ফোরামের এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, চলতি বছরের প্রথম সাত মাসেই ১৯১ জন শিশুকে হত্যা করা হয়েছে। একের পর এক শিশু হত্যা ঘটছে, অথচ কারও টনক নড়ছে না। সমাজ নির্বিকার। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিষ্ক্রিয়। এই অবস্থা চলতে দেওয়া যায় না। সমাজকে রক্ষার স্বার্থে মানবতার শত্রু এই শিশু হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। জুয়েলসহ প্রতিটি শিশুর ঘাতককে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। তাদের কঠোর ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। তা না হলে শিশু হত্যা কোনোভাবেই থামবে না।