ধানের শীষের পক্ষে জোয়ার আসবে: সাখাওয়াত

মো. সাখাওয়াত হোসেন খান
মো. সাখাওয়াত হোসেন খান
মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ছিল গতকাল। তফসিল ঘোষণার পর থেকেই দুই প্রধান মেয়র পদপ্রার্থী আওয়ামী লীগ মনোনীত সেলিনা হায়াৎ আইভী ও বিএনপি মনোনীত মো. সাখাওয়াত হোসেন খান গণসংযোগে ব্যস্ত রয়েছেন। এরই ফাঁকে প্রথম আলো কথা বলে দুই মেয়র প্রার্থীর সঙ্গে। আসিফ হোসেনকে সঙ্গে নিয়ে সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সোহরাব হাসান

প্রথম আলো: অভিযোগ আছে, আপনি দলে নবাগত। কীভাবে নির্বাচনী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করবেন?

মো. সাখাওয়াত হোসেন খান: জন্মেই কেউ নেতা হন না। নেতা হন নিজের যোগ্যতায়। আমি বিএনপির রাজনীতিতে জড়িত নব্বই সাল থেকে। কর্মী হিসেবে ছিলাম। আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ছিলাম। এখন মেয়র প্রার্থী হয়েছি। আশা করি নারায়ণগঞ্জবাসী আমার কাজের মূল্যায়ন করবে।

প্রথম আলো: বিএনপির অনেকেই আপনার মনোনয়নকে ভালোভাবে নিতে পারেননি বলে গণমাধ্যমে খবর এসেছে।

সাখাওয়াত হোসেন খান: বিএনপি বিশাল দল। আমি মনে করি অতীতের যেকোনো সময় থেকে এখন বিএনপির নেতা-কর্মীরা ঐক্যবদ্ধ। তাঁরা এই নির্বাচনকে নিয়েছেন চ্যালেঞ্জ হিসেবে। সরকার বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের ওপর জেল-জুলুম চালাচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে দেশে ভোটের অধিকার নেই। এই নির্বাচনের মাধ্যমে সেই অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে।

প্রথম আলো: প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে দুই প্রার্থীর মধ্যে, না নৌকা ও ধানের শীষে?

সাখাওয়াত হোসেন খান: দুটোই। নারায়ণগঞ্জ বরাবর ধানের শীষের উর্বর ভূমি। এখানে বিএনপির ৬০ শতাংশ ভোট আছে। এবারের নির্বাচনে যদি মানুষ ভোট দিতে পারে, তাহলে ধানের শীষের পক্ষে জোয়ার আসবে। সরকার সাধারণ মানুষের ওপর জুলুম করছে, সেটি কেউ ভালোভাবে নিচ্ছে না। সুযোগ পেলে তারা ভোটের মাধ্যমে এর জবাব দেবে।

প্রথম আলো: আপনারা একদিকে বলছেন এই নির্বাচন কমিশনের প্রতি আস্থা নেই। আবার তাদের অধীনেই নির্বাচনে যাচ্ছেন?

সাখাওয়াত হোসেন খান: বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ শেষ হচ্ছে ফেব্রুয়ারিতে। এটিই তাদের শেষ নির্বাচন। আমরা আশা করব, শেষ নির্বাচনটি তারা সুষ্ঠু করে অতীতের কালিমা মোচনের চেষ্টা করবে।

প্রথম আলো: আপনার মনোনয়ন নিয়ে দলে যে মতভেদ আছে, সেটি কীভাবে কাটাবেন?

সাখাওয়াত হোসেন খান: যাঁরা মতভেদের কথা বলছেন, ঠিক বলছেন না। দলীয় চেয়ারপারসন তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের ডেকে সবার মতামতের ভিত্তিতে আমাকে মনোনয়ন দিয়েছেন। এখানে মতভেদের প্রশ্নই আসে না। দলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নেতা-কর্মীরা আমার পক্ষে কাজ করছেন।

প্রথম আলো: আপনার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভী সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন কী?

সাখাওয়াত হোসেন খান: আমি তাঁকে সম্মান করি। কিন্তু একটি কথা বলব, তিনি ১৩ বছর পৌরসভা ও সিটি করপোরেশনের দায়িত্বে ছিলেন। তিনি যেসব প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তার সিকি ভাগও পূরণ করতে পারেননি।

প্রথম আলো: মেয়র প্রার্থী হিসেবে ভোটারদের প্রতি আপনার অঙ্গীকার কী?

সাখাওয়াত হোসেন খান: নারায়ণগঞ্জের উন্নয়নের পক্ষে এবং সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করব। নারায়ণগঞ্জের অতীত গৌরব ফিরিয়ে আনব। এখানে ভালো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নেই। সেসব প্রতিষ্ঠা করব। নারায়ণগঞ্জের জলাবদ্ধতা দূর করব। রাস্তাঘাট প্রশস্ত করব। হোল্ডিং ট্যাক্স সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসব।

প্রথম আলো: নির্বাচনে আপনি সেনা মোতায়েনের দাবি করছেন কেন?

সাখাওয়াত হোসেন খান: প্রশাসন নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করছে না বলেই আমরা সেনা মোতায়েনের দাবি জানাচ্ছি। একই সঙ্গে প্রশাসনে যাঁরা বিতর্কিত ও পক্ষপাতমূলক ভূমিকা নিয়েছেন, তাঁদের নির্বাচনের দায়িত্ব থেকে দূরে রাখতে হবে। নির্বাচনের আগে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার করতে হবে। আমরা চাই লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড।