কখনো বলতে পারিনি কতটা ভালোবাসি!

অলংকরণ: তুলি
অলংকরণ: তুলি

কখনো বলতে পারিনি কতটা ভালোবাসি!

একদিন তুমি আমার চিহ্নটুকুও খুঁজে পাবে না! শুধু এটুকুই বলব, আমাকে মনে পড়লে আকাশের দিকে তাকিয়ে থেকো। সেখানে অনেক সন্ধ্যাতারা, অনেক ভালোবাসা আর আবেগ লুকিয়ে থাকে, এই আকাশ কোটি প্রেমিকের আশা মাত্র। তবে কখনো বিনিদ্র থেকো না, অল্পতেই তোমার শরীর খারাপ করে। ইনহেলারটা সঙ্গে রেখো, এটাই তোমার শেষ ভরসা।

অর্ক সেতু
চট্টগ্রাম।

একা থাকা অসম্ভব

না আর না, আমাকে ফিরে যেতেই হবে। আর পারছি না। যেদিন ওকে ছেড়ে বাসা থেকে বেরিয়ে এসেছিলাম, তখন তীব্র ঘৃণা কাজ করছিল। বছরের পর বছর একসঙ্গে থেকে ঝগড়া-বিবাদে আমি ক্লান্ত হয়ে গিয়েছিলাম। ভেবেছিলাম, আহ্! বাঁচা গেল, এখন থেকে একা শান্তিতে থাকব। প্রতিদিন আর রাতে বাসায় ফিরে রাইয়ের ঘ্যানর ঘ্যানর শুনতে হবে না। কিন্তু না, এক সপ্তাহও একা থাকতে পারলাম না। দম বন্ধ হয়ে আসছে। ভাবছি, আজই ফিরে যাব। ওর কাছে ক্ষমা চাইব।

আমার বিশ্বাস, সেও একা ভালো নেই। সত্যি বলতে, মানুষের পক্ষে পরিবারবিহীন একা থাকা শুধু মুশকিলই নয়, অসম্ভবও বটে।

শাওন আশরাফী
কিশোরগঞ্জ

দিনগুলো স্মৃতি হয়ে উঁকি দেয়

ক্রিকেট আমার প্রিয় খেলা। ক্রিকেটের বাইরে অন্যান্য খেলার প্রতি আগ্রহ নেই বললেই চলে। স্কুলজীবনে একবার আন্তস্কুল ফুটবল প্রতিযোগিতায় ষষ্ঠ শ্রেণির সঙ্গে হাফটাইম পর্যন্ত আর গত বছর ঈদে এলাকায় সিনিয়র বনাম জুনিয়র খেলেছিলাম। ফুটবলের খেলোয়াড়ি জীবনের ইতি এ পর্যন্ত। তবে ফুটবল খেলা দেখাটা খুব বেশি উপভোগ করি। ক্লাব ফুটবলের বার্সা-রিয়ালের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচগুলো মিস করি না এখন পর্যন্ত। আর বিশ্বকাপ এলে তো কোনো কথায় থাকে না।

অনেকটা বুকে পাথর বেঁধে তোমার পছন্দ করা দলকে সমর্থন করতাম। নিজের বাড়িতে টিভি থাকা সত্ত্বেও জোট বেঁধে তোমার বাড়ির পাশে ক্লাবঘরে খেলা দেখতে যেতাম। সবার খেলা দেখার আনন্দ হলেও আমার ‘রথ দেখা সঙ্গে কলা বেচা’র মতো একই সঙ্গে দুটো আনন্দ হতো। জানালার ফাঁক দিয়ে উঁকি দেওয়ার দিনগুলো স্মৃতি হয়ে উঁকি দেয়। বেশ কয়েকবার ভাঙা জানালাটিকে সারাই করতে বলেছিলাম। তুমি এতে কোনো আগ্রহ প্রকাশ করোনি। পরে অবশ্য জেনেছি, তুমি ইচ্ছে করেই জানালার এক পাশ ভেঙেছিলে আমাকে দেখার জন্য! গত বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল ম্যাচের দিন তোমার সঙ্গে দেখা করার সময় তোমার বাবার দৌড়ানি খেয়ে নতুন কেনা শার্ট ছিঁড়ে গিয়েছিল। মা বলেছিল, খেলা দেখতে যাস নাকি মারামারি করতে যাস যে শার্ট ছিঁড়ে যায়!

বিশ্বকাপের মতো তুমিই গত হয়ে গেছো আমার জীবনের সূচিপত্র থেকে। আজ দুই বছর হলো তুমি প্রবাসজীবনে। শুনেছি, স্বামী ও সন্তানকে নিয়ে বেশ সুখেই আছো।

এবারের বিশ্বকাপের খেলাগুলো বিভাগীয় শহরের মোড়ে টাঙানো বিশাল পর্দায় দেখেছি। যেখানে নানা শ্রেণির নানা মানুষের প্রিয় দলকে নিয়ে উচ্ছ্বাস, হতাশা আছে কিন্তু আমাতে তুমি কিংবা সেই অনুভূতি নেই।

কোরবান আলী

শিক্ষার্থী।

অবহেলার যন্ত্রণা

আমি জানি, আমি তোমার কাছে কতটা মূল্যহীন। তবুও তোমার কাছে সামান্য একটু সময় চাইতাম, তুমি কেমন আছো সেটা জানব বলে। তুমি খাওয়ার পর আমি খেতে বসব, তাই জিজ্ঞেস করতাম তুমি খেয়েছ কি না। আমি বুঝতাম তুমি আমাকে অবহেলা করতে, কিন্তু তবুও বেহায়ার মতো বারবার তোমায় এসএমএস করে একটু কথা বলতে চেয়েছি। আমি জানতাম, আমার কথাগুলো তোমার ভালো লাগত না। তবুও নিজের কথা না ভেবে, শুধু তোমার ভালোর জন্য পাগলের মতো কতবার তোমাকে বুঝিয়েছি। কিন্তু তুমি বোঝোনি, বুঝবেই-বা কেন, কথাগুলো যে আমি বলেছিলাম।

সবার এসএমএসের উত্তর দেওয়া শেষে, চ্যাট লিস্টের একেবারে নিচে পড়ে যাওয়া আমার এসএমএসটার উত্তর না দিয়ে মাঝে মাঝে লগআউট বাটনে চাপ দিতে। হয়তো তোমার কখনো মনেই হয়নি যে কেউ একজন তোমার এসএমএসের উত্তরের জন্য কষ্টের প্রহর গুনছে।

আজকে সবই স্মৃতি। তোমার থেকে আজ আমি অনেক দূরে, অনেক বেশি দূরে। বুকের সব যন্ত্রণাকে ভুলে থাকার জন্য আমাকে বদলে যেতে হয়েছে, যদিও সেটা ভালো থেকে খারাপে। তোমার দেওয়া অবহেলার কষ্টগুলোও বদলে গেছে, বিন্দু থেকে বৃত্ত হয়ে প্রাণঘাতী বোমার আকার ধারণ করেছে।

আচ্ছা, আমার কথা কি তোমার একটুও মনে পড়ে না? এখনো কি আগের মতো সবাইকে নিয়ে বিজি থাকো?

আজও প্রতিটা মুহূর্ত জানতে ইচ্ছা করে, তুমি কেমন আছো?

সত্যিই কি অনেক বেশি ডিস্টার্ব করেছিলাম, যার জন্য এভাবে তাড়িয়ে দিলে? এত বেশি ডিস্টার্ব করার পরেও কি তোমাকে বোঝাতে পারিনি, কতটা পাগল ছিলাম তোমার জন্য...

এতটা অবহেলা করলে আমাকে?

আমার চোখের অশ্রুগুলো তোমাকে চিৎকার করে বলতে চাইছে, আমি আর পারছি না, হয়তো নিজেকে শেষ করে ফেলব।

অবহেলার মরণ যন্ত্রণা দিয়ে একটু একটু করে শেষ করে দেওয়ার থেকে একেবারে যদি খুন করে ফেলতে, তবুও হয়তো কম কষ্ট পেতাম।

হয়তো আমার এ কথাগুলো তোমার কাছে পৌঁছাবে না। মিথ্যে আশায় তবুও একটা অনুরোধ করছি, জীবনে কাউকে কখনো অবহেলা কোরো না। অবহেলা শুধু খারাপই নয়, একটা জঘন্য জিনিস। জীবন্ত একটা মানুষকে কাঠ পোকার মতো ভেতর থেকে শেষ করে দেয়। কষ্ট থেকে বাঁচতে যার একমাত্র সম্বল হয়ে ওঠে ‘মৃত্যু’।

ভালো থেকো বন্ধু, ভালো থাকুক তোমার সব বন্ধুত্ব।

দোয়া করি, আমার মতো করে সবাই যেন তোমাকে গুরুত্ব দেয়। অবহেলার কষ্টটা যেন তোমাকে কখনোই বুঝতে না হয়।

মুজাহিদ

রংপুর।

লেখা পাঠানোর ঠিকানা

অধুনা, প্রথম আলো, সিএ ভবন, ১০০ কাজী নজরুল ইসলাম অ্যাভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫। ই-মেইল: [email protected] ফেসবুক: facebook.com/adhuna.PA. খামের ওপর ও ই-মেইলের subject-এ লিখুন ‘মনের বাক্স’