আমন্ত্রণপত্রে নিমন্ত্রণ

বিয়ে জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। এই বিশেষ অনুষ্ঠান ঘিরে থাকে নানা আয়োজন। যদিও এখন পুরোনো অনেক রীতিতে এসেছে পরিবর্তন। কিন্তু বিয়েতে বাঙালির পুরোনো ঐতিহ্য ধরে রেখেছে বিয়ের কার্ড। বিয়ের কার্ড এতটা বিশেষ; কারণ, বিয়ের বার্তাটাই যে সে নিয়ে আসে। তবে আজকাল শুধু একটি অনুষ্ঠানের জন্য তৈরি করা হয় না কার্ড। বিয়ের বিশেষ দিনটি ছাড়াও গায়েহলুদ, মেহেদি–সন্ধ্যা, আশীর্বাদ অনুষ্ঠানের জন্যও অনেকে আমন্ত্রণপত্র করে থাকেন।

রাজধানীতে বিয়ের আমন্ত্রণপত্রের সবচেয়ে বড় বাজার হলো পল্টন ও বাংলাবাজার। আজাদ কিংবা আইডিয়াল প্রডাক্টসের কার্ড তো অনেক পুরোনো ও জনপ্রিয়। প্রথমেই শুরু করা যাক গায়েহলুদ বা মেহেদি–সন্ধ্যার কার্ড দিয়ে। এই অনুষ্ঠানগুলোর কার্ড খুব বেশি একটা জাঁকজমকপূর্ণ হয় না। বর্তমানে অনেকেই এই অনুষ্ঠানগুলোর জন্য হাতে তৈরি কার্ড পছন্দ করেন। কারণ, এতে থাকে হলুদ বা মেহেদি অনুষ্ঠানের একটি ছোঁয়া। যাতে হলুদ, সবুজ, অফ হোয়াইট রঙের প্রাধান্য থাকে বেশি। বেশির ভাগ কার্ড পানপাতা, পালকি, কুলা বা একটা ভাঁজের মধ্যে বিভিন্ন নকশার হয়ে থাকে। এমন কার্ড করতে চাইলে তা বাংলাবাজার বা পল্টনে পাওয়া একটু কঠিন। হাতে তৈরি কার্ডের জন্য সোর্সে দেখতে পারেন। সোর্সের শোরুম রয়েছে মোহাম্মদপুর ইকবাল রোডে। হাতে পেইন্ট করা কার্ড এই ধরনের অনুষ্ঠানগুলোতে খুব চলছে। এ ছাড়া রয়েছে ধানমন্ডির নন্দন কুটির। এখানে পেয়ে যাবেন পছন্দের হাতে তৈরি কার্ড। এই কার্ডের বিশেষত্ব হলো, আপনি চাইলে পুরো কার্ডের নকশা রং বলে দিতে পারবেন।

তবে বিয়ে বা বউভাতের জন্য আমাদের দেশে রঙিন ও ঐতিহ্যবাহী কার্ডের পাশাপাশি আধুনিক নকশাও পছন্দ করছেন বর–বধূ। বিয়ের কার্ডের জন্য অনেকেই ছুটে যান আজাদ প্রডাক্টসের দোকানে। এখানে রয়েছে বিয়ে ও বউভাতের জমকালো কার্ডের সংগ্রহ। কাগজ, সিল্ক বা মসলিন কাপড়ের সংমিশ্রণে নকশা করা হতো এখানে। এ ছাড়া আবার কাগজের কার্ডের ওপর রিবনের বদলে সিল্কের কাপড় দিয়ে বেঁধে বা বড় আকারের পাথর বসিয়ে যোগ করা হচ্ছে বাড়তি বৈচিত্র্য। চারকোনা আকারের পাশাপাশি হৃদয় আকারের কার্ডগুলো বেশ জনপ্রিয়তা পাচ্ছে এখন।

পাবেন কাঠের কার্ডও। পাতলা কাঠের ওপর খোদাই করা নকশা করা নিমন্ত্রণপত্রও বেশ চলছে চলতি ধারায়। প্রতিষ্ঠানটির বিক্রয়কর্মী রেজাউর জানান, বর্তমানে রঙিন কার্ড অনেকেই পছন্দ করছেন। লাল, মেরুন, গাঢ় নীল, গোলাপি রংকে প্রাধান্য দিয়ে অনেকেই কার্ডের ফরমাশ দিচ্ছেন। এখানে ১০ থেকে ৪০০ টাকার মধ্যে কার্ড পাওয়া যায়।

যেখানে পাবেন

শুধু বাংলাবাজারে আপনি পাবেন প্রায় ৪০টি কার্ডের দোকান। শাহিন প্রেস, বাংলাদেশ স্টেশনারি, আলিফ কম্পিউটার অ্যান্ড গ্রাফিক ডিজাইন, পলাশ করপোরেশন, হার্ট সন্স অ্যান্ড কোম্পানি, মদিনা কার্ড সেন্টার, দেশ প্রডাক্টস ইত্যাদি। এ ছাড়া নীলক্ষেত ও নিউমার্কেট থেকে চাইলে আপনি কার্ড প্রিন্ট করিয়ে নিতে পারবেন। কাঁটাবনে পেয়ে যাবেন কাঠে লেজার করা কার্ড।

 দামদর

হলুদ ও মেহেদির জন্য হাতে তৈরি বা আলপনা করা কার্ড দোকান ও মানভেদে ২০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। ভিন্ন কিছু না নিলে কার্ডের ধরন, মান ও গ্রাম হিসেবে স্কয়ার মিটারের ওপর ভিত্তি করে ৪০ থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত নির্ধারিত প্রতিটি কার্ডের দাম। কিন্তু মখমল জাতীয় ভারী কার্ডের দাম বেশি। দাম শুরু ৭০ টাকা থেকে। কাঠ, আকার ও পরিমাপের ওপর নির্ভর করে দাম ৫০ থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত।