বিন্দু দিয়ে সিন্ধু গড়ো

টাকা থাকলেই উদ্যোক্তা হওয়া যায় না, কিন্তু উদ্যোক্তা হতে হলে টাকার প্রয়োজন আছে। আমাদের দেশে নতুন উদ্যোক্তাদের অর্থায়নের ব্যাপারে ভেঞ্চার ও ইক্যুইটি প্রতিষ্ঠান এবং এনজেল বিনিয়োগকারীরা এখনো সেভাবে বিকশিত হননি। ফলে এখনো ‘বাবা-মা, মামা-চাচা’রাই ভরসা। পুঁজি সমস্যার আরেকটি ভালো সমাধান রয়েছে—গণ–অর্থায়ন বা ক্রাউড ফান্ডিং। মানে হলো, কোনো একটি উদ্যোগের জন্য অনেকের কাছ থেকে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বিনিয়োগ সংগ্রহ করা। এ রকম গ্লোবাল প্ল্যাটফর্মগুলোর মধ্যে কিকস্টার্টার (www.kickstarter.com) খুবই জনপ্রিয়। এ পর্যন্ত তারা ৬১ হাজার প্রকল্পের জন্য ২২ কোটি ডলার বা প্রায় ১ হাজার ৭৬০ কোটি টাকা তুলেছে।

সম্প্রতি বাংলাদেশেও এমন নতুন একটি প্ল্যাটফর্ম চালু করেছে বিডি ভেঞ্চার লিমিটেড ও নাথান অ্যাসোসিয়েট। এই উদ্যোগের নাম ফান্ড এসএমই (fundsme.com.bd)। গণ–অর্থায়নের বিষয়টি ব্যাখ্যা করেছেন বিডি ভেঞ্চারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শওকত হোসেন, ‘ক্রাউড ফান্ড ক্ষুদ্র উদ্যোগ বা ব্যক্তিগত প্রয়োজনে দলবদ্ধভাবে অর্থায়নের একটি নতুন প্রক্রিয়া। ক্রাউড মানে আপনি, আমি, তুমি অর্থাৎ আমজনতা মিলেমিশে অর্থ তুলে আপনার বা আমার মতো সাধারণ কোনো ব্যক্তির ব্যবসায়িক বা সামাজিক উদ্যোগ অথবা নিজস্ব দরকার (আগুনে পোড়া ঘর মেরামত, ব্যয়বহুল চিকিৎসার জন্য সাহায্য) বাস্তবায়নে সহায়তা করা। এতে সোশ্যাল নেটওয়ার্ক বা ইন্টারনেটের মাধ্যমে বহুজনের কাছ থেকে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পরিমাণ অর্থ কোনো প্রকল্প বা ব্যবসায়িক উদ্যোগ বা সামাজিক কারণ, যেমন শীতার্তদের কম্বল দেওয়া, জনহিতকর বা জনস্বার্থ–সংশ্লিষ্ট কাজ, যেমন মশা নিধন, পরিষ্কার–পরিচ্ছন্নতা অভিযান; বিভিন্ন সৃজনশীল কাজ, যেমন গানের অ্যালবাম বা চলচ্চিত্র তৈরির জন্য আহ্বান করা হয়।’

ঠিক এ রকম একটি প্ল্যাটফর্ম হলো ফান্ড এসএমই। এতে একজন ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা আমজনতার অর্থায়নের জন্য প্রকল্প দাখিল করতে পারেন। ফান্ড এসএমইতে দুই ধরনের অর্থায়নের সুযোগ রয়েছে। ইক্যুইটি বা উদ্যোগের শেয়ারের বিপরীতে ১ লাখ থেকে ১ কোটি টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগ সংগ্রহ করা যাবে। তবে এ ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ বিনিয়োগকারী হবেন ৪৫ জন। অন্যদিকে পুরস্কারভিত্তিক অর্থায়নের বেলায় ১ লাখ থেকে ২০ লাখ টাকা পর্যন্ত তোলা যাবে। সে ক্ষেত্রে ৫০০ জনের কাছ থেকে এই অর্থায়ন পাওয়া যাবে। শওকত হোসেন জানালেন, তাঁদের ওয়েবসাইটে এ–সংক্রান্ত নির্দেশনা ও প্রয়োজনীয় দলিলাদির বিস্তারিত পাওয়া যাবে। প্রয়োজনীয় তথ্য ও দলিল উপস্থাপনের পর তাঁরা যাচাই–বাছাই করে প্রকল্পটি তাঁদের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করবেন। এরপর দাতারা অর্থায়ন করতে পারবেন।