বিলেতি গ্যালারিতে টাইগার ভাই

অন্য সমর্থকদেরও মাতিয়ে রাখেন ইমাদ আহমেদ। ছবি: ছুটির দিনে
অন্য সমর্থকদেরও মাতিয়ে রাখেন ইমাদ আহমেদ। ছবি: ছুটির দিনে

‘টাইগার ভাই’ বলে সম্বোধন করতেই অপর প্রান্তে হাসির এক নির্মল ধারা। অপরিচিতজনের কাছে যিনি এখন ‘টাইগার ভাই’। আসল নাম 

কী? বললেন, ‘আমার নাম মোহাম্মদ ইমাদ আহমেদ। তবে সবুজ নামে সবাই ডাকে।’

লন্ডনের ওভাল কিংবা কার্ডিফের সোফিয়া গার্ডেন, যেখানেই বাংলাদেশ খেলছে, সেখানেই লাল-সবুজের উচ্ছ্বাস। এদের মধ্যে বাহারি পোশাক আর বিচিত্র ভঙ্গিতে মাঠকাঁপানো ভক্তদের আলাদা করে খুঁজে নেয় ক্যামেরার চোখ। এবারের বিশ্বকাপে গোটা একটা বাঘের অবয়ব আর ক্ষিপ্র ভঙ্গিতে গ্যালারি মাতানো ইমাদ আহমেদও তারকা সমর্থক বনে গেছেন। বাংলাদেশের ম্যাচ মানেই টিভি পর্দায় তাঁর উপস্থিতি। এই টাইগার ভক্ত জানালেন, খেলা দেখতে মাঠে গেলে ‘টাইগার ভাই’ বলে সবাই ছুটে আসে। ছবি তোলে। বিষয়টা বেশ মজা লাগে তাঁর কাছে।

পূর্ব লন্ডনের শ্যাডওয়েল এলাকার বাসিন্দা এই টাইগার ভাই। বাবা ছানোয়ার আহমেদ বেঁচে নেই। মা শারমিন সুলতানা ও তিন ভাইবোন নিয়ে তাঁদের পরিবার। দুই ভাই, দুই বোনের মধ্যে তিনি দ্বিতীয়। জন্ম ও বেড়ে ওঠা সিলেটের বালাগঞ্জের গহরপুরের আনোয়ারপুর গ্রামে। বালাগঞ্জের দেওয়ান আবদুর রহিম দ্বিপাক্ষিক উচ্চবিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করেন। ভর্তি হয়েছিলেন মদন মোহন কলেজে। কিন্তু এইচএসসি শেষ না করেই ২০০৯ সালে যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমান। বর্তমানে তিনি একটি বিয়ে ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কাজ করেন।

ইমাদ আহমেদ বলছিলেন, ‘লন্ডনের বৈশাখী মেলা উপলক্ষে গত বছর বাঘের পোশাক ও মুখোশ কিনেছিলাম। নিতান্তই মজা করার জন্য এসব পরে মাঠে যাই।’ কিন্তু তাঁর উপস্থিতি যে এতটা নজর কাড়বে, তা ভাবতে পারেননি। বাংলাদেশ থেকে বন্ধু ও আত্মীয়স্বজন টেলিফোন করে জানান, টিভি পর্দায় তাঁকে দেখাচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বিভিন্ন খবরে তাঁর ছবি। এসব তাঁর উদ্‌যাপন শক্তি আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। বাংলাদেশের এ পর্যন্ত সব খেলা তিনি গ্যালারিতে বসে দেখেছেন। বাকি ম্যাচের টিকিটও কাটা আছে। দূরের মাঠের খেলাগুলো দেখতে আগের রাতেই গিয়ে হাজির হন বলে জানান এই ক্রিকেটপ্রেমী।

এই ভক্ত বলেন, দলের হারে প্রচণ্ড কষ্ট পান। আর দল জিতে গেলে তাঁর সমস্ত ক্লান্তি উবে যায়। ভিনদেশের মাটিতে নিজ দেশকে সমর্থন জোগাতে পেরে ভীষণ গর্বিত ‘টাইগার ভাই’।