রিকশাচালকদের পাশে 'আমব্রেলা'

ছাতা মাথায় আনন্দ
ছাতা মাথায় আনন্দ

কয়েক দিন ধরে আবহাওয়ার মর্জি বোঝা দায়! আষাঢ়ে আকাশে এই ঝলমলে রোদ তো খানিক বাদেই বৃষ্টি। রোদে–বৃষ্টিতে সবচেয়ে দুর্ভোগে পড়েন রিকশা আর ঠেলাচালকেরা। সিলেটের একদল তরুণ ভাবলেন, এই মানুষদের জন্য কিছু একটা করা উচিত। শুধু ভেবেই বসে থাকলেন না, নিজেদের গাঁটের পয়সায় কেনা ছাতা নিয়ে পরিয়ে দিলেন রিকশাচালকদের মাথায়। মাথায় কেন? তাঁরা এই ছাতাকে বলছেন ক্যাপ ছাতা। প্রচলিত ছাতার চেয়ে কিছুটা ছোট, হাতলের বদলে বিশেষ কায়দায় মাথায় আটকে রাখা যায়। এই তরুণেরা যুক্ত হয়েছেন ‘আমব্রেলা’ নামের সংগঠনের মাধ্যমে।

সংগঠনের গণযোগাযোগবিষয়ক সম্পাদক মুক্তাদির জামান জানালেন, এ পর্যন্ত তাঁরা সিলেট শহরের জিন্দাবাজার এবং আশপাশের এলাকায় প্রায় ১৩০ জনকে ক্যাপ ছাতা দিয়েছেন। তিনি বলছিলেন, ‘আমরা প্রথম বিতরণ করি ২২ জুন। নিজেরাই অল্প কিছু টাকা চাঁদা দিয়ে ক্যাপ ছাতা কিনি। সবাই মিলে আসি জিন্দাবাজার ও আশপাশের এলাকায়। সেখানে প্রায় ৫০ জনের হাতে তুলে দিই ছাতা।’

হাসিখুশি সবাই
হাসিখুশি সবাই

ছাতা পেয়ে রিকশাচালকদের মুখে যে হাসি ফুটে ওঠে, তা যেন তরুণ স্বেচ্ছাসেবকদের আরও উৎসাহিত করল। তাঁরা নিজেদের সঞ্চয় ছাড়াও বিভিন্ন পরিচিত মানুষের কাছ থেকে সংগ্রহ করলেন ১০-১২ হাজার টাকা। ৩০ জুন দ্বিতীয় দফায় সেই টাকায় কেনা ছাতা নিয়ে গেলেন বিতরণ করতে। মুক্তাদির বললেন, ‘আমরা রিকশাওয়ালা চাচাদের ছাতা দিই, তাঁদের মুখে অমায়িক একটা হাসি ফুটে ওঠে। ওই হাসিটাই যে প্রশান্তি দেয়, তা ভাষায় প্রকাশ করা মতো নয়। তাই আমরা আবারও ১৩ জুলাই ছাতা বিতরণ করব। এরই মধ্যে ৮-১০ হাজার টাকা সংগ্রহ করেছি।’

কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের এই সংগঠনের কার্যকরী কমিটির সদস্য এখন ১৭ জন। স্বেচ্ছাসেবক আছেন ৩০ জনের মতো। ভালো কিছু করার অনুপ্রেরণায় তাঁরা একটি প্ল্যাটফর্মে কাজ করছেন। তাই নামটিও দিয়েছেন—আমব্রেলা বা ছাতা। অসহায় মানুষের পাশে ছাতার মতো সহায় হয়ে দাঁড়ানোই তাঁদের উদ্দেশ্য।