তেলাপোকা কমাবে বৈশ্বিক উষ্ণতা

পৃথিবীর অন্যতম সমস্যা এখন বর্জ্যের বোঝা। এর মধ্যে খাদ্যবর্জ্য মিথেন গ্যাস তৈরি করে, যা আসলে কার্বন মনোক্সাইড থেকেও ক্ষতিকর গ্যাস। আর এই গ্যাস বৈশ্বিক উষ্ণায়নকে সহজ করে দেয়। এই সমস্যার সমাধান কী?

কত পদ্ধতির পথেই তো হাঁটছে মানুষ। তবে চীনের জিনান প্রদেশের কৃষিপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান শ্যাদং কিওবিন খুঁজে বের করেছে কার্যকরী এক সমাধান। তা হলো—তেলাপোকার চাষ! উদ্ভট শোনালেও প্রতিষ্ঠানটি ইতিমধ্যে চাষ শুরু করেছে, ফলও পেয়েছে। তাদের খামারে লক্ষাধিক তেলাপোকা বেড়ে উঠছে, যেগুলো প্রায় ৫০ টন খাদ্যবর্জ্য একদিনে খেয়ে সাবাড় করে। তেলাপোকার খামারের ঘরগুলো এমনভাবে তৈরি করা হয়, যেন সেখানে ভ্যাপসা গরম আর অন্ধকার থাকে। খাবারের দোকান, রেস্তোরাঁ থেকে অতিরিক্ত খাবার আর খাদ্যবর্জ্য সংগ্রহ করে এর থেকে প্লাস্টিক, গ্লাস বা ধাতুজাতীয় আবর্জনা বাদ দিয়ে এগুলো পিষে ঘন পেস্টের মতো করে সরবরাহ করা হয়। এরপর শুরু হয় তেলাপোকাদের মহাভোজের মহোৎসব!

খামারগুলোতে উপযুক্ত আবহাওয়ায় খুব সহজেই তেলাপোকারা বংশবৃদ্ধি করতে পারে। খামারে পালা তেলাপোকাগুলো আবার ব্যবহার করা হয় শূকর এবং অন্য গবাদিপশুর খাবার তৈরিতে। জিনান প্রদেশের খাদ্যবর্জ্য সমস্যা সমাধানে শ্যাদং কিওবিন ২০১৯ সালের শেষ নাগাদ আরও তিনটি তেলাপোকার খামার তৈরি করার কথা চিন্তা করছে। অন্যদিকে চীনজুড়েই ধীরে ধীরে তেলাপোকার চাষ জনপ্রিয় ব্যবসা হয়ে উঠছে। ‘গুড ডক্টর’ নামে একটি ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান বছরে প্রায় ৬ লাখ তেলাপোকা উৎপাদন করে সবচেয়ে বড় আরশোলার খামার হিসেবে চীনে প্রথম অবস্থানে আছে। প্রায় ৪ হাজার হাসপাতালে সরবরাহ করা একটি ওষুধ তৈরির মূল উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত হয় এই প্রতিষ্ঠানের তেলাপোকা।

বর্জ্য সমস্যার সমাধান আর একদমই অল্প বিনিয়োগে তুমুল ব্যবসা—এ যেন এক ঢিলে দুই পাখি মারা! কিন্তু যদি কোনোভাবে এসব তেলাপোকা বের হয়ে যায়, তখন?

২০১৩ সালে এ রকম ঘটনা ঘটেছিল। এক তেলাপোকার খামার ডাকাতির ঘটনায় খামারের প্রায় ১০ লাখ তেলাপোকা খামার থেকে পালিয়ে যায়। সে এক বিতিকিচ্ছিরি অবস্থা! স্থানীয় প্রশাসনের আপ্রাণ চেষ্টায় সেবার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে এলেও এমন দুর্ঘটনা যে আবার ঘটবে না, এমন নিশ্চয়তা কে দেবে?

হাউ স্টাফ ওয়ার্কস অবলম্বনে সামিহা আকবর